আবুল কালাম ,চট্টগ্রাম:

চট্টগ্রাম বন্দরে নিয়োগ বিষয়ে চট্টগ্রামের যারা চাকরী প্রার্থী তাদের মেধা ও যোগ্যতার অগ্রাধিকার দেয়ার জন্য দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করেছেন বন্দর থানা ছাত্রলীগ।

রোববার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকালের দিকে চট্টগ্রাম বন্দর ভবনের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এ দাবি জানান।

মানববন্ধন শেষে একই দাবিতে চবক চেয়ারম্যানকে স্মারকলিপি দেয় বন্দর থানা ছাত্রলীগ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন-দেশের রাজস্ব আয়ের সিংহভাগ যোগান আসে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে। এই বন্দরের জন্য চট্টগ্রামবাসী তাদের ভিটেবাড়ি হারিয়েছে। এছাড়া এই বন্দরের উন্নয়নে চট্টগ্রামবাসীর ত্যাগ রয়েছে। তাই বন্দরসহ বিভিন্ন সরকারি সংস্থায় নিয়োগের ক্ষেত্রে চট্টগ্রামের প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দিতে হবে।

বন্দর নিয়োগেঅংশগ্রহণকারী মো. সোহাগ এ বিষয়ে বলেন, চট্টগ্রাম জেলা ও বিভাগীয় প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দিয়ে বন্দর নিয়োগে দ্রুততা ও স্বচ্ছতার দাবিতে আমরা আন্দোলন করছি। আমাদের এ আন্দোলন আমাদের মতো চট্টগ্রামের সকল মানুষের।

তাই আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করে নগর ছাত্রলীগ ও বন্দর থানা ছাত্রলীগ আমাদের সাথে অংশগ্রহণ করেছিল। আজ তারা নিজ উদ্যোগে গণমানুষের এ দাবিতে একাত্ম হয়ে বন্দর ভবনের মূল ফটকে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে।

প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম বন্দরের ২০১৭ সালের ৫ জানুয়ারিতে প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে সাঁটমুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে ১০ জন, ওয়েল্ডার কাম গ্যাস-কার্টার পদ একজন, লাইব্রেরিয়ান পদে একজন, ইনল্যান্ড মাস্টার (তৃতীয় শ্রেণি) পদে দুজন, নিম্নমান বহিঃসহকারী পদে ৪১৬ জন, নিম্নমান সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর বা সহঃ সময়রক্ষক পদে ১২১ জন, জুনিয়র স্টোরম্যান পদে ২৮ জন, মিটার রিডার পদে দুজন, স্টুয়ার্ড (চিকিৎসা বিভাগ) পদে একজন, স্টুয়ার্ড (বন্দর বিশ্রামাগার) পদে একজন, ডাকরুম সহকারী (চিকিৎসা বিভাগ) পদে একজন, অটো মেকানিক (গ্রেড-২) পদে সাতজন, গজ রিডার পদে তিনজন, ভেকসিনেটর বা টিকাদানকারী পদে একজন, সহকারী ফায়ার ব্রিগেড ইনস্পেক্টর পদে তিনজন, সহকারী খানসামা বা কুক পদে একজন, এসএসআরএস খালাসি পদে পাঁচজন, হেল্পার পদে ১৬ জন এবং ফায়ার ফাইটার পদে ৪৬ জনসহ মোট ৬৬৬ জনকে এই নিয়োগের আহ্বান করা হয়।

বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী চাকরি প্রার্থীদের এসব পদে এত বেশি আবেদন জমা পড়েছিল যা যাচাই-বাছাই করতে চট্টগ্রাম বন্দরকে হিমশিম খেতে হয়েছিল। অনেক যাচাই-বাছাই করে প্রায় ২৩ হাজার পরীক্ষার্থীকে লিখিত পরীক্ষার সুযোগ দেয় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ (চবক)। এর আগে সবগুলো নিয়োগ পরীক্ষা হয়েছিল চট্টগ্রামকেন্দ্রিক হলেও সেইবার প্রথমবারের মতো চট্টগ্রামের বাইরে অর্থাৎ ঢাকায় গিয়ে এই পদের পরীক্ষা দিতে হয়েছিল প্রার্থীদের। এ বিজ্ঞপ্তির লিখিত পরীক্ষা নেয়া হয় ওই বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর। এতে উত্তীর্ণ হয় ৮৯০ জন। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণরা ওই বছরের ৯ ডিসেম্বর থেকে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত মৌখিক পরীক্ষাও দিয়েছেন। কিন্তু গত প্রায় তিন বছরে চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণদের নিয়োগ দেয়া হয়নি। নিয়োগ বাণিজ্যের অনৈতিক লেনদেনে বনিবনা না হওয়ায় এখনো পর্যন্ত ফলাফল প্রকাশ হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন চাকরি প্রত্যাশীরা।