ইমাম খাইর:
বাজার থেকে ডেকে নিয়ে গরু চুরির অপবাদে ছৈয়দ আহমদ (১৭) নামের এক যুবককে বেঁধে রাতভর অমানুষিক নির্যাতন চালানোর অভিযোগ ওঠেছে। গলায় ঝুলানো হয়েছে জুতোর মালা! শুধু তাতে শেষ নয়, কোদাল দিয়ে তার মাথার চুলও উপড়ে ফেলা হয়েছে।
অমানবিক দৃশ্যটি উপভোগ করেছে নির্যাতনকারিসহ বেশ কিছু লোক। এ সময় শিশু-কিশোর এবং মহিলারাও উপস্থিত ছিল।
নিজের হাতে আইন তুলে নেওয়া হলো। অথচ ন্যুনতমও বিবেকে লাগেনি কারো।
শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাত দশটার দিকে উখিয়া উপজেলার জালিয়াপালং পশ্চিম সোনার পাড়া মোনাফ মার্কেট এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে।
পরের দিন শনিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকালে ঘটনাস্থল থেকে ওই যুবককে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। ভিকটিম ছৈয়দ আহমদ পশ্চিম সোনার পাড়া এলাকার জাকির হোসেনের ছেলে। ঘটনায় জড়িত কেউ আটক হয় নি।
একই এলাকার শামসুল আলমের ছেলে জালাল উদ্দিন (৩৫) এ ঘটনাটি ঘটিয়েছে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছে।
জালাল উদ্দিন মানবপাচারসহ বহু মামলার আসামী।
ঘটনার প্রসঙ্গে জালিয়া পালং ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের মেম্বার রফিকুল্লাহ জানিয়েছেন, ছৈয়দ আহমদ একজন ক্ষুদ্র দোকানদার। মুহাম্মদ নামের এক ব্যক্তির গরুর চুরির অভিযোগে তাকে বাজার থেকে ধরে নিয়ে বেঁধে রাখে। খবর পেয়ে তিনি নিজেই গিয়ে বিস্তারিত খোঁজ নেন। স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তাকে বিষয়টি তাৎক্ষণিক মৌখিক অবগত করেন।
তিনি জানান, যে গরুটি চুরির অভিযোগ করা হয় সে গরুটি মুহাম্মদের বাড়িতেই ছিল। তবু অপরাধী হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে জানিয়ে মারধর না করতে অনুরোধ করেন মেম্বার রফিকুল্লাহ। তা মানে নি। গরুর মালিক মুহাম্মদের ডাকে পাশের বাড়ির বাসিন্দা জালাল উদ্দিন সেখানে গিয়ে উল্টো বিতর্ক করে বসে। তার সঙ্গে যোগ দেয় আরো কয়েকজন।
বাকবিতণ্ডার পর বাড়িতে চলে যান মেম্বার। শনিবার সকালে খবর পান, কোদাল দিয়ে ছৈয়দের মাথা মুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। রাতভর মারধরসহ অমানুষিক নির্যাতন করেছে। এমন একটি ভিডিও হাতে পান তিনি।
এরপর মেম্বার রফিকুল্লাহ গ্রাম পুলিশ (চৌকিদার) জাহাঙ্গীর, আবু সিদ্দিককে সাথে নিয়ে মুহাম্মদের বাড়ি থেকে ছৈয়দ আহমদকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। ঘটনাটি তিনি থানার ওসিকে জানিয়েছেন। অভিযুক্ত জালাল উদ্দিন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। তিনি জানান, এলাকায় যাতে আর কোন সময় গরু চুরির মতো ঘটনা না ঘটে, পুরো এলাকাবাসীকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য এটি করা হয়েছে। তাতে অন্য কোন উদ্দেশ্য নাই।
এ বিষয়ে উখিয়া থানার ওসি মর্জিনা আকতার মর্জুকে ফোন দিলে থানার অপারেটর মুঠোফোন রিসিভ করেন। নতুন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিবেন, তাই কাজের ব্যস্ততার জন্য কথা বলতে পারেন নি ওসি।