সমকাল: খিচুড়ি রান্না শেখার জন্য প্রাথমিক শিক্ষার মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বিদেশে যাওয়ার খবরটি সত্য নয়। খিচুড়ি রান্না শিখতে নয়; বরং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মিড-ডে মিল বাস্তবায়নের জন্য শিশুদের উপযোগী স্বাস্থ্যসম্মত খাবার পরিবেশনের ব্যবস্থাপনা দেখতে কর্মকর্তাদের বিদেশ পাঠানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন মঙ্গলবার সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবিত স্কুল ফিডিং প্রকল্প থেকে খিচুড়ি রান্না শেখার জন্য প্রাথমিক শিক্ষার মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বিদেশে পাঠানোর প্রস্তাব করা হয়েছে মর্মে মঙ্গলবার কয়েকটি গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়।

মন্ত্রণালয় থেকে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো প্রকল্পের ডিপিপিতে সারাদেশে মাঠ পর্যায়ের প্রায় এক হাজার কর্মকর্তাকে বিদেশে প্রশিক্ষণের প্রস্তাব করা হয়। এরপর ‘খিচুড়ি রান্না শিখতে এক হাজার কর্মকর্তাকে বিদেশে পাঠানো হচ্ছে’ বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর আসে। এ বিষয়টি নিয়ে বক্তব্য দেন সিনিয়র সচিব আকরাম-আল-হোসেন।

তিনি বলেন, যে কোনো প্রকল্পে দেশে-বিদেশে কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের বিধান রয়েছে। স্কুল ফিডিং পলিসির আওতায় প্রস্তাবিত প্রকল্পে বিদেশে প্রশিক্ষণে যে ব্যয় হবে তা অপচয় নয়; বরং কর্মকর্তাদের কর্মদক্ষতা বাড়াবে। মন্ত্রিসভায় স্কুল ফিডিং পলিসি অনুমোদিত হয়েছে। এই পলিসির ভিত্তিতে ১৯ হাজার ২৯৬ কোটি টাকার একটি প্রকল্প পরিকল্পনা কমিশনে দাখিল করেছি। বিভিন্ন দেশে এই স্কুল ফিডিং কার্যক্রম কীভাবে চালানো হচ্ছে, তা দেখতেই কর্মকর্তাদের বিদেশে পাঠানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।

সচিব বলেন, এই প্রকল্পে দুটি বিষয় আছে। বাচ্চাদের আমরা দুপুর বেলা খাবার দেব। খাবারটা হবে দুই ধরনের। তিন দিন বিস্কুট এবং তিন দিন রান্না করা খাবার। বর্তমানে ছয় দিন বিস্কুট দেওয়া হয়। রান্না করা খাবারের মধ্যে খিচুড়ি সবচেয়ে প্রোটিন সমৃদ্ধ। আর যারা এটি বাস্তবায়ন করবেন- আমাদের প্রধান শিক্ষক, কর্মকর্তা যারা মাঠ পর্যায়ে আছেন তাদের সক্ষমতার জন্য প্রতিটি প্রকল্পে দেশে ও বিদেশে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রেখেছি।

সচিব বলেন, কীভাবে বিভিন্ন দেশে মিড-ডে মিল চালু আছে, কীভাবে তারা ব্যবস্থাপনা করছে, সেই বিষয়ে অভিজ্ঞতা অর্জন করার জন্য বিদেশে কর্মকর্তারা গিয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে আসেন। খিচুড়ি কীভাবে রান্না করে- সেটার জন্য বিদেশে লোক পাঠাচ্ছি না। এ প্রকল্পটি এখনও অনুমোদন হয়নি।

আকরাম-আল-হোসেন বলেন, ‘এটা একটা বিশাল কর্মযজ্ঞ। ৬৫ হাজার ৬২০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক কোটি ৪০ লাখ শিক্ষার্থীর জন্য মিড-ডে মিল চালু করতে হবে।’

যেসব অঞ্চলের প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের রান্না করা খাবার দেওয়া হচ্ছে সেখানে ঝরে পড়ার হার তিন শতাংশের নিচে নেমেছে বলেও জানান গণশিক্ষা সচিব।