ডেস্ক নিউজ:
সম্প্রতি বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তমব্রু সীমান্তের ওপারে বাইশফাঁড়ি এলাকাসহ আশপাশে নতুন করে সবুজ রঙের তাঁবু টাঙিয়ে অস্থায়ী চৌকি স্থাপন করেছে মিয়ানমার সেনারা। এ নিয়ে প্রতিবেশী দেশটির কাছে ব্যাখ্যা চায় বাংলাদেশ। তবে দেশটির দেয়া ব্যাখ্যা খুশি করতে পারেনি ঢাকাকে। তাই সীমান্তে মিয়ানমার সেনাদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

মঙ্গলবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম সীমান্তে মিয়ানমার সেনাদের গতিবিধি নিয়ে এসব তথ্য জানান।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, সীমান্তে মিয়ানমারের সৈন্য সমাবেশের বিষয়ে তার মন্ত্রণালয় অবগত রয়েছে। এক্ষেত্রে যেকোনো পরিস্থিতির জন্য বাংলাদেশ সব সময় প্রস্তুত আছে বলেও জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

অন্যদিকে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জানান, মিয়ানমার অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বাড়ানোর যে অজুহাত দিচ্ছে তাতে সন্তুষ্ট নয় বাংলাদেশ। প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এক রাষ্ট্র যদি সীমান্তে কোনো ব্যাখ্যা ছাড়া সেনা পরিসর বৃদ্ধি করে সেটি পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রকে চিন্তিত করে। আমরা আমাদের অসন্তুষ্টির কথা মিয়ানমারকে জানিয়েছি।’

এদিকে মিয়ানমার সেনাদের সন্দেহজনক গতিবিধির কারণে সীমান্তে গতকাল থেকে কঠোর নজরদারি বাড়িয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

নতুন করে আর কোনো রোহিঙ্গাকে মিয়ানমার থেকে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।

গত শুক্রবার হঠাৎ করে সীমান্তে মিয়ানমার সেনাদের সন্দেহজনক গতিবিধির মধ্যে গত রবিবার ঢাকায় দেশটির রাষ্ট্রদূতকে তলব করে বাংলাদেশ।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মিয়ানমার উইংয়ের মহাপরিচালক দেলোয়ার হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে সীমান্তে দেশটির সেনা টহলের বিষয়ে ঢাকার উদ্বেগের কথা জানানো হয়।

বাংলাদেশ-মিয়ানমার আন্তর্জাতিক সীমান্তে শুক্রবার ভোর থেকে মাছ ধরার ট্রলারে করে মিয়ানমারের সেনাদের সন্দেহজনক গতিবিধির খবর দেয় বিভিন্ন গণমাধ্যম।

সীমান্ত এলাকায় কয়েকটি পয়েন্টে গত কয়েক দিনে মিয়ানমার সৈন্যদের উপস্থিতি দেখার কথা জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, রাখাইনের আরাকান আর্মির সঙ্গে যে সংঘাত চলমান, তার অংশ হিসেবে সৈন্যদের আসা-যাওয়া হতে পারে।

সেখানে এমন সন্দেহজনক গতিবিধি ঘটলে বাংলাদেশের ‍উদ্বেগের কারণ রয়েছে। তিন বছর আগে রাখাইনে সেনা অভিযানের পর দমন-পীড়নের মুখে লাখ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে আসে বাংলাদেশে।

২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনে সেনা অভিযান শুরুর পর কয়েক মাসের মধ্যে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়। আগে থেকে বাংলাদেশে ছিল আরও চার লাখ রোহিঙ্গা।

আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে ২০১৭ সালের শেষ দিকে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করলেও সেই প্রত্যাবাসন আজও শুরু হয়নি। গত বছর দুই দফায় প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নেয়া হলেও রাখাইন রাজ্যের পরিবেশ নিয়ে শঙ্কার কথা তুলে ধরে ফিরতে রাজি হয়নি রোহিঙ্গারা। -ঢাকাটাইমস।