সিবিএন ডেস্ক:
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, পাওয়ার প্ল্যান্ট, ইকোনমিক জোন বা অন্য কোনো উন্নয়নের কথা বলে নদী দখল করা যাবে না। আমরা নদীর অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করছি। ব্যবসায়িক স্থাপনাকে ঘিরে কেউ নদীর জায়গা দখল করতে চাইলে তা কখনোই গ্রহণযোগ্য হবে না।

পাওয়ার প্ল্যান্ট পাওয়ার প্ল্যান্টের জায়গায়, ইকোনমিক জোন ইকোনমিক জোনের জায়গায় আছে। কিন্তু যখন এটা নদীর জায়গায় আসবে তখনই সমস্যা।

শনিবার (১২ সেপ্টেম্বর) ঢাকা-বরিশাল নৌপথের চাঁদপুরস্থ লক্ষ্মীরচর-আলুরবাজার-ঈশানবালা-হিজলা-উলানিয়া-মিয়ারচর নৌপথ পরিদর্শনকালে এসব কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী।

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, অতিরিক্ত স্রোত ও পলি জমে যাওয়ার কারণে বরিশাল রুটের মিয়ারচরে নৌপথ বন্ধ হয়ে গেছে। তাই এখন আমাদের ভোলার ইলিশা দিয়ে ঘুরে বরিশাল যেতে হচ্ছে। এ অবস্থায় আলু বাজার থেকে হিজলা হয়ে নৌপথ হয় কিনা সেটা নিয়ে দুটি সভা করেছি। সভায় আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি কীভাবে ড্রেজিং করলে নৌ চলাচল করতে পারবে। আজ সরেজমিনে পরিদর্শনে আসলাম। আমরা সর্বশেষ সার্ভে রিপোর্টে আশ্বস্ত হয়েছি।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা ঢাকা-বরিশাল নৌপথের মিয়ারচর, কালীগঞ্জ ও আলু বাজার এই তিন চ্যানেলের কোনো নৌ রুটই বাদ দিচ্ছি না। মিয়ারচরে যে পথটা আছে তা আমরা ড্রেজিং করে চালু করব। পাশাপাশি আলুবাজার চ্যানেলটিও চালু রাখতে চাই। আমরা ঢাকা-বরিশাল নৌপথে বহুমাত্রিক পথ (লিঙ্ক) রাখতে চাই। কারণ কোনো কারণে যদি প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়, তাহলে আমরা যেন বিকল্প পথ ব্যবহার করতে পারি। সে জন্য সব পথ চালু করতে চাই।

তিনি বলেন, নৌ পথে চলাচলরত মানুষগুলোর নিরাপদে যাতায়াত ও ভাড়া সাশ্রয় করতে কাজ করছে সরকার। সে অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় দেশে ১০ হাজার কিলোমিটার নৌপথ বাস্তবায়ন করা হবে৷ এছাড়াও দেশের ৫৩টি নদী নিখুঁত ভাবে খননের পাশাপাশি যে নৌ পথ গুলো আছে সেগুলো ড্রেজিং করা হচ্ছে।

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আমাদের শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী রুটে ফেরি চলাচল আটদিন বন্ধ ছিল। কারণ অতিরিক্ত স্রোতে ও পলি জমে যাওয়ার কারণে নদী ভরাট হয়ে যাচ্ছে এবং পথগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী ফেরিরুটে গতকাল আমরা রো রো ফেরি চালিয়েছিলাম। কিন্তু তা ঠিকমতো চালাতে পারি নাই। সেখানে ‘কে-টাইপ’ (ছোট) ফেরি চলছে। শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী ফেরিরুটটি যেহেতু পদ্মা সেতুর কাছাকাছি, তাই বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) ড্রেজিং করার সুযোগ নাই।

তিনি বলেন, আমরা সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও সচিবের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। এখন পদ্মাসেতু কর্তৃপক্ষ ড্রেজিং বসিয়েছে এবং ড্রেজিং করছে। আমাদের ১০টি ড্রেজার কাজ করছে, আজকেও একটি ড্রেজার যুক্ত হচ্ছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা যখন নৌপথ তৈরি করছিলাম, তখন শিমুলিয়ায় আবারো ভাঙন দেখা দেয়। এটাও আমাদের জন্য একটা চ্যালেঞ্জ। কাজেই এখানে বিআইডব্লিউটিএ’র সঙ্গে বিআইডব্লিউটিসির কোনো সমন্বয়হীনতা নেই। যখনই পথ তৈরি হবে, তখনই ফেরি চালু হবে।

তিনি আরও বলেন, এখানে আমাদের নৌপথের থেকেও প্রথম গুরুত্ব দিতে হবে স্বপ্নের পদ্মাসেতুর বিষয়ে। পদ্মাসেতুর কার্যক্রম বিঘ্নিত করে, পদ্মাসেতুকে ঝুঁকিতে ফেলে আমরা কোনো পথ তৈরি করতে চাই না।

প্রতিমন্ত্রী পরে হিজলা লঞ্চঘাটে হিজলা উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় বক্তব্য রাখেন। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য পঙ্কজ দেবনাথ, বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক, বিআইডব্লিউটিএ’র সদস্য পরিচালনা ও পরিকল্পনা মো. দেলোয়ার হোসেন, প্রধান প্রকৌশলী (ড্রেজিং) আবদুল মতিন, পরিচালক বন্দর ও পরিবহন কাজী ওয়াকিল নেওয়াজ, পরিচালক নৌ নিরাপত্তা মো. রফিকুল ইসলাম প্রমুখ। -বার্তা ২৪