সৌরভ শর্মা


মোসলেহ খান ও রফিক চৌধুরী।দুজনে দুই গ্রামের অধিপতি। সাপে নেউলে সম্পর্ক তাদের।
এক গ্রামের মানুষ অন্য গ্রামে পা রাখতেই পারেনা। ভুলক্রমে যদি চলেও আসে কেউ প্রাণে ফিরতে পারেনা।যেকোনো ভাবে একে অন্যের ক্ষতি করাই দুজনের প্রধান লক্ষ্য। দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে তাদের এই ঝগড়া।

সারাবিশ্ব যখন করোনায় আক্রান্ত।চারদিকে মারা যাচ্ছে লাখ লাখ মানুষ। এসময় চৌধুরী সাহেব সিদ্ধান্ত নিলেন ঝগড়াঝাটি করে লাভ কী?যেকোন মূহুর্তেই মৃত্যু কেড়ে নিতে পারে জীবন। এক সেকেন্ডে শেষ হয়ে যেতে পারে সব। খান সাহেবের সাথে সমঝোতা করে ফেলাই সবচেয়ে ভালো হবে। এতে অন্তত দুই গ্রামের দীর্ঘদিনের ঝগড়ার অবসান হবে।

প্রস্তাব পাঠালেন খান সাহেবের কাছে। খান সাহেবও রাজী হলেন।এবার খান সাহেব প্রস্তাব রাখলেন। তাদের বন্ধন যাতে আরো সুদৃঢ় হয় সেজন্য তারা তাদের ছেলেমেয়ের বিয়ে দিবেন৷ খান সাহেবের মেয়ে জুঁই। চৌধুরী সাহেবের ছেলে পলাশ।দুজনের ঢাকায় বাস। লকডাউনে গ্রামে এসেছে।

যথারীতি বিয়ে হয়ে গেলো। বিয়ের পরদিন খান সাহেব চৌধুরী সাহেবকে ফোন দিয়ে বললেন, বিয়াই সাহেব, কেমন আছেন?

ভালো।

আর কয়েকদিন পর ভালো থাকবেন না। দাফনের কাপড় কেনার ব্যবস্হা করেন। আমার মেয়ের করোনা পজিটিভ। শত্রু কখনো আপন হতে পারেনা। অনেকদিন পর মোক্ষম সুযোগ পেলাম। কাজে লাগালাম। মাফ করে দিয়েন।

বিয়াই সাহেব, আপনি কোনো চিন্তা করবেন না। আমরা তাদেরকে পরিবার থেকে সম্পূর্ণ আলাদা থাকতে দিয়েছি। আমার ছেলেরও করোনা পজিটিভ।


সৌরভ শর্মা ,কক্সবাজার।