মৌসুমি চাষাবাদে বাঁধা :  রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা

অলি উল্লাহ রনি, চকরিয়া :
চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের রিংভং ছগিরশাহকাটায় ব্যক্তি মালিকানাধীন ৩০বছরের ভোগ দখলীয় বৈধ জমি জবর দখলের পাঁয়তারা চালাচ্ছে একটি প্রভাবশালী গোষ্ঠি। থেমে নেই ওই চক্রের বিভিন্নমুখী ষড়যন্ত্র। নিজ জমিতে চলতি বর্ষা মৌসুমে কোনভাবেই চাষাবাদ করতে দিচ্ছেনা চক্রটি। এ ঘটনায় যে কোন মুহুর্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা বিরাজ করছে উভয়পক্ষের মাঝে। এহেন পরিস্থিতিতে বিভিন্নভাবে চাষাবাদে বাঁধাগ্রস্ত হওয়ায় গত ১৫আগস্ট-২০২০ইং তারিখে ৪জনকে বিবাদী করে হাফেজ মো. কুতুব উদ্দিন বাদী হয়ে চকরিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। দায়েরকৃত অভিযোগপত্রে উল্লেখিত বিবাদীরা হলেন- ডুলাহাজারা ইউনিয়নের রিংভং ছগিরশাহকাটার খলিলুর রহমানের ছেলে সরওয়ার আলম প্রকাশ সরওয়ার মুন্সি (৩৫), ফরিদুল আলম (৩৮), আমিরুল আজম (২৮) ও মরহুম আকাম উদ্দিনের ছেলে খলিলুর রহমান। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, চকরিয়ার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের রিংভং মৌজার ছগিরশাহকাটা এলাকায় ৩নং সিটের ২০৯, ২১৩ ও ২৩১ নং দাগের ১ একর জমির চিহ্নিত দাগ হলো ২৩১। এর চৌহর্দ্দি উত্তরে পানি চলাচলের খাল, দক্ষিণে অর্ধেকাংশ ফিরোজ হ্যাডম্যান আর অর্ধেকাংশ সাহাব উদ্দিন, পূর্বে- আবদুল মন্নান ও পশ্চিমে আহমদ আলী (মাঝু)’র অবস্থান। এই চকবন্দে জমির পরিমাণ দাঁড়ায় এক একর। অভিযোগপত্রে হাফেজ কুতুব উদ্দিন দাবি করেন, উল্লেখিত তপশীলের আলোকে সংশ্লিষ্ট জমি আমার বড়ভাই মাহবুবুল আলম ও সেজভাই মাওলানা কফিল উদ্দিন হতে ক্রয়মূলে আমি মালিক হই। অর্থাৎ ওই জমি ক্রয়ের পর হতে আমি ও আমার ৫ভাই এবং ৪বোন দখলে থাকাকালে দুই ভাইয়ের জমি বিক্রয় করে ফেলে। বর্তমানে আমরা ৭ভাই-বোন দীর্ঘদিনধরে বৈধভাবে জমিগুলো ভোগ দখলে আছি। কিন্তু দুর্লোভের বশবর্তী হয়ে চলতি বর্ষা মৌসুমে চাষাবাদের কাজে বাঁধা প্রদান করে যাচ্ছে একই এলাকার জনৈক খলিলুর রহমানের ছেলে সরওয়ার আলম প্রকাশ সরওয়ার মুন্সিগং। এমনকি প্রচলিত আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে গায়ের জোরে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের জন্য বিভিন্নভাবে হাফেজ কুতুবের ৩০বছরের ভোগ দখলীয় জমিতে লোকজন নামিয়ে দিয়ে জমি জবর দখলের অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে মিমাংশার জন্য সরওয়ারগংদের পক্ষ থেকে ডুলাহাজারা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতির কাছে অভিযোগ গেলে আওয়ামীলীগ সভাপতি জামাল হোসেন তাঁর ব্যক্তিগত কার্যালয়ে একটি সালিশ বৈঠকের আহবান করেন। ওই সালিশ বৈঠক শেষে ১০মে ২০২০ইং তারিখ উল্লেখ একটি সালিশী রোয়েদাদ তৈরি করেন। ওই রোয়েদাদটি উপেক্ষা করে সরওয়ার মুন্সিগং পূর্বের ন্যায় জমি দখলের অপচেষ্টা অব্যাহত রাখে। এতেও ক্ষান্ত না হয়ে প্রতিনিয়ত জমির বৈধ মালিককে হুমকি-ধামকি প্রদান করে চলেছে। অভিযোগ সূত্রে আরো জানা যায়, ঘটনাটি চকরিয়া-পেকুয়া আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব জাফর আলম এমপিকে অবহিত করা হয়। এরই প্রেক্ষিতে তাৎক্ষণিক আলহাজ্ব জাফর আলম এমপি আইন শৃংখলা রক্ষার স্বার্থে স্থানীয়ভাবে বিরোধীয় বিষয়টি দেখার জন্য (সালিশ বিচার) চিরিঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান এমইউপি জাফর আলম সিআইপিকে দায়িত্ব দেন। এটিও অমান্য করে গত ১১আগস্ট ২০২০ইং তারিখে সকাল ৬টার দিকে দেশীয় তৈরি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে জমিতে অবৈধ চাষাবাদের চেষ্টা করলে থানা পুলিশসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও হাফেজ কুতুবগং বাঁধা দেয়। পরে গত ১২ আগস্ট ২০২০ইং তারিখ এমপি মনোনীত সালিশ বিচারক জাফর আলম সিআইপি উভয়পক্ষে বৈঠকে বসতে আহবান করলে; বাদী পক্ষ বৈঠকে অংশগ্রহণ করলেও বিবাদীরা এতে উপস্থিত হয়নি। উল্টো জমির বৈধ মালিক হাফেজ কুতুবগংদের বিবাদী সরওয়ার মুন্সিগং প্রাণনাশের হুমকি-ধামকি দিয়ে যাচ্ছে অব্যাহতভাবে। এ ঘটনায় উল্লেখিত তপশীলের জমি নিয়ে বড়ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার আশংকা প্রকাশ করায় স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব জাফর আলম এমপি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের পরামর্শে হাফেজ কুতুব উদ্দিন বাদী হয়ে চকরিয়া থানায় এ অভিযোগটি জমা দেন।