মো.ফারুক ,পেকুয়া :

বেলা সাড়ে ১১টার দিকে চট্টগ্রামমুখী একটি এস.আলম বাস পেকুয়ার চৌমুহনী মোড়ে এসে পৌঁছায়। ডান দিক থেকে একটি সিএনজি ঢুকে পড়াতেই বাসটি আটকে পড়ে ঠিক চৌরাস্তার মুখে। এরই মাঝে বাম দিক হতে পণ্যবাহী একটি নসিমন এসে জটলা বাঁধিয়ে সৃষ্টি করে এক বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির। মিনিট দুয়েকের মধ্যেই চতুর্দিক হতে আসা যাত্রীবাহী বাস, সিএনজি, ইজিবাইক রিক্সা ও পণ্যবাহী ট্রাকের সমন্বয়ে সৃষ্টি হয় দীর্ঘ সারির তীব্র যানজট। নিমিষেই এ যানজট মানুষের বিরক্তি ও দুর্ভোগের কারণ হয়ে পরিণত হয় জানজটে।

শুক্রবার (৪ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে আনোয়ারা-বাঁশখালী-চকরিয়া (এবিসি) সড়ক ও বরইতলী-মগনামা সড়কের মিলিত স্থল কক্সবাজারের পেকুয়ার চৌমুহনী মোড়ের স্টেশনে এমন দৃশ্য দেখা যায়।

স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মতে এক দশক আগেও এ স্টেশন এতটা গুরুত্ববহ ছিলোনা। কালের বিবর্তন আর যোগাযোগ ব্যবস্থার বৈপ্লবিক পরিবর্তনে এখন জনাকীর্ণ এ স্টেশন। এ স্টেশন হয়েই দৈনিক পেকুয়া, কুতুবদিয়া, মহেশখালী ও চকরিয়ার কিছু অংশের প্রায় দশ হাজার মানুষ চট্টগ্রাম শহরে যাতায়াত করে। যার প্রেক্ষিতে প্রতিদিন বেলা বাড়ার সাথে সাথেই এই চৌরাস্তার মোড়ে তৈরি হয় তীব্র যানজট।

স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রত্যক্ষদর্শীরা এক্ষেত্রে চৌমুহনী স্টেশনে এস.আলম, সানলাইন ও সুপার সার্ভিসের কাউন্টারগুলোকে যানজট সৃষ্টির অন্যতম কারণ হিসাবে দেখছেন। কেননা এ তিনটি কাউন্টারের গাড়িগুলোর যাত্রী ওঠানামার সময় রাখা হয় সড়কের উপর। এছাড়াও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা না থাকাকেও যানজট সৃষ্টির কারণ হিসেবে দেখছেন তারা।

এদিকে সচেতন সমাজ মনে করেন এই নিত্যনৈমিত্তিক যানজট রোধকল্পে তিনটি বাস কাউন্টার অন্যত্র স্থানান্তর ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার কোন বিকল্প নেই। রাস্তা সম্প্রসারণ করে মোড়ে একটি গোল চত্বর তৈরি করা হলে যানজট অনেকাংশে হ্রাস পাবে বলেও মনে করেন তাঁরা।

এ ব্যাপারে পেকুয়া উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বলেন, চৌমুহনী মোড়ের যানজটের বিষয়ে গত আইন শৃঙ্খলা সভায় আমি আলোচনা করেছি। ইতোমধ্যে কিছু সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। আশাকরি শীঘ্রই একটি প্রস্তাবনা আমরা কক্সবাজার সড়ক ও জনপদ বিভাগে পাঠাবো।

ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর বলেন, ট্রাফিকের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে ইতোমধ্যে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়েও একটি আশানুরূপ ফল পাবো বলে মনে করছি।
ওসি কামরুল আজম বলেন, চৌমুহনী স্টেশনে বসানো তিনটি কাউন্টার বিষয়ে দ্রুত আলোচনা করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। পুলিশ চৌমুহনী চত্বরে নিয়মিত দায়িত্ব পালন করলেও ট্রাফিক পুলিশের জন্য কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।

কক্সবাজার সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু চাকমা বলেন, পেকুয়ার যানজট ও সড়কের বেহাল দশা নিয়ে আমরা অবগত হয়েছি। অক্টোবরের শুরুতেই মগনামা-বরইতলী সড়কের সংস্কার ও সম্প্রসারণ কাজ শুরু হবে। তখন যেসব মোড়ে যানজট নিরসনে গোল চত্বরের প্রয়োজন হবে সেখানেই আমরা তা করে দিব।