সিবিএন ডেস্ক:
কৃষ্ণ সাগরে নিজেদের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় গ্যাস ক্ষেত্রের সন্ধান পেয়েছে তুরস্ক। এটি থেকে উত্তোলিত গ্যাস দেশটিকে আমদানি নির্ভরতা থেকে মুক্তি দেবে বলে জানিয়েছেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা।

শুক্রবার (২১ আগস্ট) তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ইস্তানবুলে এক সংবাদ সম্মেলনে গ্যাস ক্ষেত্রটি পাওয়ার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করেন। এতে অন্তত ৩২০ বিলিয়ন কিউবিক মিটার গ্যাস মজুত রয়েছে বলে জানান তিনি।

তুরস্ক ২০২৩ সাল নাগাদ এই গ্যাস ক্ষেত্র থেকে উত্তোলিত গ্যাস ব্যবহার শুরু করবে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট। একই সঙ্গে কৃষ্ণ সাগরে খনিজ সম্পদ অনুসন্ধান আরো বেগবান করার ঘোষণা দেন তিনি।

তুরস্কের উপকূল থেকে ১০০ নটিক্যাল মাইল দূরে অন্তত এক মাস ধরে অনুসন্ধান চালানোর পর গ্যাস ক্ষেত্রটির সন্ধান পাওয়া যায়।

তুরস্কের খনিজ সম্পদ মন্ত্রী ফাথি ডোনমেজ বলেন, নবমতম বার ওই এলাকায় খনন কাজ চালানোর পর গ্যাস ক্ষেত্রটির সন্ধ্যান পায় অনুসন্ধানী দল।

এর আগে বুধবার (১৯ আগস্ট) রাজধানী আঙ্কারায় একটি সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র পরিদর্শনের সময় পূর্ব ভূমধ্যসাগরে বিতর্কিত এলাকায় তেল-গ্যাস অনুসন্ধান অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন এরদোগান।

পূর্ব ভূমধ্যসাগরের বিতর্কিত এলাকায় তুরস্কের তেল-গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রমের ফলে গ্রিস ও পুরো ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে তুরস্কের উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।

এরদোগান বলেন, “তেল-গ্যাস অনুসন্ধান ইস্যুতে আমরা শতভাগ সঠিক অবস্থানে আছি। যদি আমরা জলদস্যুদের কাছে আত্মসমর্পণ করি তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে আমরা মুখ দেখাতে পারব না। আমরা এমন কোনো দেশ আমাদের শিশুদের কাছে দিতে পারি না যেখানে তারা নিজেদের অধিকার রক্ষা করতে পারবে না, যেখানে তাদের আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি থাকবে।

পূর্ব ভূমধ্যসাগরে এলাকায় তেল-গ্যাস অনুসন্ধান এবং উপকূলীয় এলাকা নিয়ে গ্রিস এবং সাইপ্রাসের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছে তুরস্ক। এ অবস্থায় গ্রিস ও সাইপ্রাসের পক্ষে প্রকাশ্য অবস্থান নিয়েছে ফ্রান্স। ওই এলাকায় তুরস্ককে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান না করার আহ্বান জানিয়েছে ফ্রান্স এবং ভূমধ্যসাগরে সামরিক উপস্থিতি বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে দেশটি।

এর আগে সাগরে তেল গ্যাস অনুসন্ধান নিয়ে গ্রিসের সঙ্গে বিবাদে জড়ায় তুরস্ক। লিবিয়ার সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী গ্রিসের উপকূলবর্তী এলাকায় ত্যাল-গ্যাস অনুসন্ধান শুরু করে আঙ্কারা। তবে ফ্রান্স ও মিশর গ্রিসের সঙ্গে এক হয়ে সেখানে বাধা দেয়। একটি নতুন চুক্তিও করে গ্রিস-মিশর। কিন্তু মিশরের কোনো উপকূল না থাকায় সেখানে ভেস্তে যায় গ্রিসের তুরস্ককে থামানোর সব আয়োজন।