ইমাম খাইর#
উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পুরাতন ও নতুন রোহিঙ্গাদের মধ্যে পরপর দুই দফায় সংঘর্ষ হয়েছে।

এতে অন্তত ১২ জন আহত হয়েছে। তাদের স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। গুলিবিদ্ধ একজনকে গুরুতর অবস্থায় চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

দুই দফা সংঘর্ষের ঘটনায় ৩ জন রোহিঙ্গা অপহরণের শিকার হয়েছে বলে জানা গেছে।

রবিবার (৩০ আগস্ট) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কুতুপালং ২নং পূর্ব পশ্চিম ক্যাম্পে ঘটনাটি ঘটে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে ক্যাম্পজুড়ে অতিরিক্ত পুলিশ ও আর্মড পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ নিরুজ্জামান চৌধুরী।

তিনি জানান, রোহিঙ্গাদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ বিরোধ নিয়ে গত দু’দিন ধরে থেমে থেমে সংঘর্ষ হচ্ছিল। এ বিষয়ে সুনির্দিষ্টভাবে কাউকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। অনুসন্ধান চলছে।

তবে বর্তমানে ক্যাম্পের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলে জানিয়েছেন ১৪ এপিবিএন’র অধিনায়ক পুলিশ সুপার মো. আতিকুল ইসলাম।

তিনি জানান, কুতুপালং নিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মুন্না গ্রুপের সঙ্গে অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ইসলাম মাহাদ গ্রুপের মধ্যে ইয়াবা পাচার ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। এরই জের ধরে শনিবার ফাঁকা গুলিবর্ষণের মাধ্যমে এটি প্রকাশ্যে রূপ নেয়। রবিবারও থেমে থেমে সংঘর্ষ হয়। এ সময় উভয়পক্ষের ২০টিরও বেশি ঝুঁপড়ি ঘর এবং বেশ কয়েকটি ওয়াটার সাপ্লাইয়ের ট্যাংক ভাঙচুর করা হয়। খবর পেয়ে এপিবিএনসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছলে দুই গ্রুপের সদস্যরা পালিয়ে যান। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আহতদের পরিচয় পাওয়া যায়নি। সংঘর্ষে অংশ নেওয়া রোহিঙ্গাদের ধরার চেষ্টা চলছে।

কুতুপালং ক্যাম্পের রোহিঙ্গা নেতা নুর বশর জানান, দীর্ঘদিন ধরে রেজিষ্ট্রার্ড ও আনরেজিষ্ট্রার্ড ক্যাম্পের দুই গ্রুপের মধ্যে চাঁদাবাজি, অপহরণ, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গত বুধবার থেকে দফায় দফায় গুলাগুলি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সর্বশেষ রোববার আবারো ঘটনা ঘটে লম্বাশিয়া মাস্টার মুন্না এবং হাফেজ জাবের ও সাইফু্র গ্রুপের মধ্যে। এতে মুন্না গ্রুপের ৫ জন আহত হয়। এছাড়া ৩ জন পহরণ হওয়ার সংবাদ পাওয়া গেছে। তাৎক্ষণিক তাদের নাম ঠিকানা পাওয়া যায়নি৷

তিনি জানান, আহতদের কুতুপালং এমএসএফ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে৷

এর আগে শনিবার সংঘর্ষের ঘটনায় নারিসহ ৭ জন আহত হয়েছে। ২ মহিলাকে কুতুপালং এমএসএফ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নুর আলম নামে গুলিবিদ্ধ রোহিঙ্গাকে প্রথমে কক্সবাজার পরে চট্টগ্রাম হাসপাতালে প্রেরণ করেছে। সে কুতুপালং টু-ইস্ট ক্যাম্পের আহমদ হোসেনের ছেলে। তার অবস্থা আশংকাজনক বলে সুত্র জানিয়েছে।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোঃ মাহবুব আলম তালুকদার জানান, যাদের মাঝে স্বাভাবিকভাবেই গ্রুপেই আছে। সেই সুত্র ধরে সংঘর্ষ, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। সাথে সাথে পুলিশ, বিজিবি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ বিষয়ে সিআইসিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

তিনি জানান, অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার সোমবার ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে যাচ্ছেন। তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।