প্রেস বিজ্ঞপ্তি :

বাংলাদেশে ব্যাপক হারে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের অনুপ্রবেশের তৃতীয় বর্ষ পালন উপলক্ষে একশনএইড বাংলাদেশ; সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং সেন্টার ফর পিস এন্ড জাস্টিস, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় এর যৌথ উদ্যোগে দুই দিন ব্যাপী (২৫-২৬ আগস্ট, ২০২০) “কানেক্টিং রোহিঙ্গা ডায়াস্পোরাঃ হাইলাইটিং দ্যা গ্রোবাল ডিসপ্লেসমেন্ট” শীর্ষক আন্তর্জাতিক ই-সম্মেলনের প্রথম দিন শেষ হলো আজ ( মঙ্গলবার) ।

আন্তর্জাতিক এই ই-সম্মেলনে মিয়ানমার ও বাংলাদেশসহ বিশ্বের ১২ টি দেশ থেকে রোহিঙ্গা ডায়াস্পোরা নিয়ে কাজ করা বিশেষজ্ঞ, পন্ডিত, গবেষক এবং মানবাধিকার কর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।

সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাননীয় সচিব মাসুদ বিন মোমেন (Masud Bin Momen) এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গাম্বিয়া সরকারের বিচার বিষয়ক মন্ত্রণালয় এর সলিসিটর জেনারাল ও লিগ্যাল সেক্রেটারি জনাব চেরনো মারেনাহ (Cherno Marenah) ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব জনাব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, “১৯৪৮ সাল থেকেই মিয়ানমারের রোহিঙ্গারা নির্যাতনের শিকার । বর্তমানে রোহিঙ্গারা সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত জাতিসত্তা হিসেবে পরিচিত। পুরো বিশ্বের ১৭ টি দেশে প্রায় ২.৫ মিলিয়ন রোহিঙ্গা ছড়িয়ে রয়েছে যার প্রায় অর্ধেকের বসবাস বাংলাদেশে। বাংলাদেশ সরকার প্রাথমিকভাবে রোহিঙ্গাদের ব্যাপক হারে প্রবেশকে মোকাবেলা করেছে এবং আশ্রয়ও প্রদান করেছে।“

রোহিঙ্গা সংকট দীর্ঘায়ীত হলে মানবিক বিপর্যয় বাড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের শান্তিপূর্ণ প্রত্যাবাসন চাইলেও মিয়ানমারেরে উদাসিনতার কারণে সেটি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে বলে জানান পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। রোহিঙ্গাদের শান্তিপূর্ণ প্রত্যাবাসনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে চাপ প্রদানের আহবানও জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত গাম্বিয়া সরকারের বিচার বিষয়ক মন্ত্রণালয় এর সলিসিটর জেনারাল ও লিগ্যাল সেক্রেটারি চেরনো মারেনাহ (Cherno Marenah) তার বক্তব্যে বলেন,”আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালতের মামলায় তার দেশ আগামী অক্টোবরে প্রথম মেমোরিয়াল জমা দেবে। তিনি বলেন, আমরা কঠোর পরিশ্রম করছি এবং আমাদের সঙ্গে আন্তর্জাতিক আইনজীবীরা কাজ করছেন”। মানবাধিকার রক্ষায় গাম্বিয়া সবসময় অগ্রগণ্য বিশেষ করে আফ্রিকায় অঞ্চলে গাম্বিয়া সোচ্চার বলে জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন সেন্টার ফর পিস অ্যান্ড জাস্টিস (সিপিজে), ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়-এর নির্বাহী পরিচালক মনজুর হাসান। তিনি বলেন, “আমরা দুদিনব্যাপী অনুষ্ঠান শেষে ঢাকা ডিক্লারেশন-২ ঘোষণা করবো”। রোহিঙ্গা সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানের ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, “২০১৮ সালের ঘোষণা’র ধারাবাহিকতায় এই ঢাকা ডিক্লারেশন-২ ঘোষিত হবে”।

সম্মেলনের সামগ্রিক দিক নিয়ে বক্তব্য প্রদান কালে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়-এর অধ্যাপক ও সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজ (সিজিএস)-এর পরিচালক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ, , বলেন, “ রোহিঙ্গা সংকট বর্তমানে কেবল বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের দ্বিপাক্ষিক সমস্যা নয় বরং এটি একটি আন্তর্জাতিক ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। কয়েক দশক ধরেই মিয়ানমারে গুপ্ত গণহত্যা চলছে । যদিও আগে গণহত্যার বিষয়টি তেমন সামনে আসেনি, কিন্তু সাম্প্রতিক ২০১৭ সালের ঘটনার পর এই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।“

ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস (আইসিজে) এ রোহিঙ্গা গণহত্যার বিষয়টি উপস্থাপনের জন্য গাম্বিয়া সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, “এই সম্মেলনের তিনটি উদ্দেশ্য- প্রথমত আন্তর্জাতিক মহলে রোহিঙ্গাদের দূর্দশার চিত্র তুলে ধরা, দ্বিতীয়ত- বিশ্বব্যাপি ছড়িয়ে থাকা রোহিঙ্গা ডায়াস্পোরাদের অভিজ্ঞতা শুনা এবং মায়ানমার এবং মায়ানমারের বাইরে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের যুক্ত করা। “

রোহিঙ্গাদের শান্তিপূর্ণ ও স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসন এবং মিয়ানমারে তাদের নাগরিকত্ব প্রদানের জন্য সংবিধান সংশোধনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে একত্রিত হয়ে কাজ করার আহ্বানও জানান ড. ইমতিয়াজ ।

সম্মেলনে উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে একশনএইড বাংলাদেশ এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির বলেন, “আমরা চাই না রোহিঙ্গাদের এই দূর্দশা দীর্ঘায়িত হোক । আমরা জানি যে বাংলাদেশে ২১০৭ সালে রোহিঙ্গাদের ব্যাপক প্রবেশ ঘটেছে। গ্লোবাল লিডারশিপ তৈরির মাধম্যে রোহিঙ্গা ডায়াস্পোরা অবদান রাখতে পারে” । ডায়াস্পোরাদের যুক্ত করার মাধ্যমে এই সংকট সমাধান করা সম্ভব বলে জানান তিনি।

মোট চারটি প্যানেলে বিভক্ত এই সম্মেলনে প্রথম দিনে দুটি প্যানেলে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সেন্টার ফর গ্লোবাল পলিসি ইন ওয়াশিংটন ডিসি-এর ডিরেক্টর আজিম ইব্রাহিম (Azeem Ibrahim) এবং ব্র্যাক-এর সিনিয়র ডিরেক্টর কে এ এম মোর্শেদ।

আজিম ইব্রাহিম তার বক্তব্যে বলেন, “ রোহিঙ্গা ডায়াস্পোরাদের দেশে ফিরে যাওয়া সহজ নয় । তাদের প্রত্যাবাসন অনেক জটিল প্রক্রিয়া । গত অর্ধ শতক ধরে রোহিঙ্গারা বিতাড়নের শিকার হয়ে আসছে। রোহিঙ্গা ডায়াস্পোরাকে অন্যান্য সংখ্যালঘুদের সংস্থার সাথে একত্রিত এই সংকট মোকাবেল করতে হবে”।

কক্সবাজারে ১৭৯০ সালে প্রথম রোহিঙ্গারা আসে উল্লেখ করে ব্র্যাক এর সিনিয়র ডিরেক্টর কে এ এম মোর্শেদ বলেন, “ বাংলাদেশে রোহিঙ্গারা মূলত দুটি কারণে এসে আশ্রয় নিয়েছে, প্রথম কারণ ঐতিহাসিক এবং দ্বিতীয়ত ধর্মীয় মিল থাকার কারণে তারা বাংলাদেশকে নিরাপদ দেশ মনে করে এবং তারা বিশ্বাস করে তাদের প্রতি বাংলাদেশের মানুষের সহানুভূতি রয়েছে”।

তাছাড়া সম্মেলনের প্রথম দিনে কানাডা, সৌদি আরব, জাপান, যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং থাইল্যান্ডে বসবাসরত রোহিঙ্গা ডায়াস্পোরা প্রতিনিধি, শিক্ষক ও গবেষকরা তাদের বক্তব্য প্রদান করেন ও পেপার উপস্থাপন করেন।

কানাডা প্রবাসী রোহিঙ্গা এক্টিভিস্ট ইয়াসমিন উল্লাহ বলেন, “ প্রায় ১৫০০ জন রোহিঙ্গা ডায়াস্পোরা কানাডা ও উত্তর আমেরিকার বিভিন্ন অংশে শরণার্থী হিসেবে বসবাস করছে। এই অঞ্চলে পুনর্বাসিত অনেকেই মিয়ানমারে মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হয়েছেন এবং মিয়নমার থেকে এ অঞ্চলে এসে বসতি স্থাপন থেকে শুরু করে এই যাত্রার মধ্যবর্তী সময়ে অধিকাংশ রোহিঙ্গা-ই মানসিক ট্রমার মধ্য দিয়ে গেছেন। ফলস্বরূপ, নতুন দেশে এসে অনেক রোহিঙ্গা বিশেষ করে দ্বিতীয় এবং তৃতীয় প্রজন্মের রোহিঙ্গারা তাদের সাংস্কৃতিক পরিচয় নিয়ে অনিশ্চয়তাসহ নানা বিড়ম্বনার শিকার হোন”।

সৌদি আরবের কিং আব্দুল আজিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মুরাদ আল শাফি তার উপস্থাপিত পেপার-“রোহিঙ্গা রিফিউজি ইন সৌদি আরবঃ হিস্টোরিক্যাল ব্যাকগ্রাউন্ড এন্ড কারেন্ট সিচুয়েশন” (Rohingya Refugees in Saudi Arabia: Historical Background and Current Situation)-এ সৌদি আরবে রোহিঙ্গা শরণার্থী সম্প্রদায়ের আর্থ-সামাজিক পটভূমি সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ প্রদান করেন এবং সৌদি আরবে রোহিঙ্গাদের ভাষাগত সমস্যা নিয়ে আলোকপাত করেন।

জাপানের গাকুশুইন বিশ্ববিদ্যালয় (Gakushuin University)-এর আইন বিভাগের অধ্যাপক মিচিমি মুরানুশি (Michimi Muranushi) বলেন, ”জাপানে অবস্থানরত বেশিরভাগ রোহিঙ্গা সম্প্রদায় টোকিও থেকে প্রায় দুই ঘন্টা ট্রেনের যাত্রার দূরত্বে একটি শহরে বসবাস করে। তারা বেশ কয়েক বছর ধরেই রোহিঙ্গা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে জাপান সরকারের দৃঢ় অবস্থান গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে আসলেও এই বিষয়ে জাপান অনেকটা নিশ্চুপ। বিভিন্ন জাপানি মিডিয়া মাঝে মধ্যে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে খবর প্রচার করলেও জাপানের বৈদেশিক নীতিতে তেমন কোন পরিবর্তন আসছে না”।

যুক্তরাজ্যের কুইন মেরি বিশ্ববিদ্যালয় পিএইচডি গবেষক মা থাই (Ma Htike) বলেন, “১৯৮২ সালে প্রণীত মিয়ানমারের নাগরিকত্ব আইন একটি বর্ণবাদী আইন । এই আইনের প্রণয়নের মাধম্যে রাখাইনে বসবাসরত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর নাগরিকত্বের অধিকার হরণ করা হয়েছে এবং তাদের মানবাধিকার চরমভাবে লঙ্ঘিত হয়েছে”।

“মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের চলমান গণহত্যা ও নির্যাতন বন্ধে বেশ কয়েকটি প্রচেষ্টার মধ্যে নাগরিকত্বের অধিকার পুনরুদ্ধারকে একটি বাস্তব ও জরুরি সমাধান হিসাবে বিবেচনা করা উচিত”, তিনি বলেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ইন্টারনেশন্যাল ক্রিমিনাল ল এটর্নি রেজিনা এম পাউলস (Regina M Paulose) তার বক্তব্যে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত রোহিঙ্গা ডায়াস্পোরা কিভাবে মিয়ানমারে বিদ্যমান জাতিগত সমস্যা সমাধানে কাজ করছেন সেসকল বিষয় তুলে ধরেন। পাশাপাশি মিয়ানমারে সংঘটিত গণহত্যা বন্ধে ডায়াস্পোরাদের কার্যক্রম তুলে ধরেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রে মিয়ানমারের ডায়াস্পোরা গ্রুপ অন্যান্য সাধারণ নাগরিকের মতোই সুযোগ সুবিধা পেয়ে থাকেন বলে জানান রেজিনা এম পাউলস (Regina M Paulose)।

থাইল্যান্ডের চিয়াং মাই বিশ্ববিদ্যালয় (Chiang Mai University) সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের পিএইচডি গবেষক কুন্নুয়াউত বোনরিক (Kunnawut Boonreak), তার প্রেজেন্টেশনে বলেন, “থাইল্যান্ডে বসবাসরত রোহিঙ্গারা সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থানের দিক থেকে বৈচিত্র্যময় জীবন যাপন করছে। যেসকল রোহিঙ্গারা থাইল্যান্ডের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন এবং যারা শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় গ্রহণ করেছেন তারা নিজেদের মধ্যে ব্যবসায়িক, ধর্মীয় ও জাতিগত নেটওয়ার্ক তৈরি করেছেন”।

তিনি রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন নেটওয়ার্ক যেমন মুসলিম সংগঠন, আইএনজিও, বিশ্বাস-ভিত্তিক মানবিক সংস্থা এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এর কার্যক্রম নিয়েও আলোচনা করেন।

কুন্নুয়াউত বোনরিয়াক এর গবেষণায় বলা হয় রোহিঙ্গারা বিভিন্ন নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে নতুন করে নিজেদের সত্তাকে জানান দিতে চায় এবং মিয়ানমার সরকার ও কিছু মিডিয়া কর্তৃক তাদেরকে “সন্ত্রাসী গ্রুপ” হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেয়ার ধারণাকে পাল্টাতে চায়।

দুই দিন ব্যাপী আন্তর্জাতিক এই সম্মেলনের উদ্দেশ্য হচ্ছে বিশ্বজুড়ে বসবাসরত রোহিঙ্গা সম্প্রদায়কে একত্র করে তাদের জীবনযাত্রা সম্পর্কে অবহিত হওয়া, নাগরিক সমাজ ও সরকারি প্রতিনিধিদের সাথে আলোচনা করে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ন্যায়বিচার প্রাপ্তিতে চাপ প্রয়োগ করা এবং আশ্রয়দানকারী রাষ্ট্রে তাদের সামাজিক অন্তর্ভুক্তিকরণ নিশ্চিত করা।

সম্মেলনে রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার লঙ্ঘন, নিপীড়ন, জাতিগত নির্মূলকরণের পাশাপাশি, নাগরিকত্বহীনতার কারণে দেশ ত্যাগ করার কারণসমূহ আলোচনা করা হয় । সম্মেলনের প্রথম দিনে বক্তারা একই সাথে রোহিঙ্গা ডায়াস্পোরার আর্থ-সামাজিক ও এবং রাজনৈতিক অবস্থা এবং আশ্রয়দানকারী দেশগুলিতে সামাজিক অন্তর্ভুক্তির জন্য সহায়তার বিষয়েও আলোকপাত করেন। পাশাপাশি মায়ানমারের অভ্যন্তরে ও বাইরে রোহিঙ্গাদের আন্তঃসম্পর্ক এবং রোহিঙ্গা ডায়াস্পোরাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়েও আলোচনা হয় সম্মেলনের প্রথম দিনে।