এম.এ আজিজ রাসেল:
পর্যটন নগরী কক্সবাজার শহরে দিন দিন বাড়ছে লাইসেন্সবিহীন ব্যাটারি চালিত অটো রিকশা। এমনিতেই টমটম যন্ত্রণায় অসহ্য শহরবাসী, তার মধ্যে দুর্ভোগের মাত্রায় যোগ হয়েছে ব্যাটারিচালিত অটো রিকশা। এসব ব্যাটারিচালিত রিকশার কারণে অধিকাংশ যানজট ও দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটছে বলে অভিমত পথচারীদের। এছাড়া প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ অবৈধভাবে ব্যবহার করে রিকশাগুলো চার্জ দেয়া হয় বলেও অভিযোগ রয়েছে। এতে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে।
এদিকে শহরের যানজট নিরসনে লাইসেন্সবিহীন ব্যাটারি চালিত অটো রিকশা নিয়ন্ত্রণে অভিযানে নামছে কক্সবাজার ট্রাফিক পুলিশ। কক্সবাজার ট্রাফিক কার্যালয়ের সহকারি পুলিশ সুপার বাবুল চন্দ্র বণিক বলেন, অল্প সংখ্যক ব্যাটারি চালিত রিকশা পৌর মেয়রের অনুমতি নিয়ে প্রতিবন্ধীরা চালাচ্ছে। কিন্তু লাইসেন্স ছাড়া শহরের অটো রিকশা চলাচলে সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে বাড়ছে যানজট। তাছাড়া অটো রিকশার অদক্ষ চালকদের কারণে প্রতিনিয়ত ছোট বড় দুর্ঘটনা বাড়ছে। তাই সার্বিক বিষয় বিবেচনায় শহরের সড়কের সুন্দর পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে সোমবার (২৪ আগস্ট) থেকে ব্যাটারিচালিত লাইসেন্সবিহীন রিকশা ধরপাকড় শুরু হবে। এ জন্য শহরের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পয়েন্টে বসানো চেক পোস্ট। ট্রাফিক পুলিশের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে সাধুবাদ জানিয়েছেন সুশীল মহল।
কক্সবাজার সোস্যাল এক্টিভিটিস ফোরামে প্রধান সমন্বয়ক সাংবাদিক এইচএম নজরুল ইসলাম বলেন, ‘অনভিজ্ঞরাই অটো রিকশাগুলো চালাচ্ছে। ছোট ছোট শিশুরাও ব্যাটারি চালিত রিকশা নিয়ে রাস্তায় নামছে। এতে প্রায় সময় মারাত্মক সব দুর্ঘটনার পাশাপাশি যানজটে নাকাল হচ্ছে শহরবাসী। তাই ট্রাফিক পুলিশের অভিযান সত্যি প্রশংসনীয়।
জানা যায়, শহরে প্রায় ৪ হাজার টমটম ও ৩ হাজার বাংলা রিকশা চলাচল করে। লাইসেন্সবিহীন টমটম রয়েছে আরও বেশি। সম্প্রতি পৌর এলাকা দাপিয়ে বেড়াছে ব্যাটারি চালিত প্রায় ৫ হাজার অটো রিকশা। পৌরসভা ছাড়াও বিভিন্ন উপজেলাসহ সাতকানিয়া, লোহাগাড়া ও পটিয়া থেকেও এখানে লাইসেন্সবিহীন অটো রিকশা ঢুকছে। যার কারণে যানজটের মাত্রা জ্যামিতিকভাবে বেড়েই চলেছে। সরু প্রধান সড়কে চাহিদার বিপরীতে চারগুণ যানবাহন চলাচল করায় দুর্ঘটনা ও যানজট নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। এ নিয়ে শহবাসীর ক্ষোভ দীর্ঘদিনের। লাইসেন্সবিহীন অটো রিকশা চলাচলে পথে বসার উপক্রম সৃষ্টি হয়েছে পেট্ট্রোল চালিত বাংলা রিকশা চালকদের। অটো রিকশার দাপটে বাংলা রিকশা চালকেরা ভাড়া না পেয়ে অসহায় হয়ে দিনাতিপাত করছে। এ বিষয়ে লাইসেন্সধারী প্রায় ১০০ সাধারণ রিকশা মালিক ব্যাটারি চালিত লাইসেন্সবিহীন অটো রিকশা বন্ধে কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র বরাবর একটি অভিযোগ দিয়েছেন।
বাংলা রিকশার হাতি কোম্পানী বলেন, পৌর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে লাইসেন্স নিয়ে ফি আদায় করে বাংলা রিকশা চলাচল করে। কিন্তু ব্যাটারি চালিত লাইসেন্সবিহীন অটো রিকশার কারণে বাংলা রিকশা চালকেরা ভাড়া পাচ্ছে না। এতে পরিবার পরিজন নিয়ে তারা না খেয়ে দিন পার করছে। বিভিন্ন উপজেলা থেকে অটো রিকশা অনুপ্রবেশ করায় মূলতঃ এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। লাইসেন্সবিহীন এসব অটো রিকশা চলাচল বন্ধ না হলে পথে পথে ভিক্ষা করতে হবে প্রায় ৫ হাজার সাধারণ রিকশা চালক ও মালিকদের।
এ প্রসঙ্গে কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমান বলেন, পৌর এলাকায় যানজট নিয়ন্ত্রণে সোমবার (২৪ আগস্ট) কক্সবাজার পৌরসভা মিলনায়তনে লাইসেন্সধারী টমটম চালক ও মালিকদের নিয়ে প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়েছে। শহরে লাইসেন্স ছাড়া কোন অটো রিকশা ও টমটম চলতে পারবে না। তাদের নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।