এ কে এম ইকবাল ফারুক,চকরিয়া :

কক্সবাজারের চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলার বিভিন্ন আভ্যন্তরীণ সড়কে ঝুঁকিপূর্ণভাবে এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার রিফিল করেই চালানো হচ্ছে সিএনজি চালিত অটোরিকশা। দু’উপজেলার আভ্যন্তরীণ অন্তত ২০টি সড়কে প্রতিদিন প্রায় দেড় সহস্রাধিক    সিএনজি চালিত অটোরিকশা চলছে ঝুকিপূর্ণভাবে। সিএনজি চালকদের অভিযোগ, গ্যাস সংকট ও চকরিয়া-পেকুয়ায় স্থায়ী সিএনজি ফিলিং স্টেশন না থাকায় জীবন জীবিকার তাগিদেই চালকরা গাড়ি চালানোর ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ এ পথ বেছে নিয়েছেন। আর এরফলে যে কোন সময় বড় ধরণের দূর্ঘটনার শিকার হয়ে মারাত্মক বিপর্যয়ের আশংকা করছেন সচেতন মহল।

তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, চকরিয়া উপজেলার চিরিংগা-বদরখালী, চিরিংগা-জিদ্দাবাজার-কাকারা-মানিকপুর,চিরিংগা-কৈয়ারবিল,চিরিংগা-বেতুয়াবাজার-বহদ্দারকাটা,বানিয়ারছড়া-শান্তিরবাজার-পহরচান্দা,বানিয়ারছড়া-ফাইতং,হারবাং-পহরচান্দা,বরইতলী একতাবাজার নতুন রাস্তার মাথা-পেকুয়া-মগনানা ও টৈটং সড়কে এবং পেকুয়া উপজেলার এবিসি সড়কসহ উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের বিভিন্ন আভ্যন্তরীণ সড়কে প্রায় দেড় সহ¯্রাধিক সিএনজি চালিত অটোরিকশা চলাচল করে। কিন্তু চকরিয়া ও পেকুয়ায় স্থায়ী কোন সিএনজি স্টেশন না থাকায় এসব সিএনজি চালকরা তাদের গাড়িতে সিএনজি গ্যাস সংগ্রহের ক্ষেত্রে নানা বিড়ম্বরনার শিকার হচ্ছেন। ফলে ঝঁকিপূর্ণ হলেও জীবন জীবিকার তাগিদে তারা গাড়িতে এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার রিফিল করেই চালাচ্ছেন সিএনজি চালিত অটোরিকশা।

বরইতলী একতা বাজার-পেকুয়া-মগনামা ও টৈটং সড়কের সিএনজি অটোরিকশা চালক মানিক, রুহুল কাদের ও আবুল হাশেম বলেন, আগে থেকে চকরিয়া-পেকুয়ায় স্থায়ী কোন সিএনজি ফিলিং স্টেশন না থাকায় চকরিয়া- পেকুয়া-বাঁশখালী ও আনোয়ারা উপজেলা পাড়ি দিয়ে চট্টগ্রামের কর্ণফলী থানার নতুনব্রীজ এলাকা থেকে গ্যাস সংগ্রহ করে গাড়ি চালাতেন সিএনজি অটোরিকশা চালকরা। এ দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে গাড়িতে সিএনজি গ্যাস সংগ্রহ করতে গিয়ে নানা দূর্ঘটনার পাশাপাশি চালকরা পুলিশ ও নামে বেনামে বিভিন্ন সংগঠনকে চাঁদা দিতে গিয়ে হয়রাণীর হয়। ফলে পরর্তীতে দুই উপজেলার বেশ কয়েকটি পয়েন্টে কয়েকজন ব্যবসায়ী চট্টগ্রাম থেকে অবৈধ পন্থায় সিএনজি চালিত গ্যাস এনে তা সিএনজি অটোরিকশা চালকদের কাছে বিক্রি করলে চালকরা চট্টগ্রাম থেকে গ্যাস না এনে এক সময় স্থাণীয়ভাবে সিএনজি গ্যাস বিক্রেতাদের দিকেই ঝুঁকে পড়েন। কিন্তু এসব ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা সিএনজি গ্যাসের মূল্যে শহরের মূল্যের চেয়ে বেশি হওয়ায় চালকরা তা থেকেও বিমুখ হয়ে পড়েন। পরবর্তীতে চালকরা তাদের গাড়িতে এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার রিফিল করেই চালাচ্ছেন তাদের সিএনজি চালিত অটোরিকশা। সিএনজি চালকদের অভিযোগ, গাড়ির চালানোর জন্য গ্যাস সংকট আর চকরিয়া ও পেকুয়ায় স্থায়ীভাবে সিএনজি ফিলিং স্টেশন না থাকায় ঝঁকিপূর্ণ হলেও জীবন জীবিকার তাগিদে চালকরা গাড়ি চালনোর ক্ষেত্রে এ পথ বেছে নিয়েছেন।

নিয়মিতভাবে সিএনজি চালিত অটোরিকশায় চলাচলকারী চকরিয়ার সিনিয়র সাংবাদিক এম আর মাহামুদ ও মহেশখালীর বাসিন্দা (বর্তমানে চকরিয়ায় বসবাসকারী) ব্যবসায়ী মো. পারভেজ বলেল, বর্তমানে অধিকাংশ সিএনজি অটোরিকশায় এলপিজি গ্যাসের সিলিন্ডার ব্যবহার করতে দেখা যাচ্ছে। অটোরিকশা গুলোর পেছনের সিটের পাশে এসব গ্যাস সিলিন্ডার বসিয়ে রাখা হয়। অতচ এই গ্যাস মূলত বাসাবাড়িতে রান্নাবান্নার কাজেই ব্যবহৃত হয়। গাড়ির ত্রুটিপূর্ণ সংযোগ দিয়ে গ্যাস লিক করে এবং আলগাভাবে সিলিন্ডার বসানো কারণে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ঘটে অগ্নিসংযোগের পাশাপাশি বড় ধরণের দ‍ুর্ঘটনা ঘটে মারাতœক বিপর্যয়ের আশংকা রয়েছে। এ ব্যাপারে প্রশাসনের কঠোর নজরদারীও দাবী জানান তারা।

সিএনজি অটোরিকশায় এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারের বিষয়ে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ শামসুল তাবরীজ বলেন, বিষয়টি নিয়ে  উপজেলা পরিষদের মাসিক সমন্বয় সভায় একটি সিদ্ধান্ত হয়েছে। চকরিয়া উপজেলায় কয়টি সিএনজি অটোরিকশা ও ইজিবাইক (টমটম) রয়েছে তার তালিকা প্রস্তত করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অচিরেই এসব গাড়ি চিহ্নিত করে তালিকা প্রস্তত করার পর ঝুকিপূর্ণ গাড়ি সমুহের ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।