উখিয়া সংবাদদাতা : কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের হাজির পাড়া-দুছড়ি গ্রামীণ সংযোগ সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাব ও প্রতিনিয়ত শত শত ভারী যানবাহন চলাচল করার কারণে ক্ষত-বিক্ষত হয়ে পড়েছে। এতে স্থানীয় পথচারী, স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

সরজমিন ২২ আগস্ট (শনিবার) উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের হাজির পাড়া, হরিণমারা, খয়রাতি, মালিয়ারকূল ও বৃহত্তর দুছড়ি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, দীর্ঘ ১ যুগ পূর্বে নির্মিত হওয়া গ্রামীণ সংযোগ সড়কটি সংস্কারের অভাবে বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে। সেই সাথে টানা ৫ দিনের ভারী বর্ষণে সড়কের বিভিন্ন স্থানে পানি জমে বড় বড় গর্তের সৃষ্টির হয়েছে। পাশাপাশি পাহাড়ি ঢলের পানিতে সড়কের অনেকাংশে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়াও উক্ত সড়ক দিয়ে প্রতিনিয়ত অসংখ্য কাট বোঝাই ও অবৈধ বালি ভর্তি ডাম্পার চলাচল করায় ক্ষত-বিক্ষত হয়ে পড়েছে এ গ্রামীণ সড়ক।

দুছড়ি পাহাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বদিউর রহমান বলেন, উখিয়া সদর স্টেশন থেকে দুছড়ি এলাকার দুরত্ব প্রায় ৫ কিলোমিটার। সাধারণত শুষ্ক মৌসুমে এ যাতায়ত পথ দিয়ে গাড়ি যোগে স্কুলে পৌঁছতে সময় লাগতো ১৫-২০ মিনিট। বর্তমানে সড়কটি যান চলাচলের অনুপযোগী হওয়ায় সময় লাগে দেড় থেকে দুই ঘন্টা। এ অবস্থায় করোনায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়মিত স্কুলে আসা-যাওয়া করতে চরম দুর্ভোগের সৃষ্টি হতে পারে বলে তিনি আশংকা প্রকাশ করেন। তিনি দ্রুত সড়কটি সংস্কারের দাবী জানান।

দুছড়ি এলাকার রমজান আলী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বৃহত্তর দুছড়ি এলাকার অধিকাংশ মানুষ কৃষি উৎপাদিত পণ্য সামগ্রী বাজারজাত করে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। কিন্তু দুছড়ি-হাজির পাড়া-উখিয়া সংযোগ সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়া এবং অবৈধ কাঠ ও বালি ভর্তি ভারী যানবাহন চলাচল করার কারণে বর্তমানে সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। যার ফলে দুছড়ি এলাকার উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারজত করতে নানানমুখী সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন প্রান্তিক কৃষকরা।

দুছড়ি এলাকার নুর মোহাম্মদ বলেন, গত ১০ বছর পূর্বে সড়কটি সংস্কার জন্য বক্স করা হলেও বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার উধাও হয়ে যায়। বর্তমানে সেই বক্স গুলো অনেক বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে পুকুরে পরিনত হয়েছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, চলতি বর্ষা মৌসুমের শুরু থেকে সড়কটির এ করুন অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। ইতিমধ্যে সড়কটির কার্পেটিং এর টেন্ডার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে সড়কের সংস্কার কাজ শুরু হবে বলে আশা করছি। এ সময় উক্ত সড়কে অবৈধ ভারী যান চলাচলের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে অবগত নয় বলে জানান।

এ প্রসঙ্গে উখিয়া উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলামের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, হাজির পাড়া থেকে দুছড়ি পর্যন্ত সড়কটি বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে কার্পেটং এর জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। প্রস্তাবটি পাস হলে আশাকরি অল্প সময়ের মধ্যে কাজ শুরু হবে।

উখিয়া উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) আমিমুল এহসান খান জানান, রাজাপালং ইউনিয়নের দুছড়ি এলাকায় একটি বালি মহাল ইজারা দেওয়া হয়েছে। এই বালি মহাল ব্যতিত অন্যকোন স্থান থেকে অবৈধভাবে বালি উত্তোলন করে সড়কের ক্ষতি করে থাকলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।