ফারুক আহমদ , উখিয়া :

উখিয়া টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিভিন্ন দাতা সংস্থার ত্রাণ ও খাদ্য সামগ্রী পরিবহন করছেন ফিটনেস ও লাইসেন্স বিহীন ডাম্পার গাড়ি। নেই কোন রোড পারমিট। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর স্থাপিত বিভিন্ন চেকপোষ্টে মোটা অংকের মাসোহারা দিয়ে এসব অবৈধ গাড়ি পণ্য পরিবহন করছে বলে এমন অভিযোগ করেছেন উখিয়া ট্রাক পিকআপ মালিক শ্রমিক যৌথ ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ ।
এদিকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অবৈধ ডাম্পা যোগে ত্রাণ ও খাদ্য সামগ্রী পরিবহন বন্ধের দাবিতে পরিবহন সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা যৌথভাবে উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিকারুজ্জামান চৌধুরী নিকট লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে জানা গেছে। খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে বিশ্ব খাদ্য সংস্থা (ডাব্লিউএফপি) উখিয়া-টেকনাফের ৩৪ টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ত্রাণ সামগ্রী সহ সহ বিভিন্ন খাবার সামগ্রী সরবরাহ করে আসছেন। অনেকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, কক্সবাজার সী-প্যালেস ও উত্তরণ নামক স্থানে ডাব্লিউএফপির গোডাউন রয়েছে।
মালিক সমিতির নেতা আব্দুর রহিম ও গিয়াস উদ্দিন জানান ইদানীং হঠাৎ করে বৈধ ট্রাক বাদ দিয়ে কাগজপত্র বিহীন ডাম্পার যোগে ত্রাণ সামগ্রী পরিবহন শুরু করেছে ডব্লিউএফপি সহ বিভিন্ন দাতা সংস্থা । তারা আরো বলেন, এসব ডাম্পার গাড়ি চালকের কোন লাইসেন্স নেই। এমনকি রুট পারমিটও নেই। গাড়ির সামনে এনজিও সংস্থার ব্যানার লাগিয়ে দিয়ে জরুরী পণ্য পরিবহনের নামে প্রশাসনের চোখে ধুলো দিচ্ছে। এ কারণে সরকার বিপুল পরিমান রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় নাগরিক সমাজ।
গুরুতর অভিযোগ উঠেছে, টেকনাফ সড়কে পুলিশের একাধিক চেকপোস্ট রয়েছে। কোট বাজার, উখিয়া স্টেশন ও মরিচ্যা বাজারে রয়েছে ট্রাফিক পুলিশ। এছাড়াও তুলাবাগান ও বালুখালীতে রয়েছে হাইওয়ে পুলিশ। এসব চেকপোস্ট মাসোহারা দিয়ে রুট পারমিট বিহীন ডাম্পার গাড়ি প্রতিদিন ত্রাণ ও খাদ্য সামগ্রী পরিবহন করছে।
উখিয়া উপজেলা ট্রাক-পিকআপ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন বলেন, সরকারকে রাজস্ব দিয়ে রোড পারমিট সহ বৈধ কাগজপত্র নিয়ে শত শত ট্রাক ফিকআপ রয়েছে। রোড পারমিট ও লাইসেন্স বিহীন ডাম্পার গাড়ির কারণে আজ বৈধ ট্রাক গুলো রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পণ্য পরিবহন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে ট্রাক মালিকগণ ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ থেকে শুরু করে লাইসেন্স প্রাপ্ত বৈধ ড্রাইভাররা বেকার হয়ে পড়বে।
তিনি বিষয়টি শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার সহ জেলা প্রশাসকের নিকট দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
সরোজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে, প্রতিদিন কক্সবাজার এবং উখিয়ার বিভিন্ন স্থানে ডব্লিউএফপি সহ দাতা সংস্থার প্রতিদিন অন্তত ২ শতাধিক ডাম্পার যোগে সামগ্রী পরিবহন করে আসছে। অধিকাংশ ডাম্পার গাড়ির নম্বর প্লেইট পর্যন্ত নেই।
দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে ট্রাক-পিকআপ মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দকে উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা নিকারুজ্জামান চৌধুরী আশ্বস্ত করে বলেছেন, আমি প্রতি মাসেই অভিযান চালিয়ে ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে ডাম্পার আটকসহ লাইসেন্সবিহীন ড্রাইভার কে জেল-জরিমানা করেছি। এসব ডাম্পার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ত্রাণ সামগ্রী পরিবহন বিষয়টি শরণার্থী ও প্রত্যাবাসন কমিশনারসহ জেলা প্রশাসক কে জানানোর জন্য পরামর্শ দিয়েছেন।
অনেকে বলেছেন , ঢাকা কেন্দ্রিক একটি সিন্ডিকেট পরিবহন ব্যবসা টি নিয়ন্ত্রণ করছেন। সোনালী এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ডাব্লিউএফপিকে ম্যানেজ করে ৩৪টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পণ্য পরিবহনে দায়িত্ব পালন করছেন। অনেক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ব্যক্তিরা জানান, সোনালী এন্টারপ্রাইজ কিভাবে রুট পারমিট ও কাগজপত্র বিহীন ডাম্পার যোগে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ত্রাণ সামগ্রী সরবরাহ করছে বিষয়টি খতিয়ে দেখা দরকার।