সিসিএনএফের ভার্চুয়াল সেমিনারে অভিমত

রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন হতে পারে সর্বোচ্চ মানবিকতা

প্রকাশ: ১৮ আগস্ট, ২০২০ ০৫:২৭ , আপডেট: ১৮ আগস্ট, ২০২০ ০৫:৩৪

পড়া যাবে: [rt_reading_time] মিনিটে


সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
কক্সবাজার সিএসও এনজিও ফোরাম (সিসিএনএফ) আয়োজিত এক ভার্চুয়াল সেমিনারে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবসনের জন্য রাজনৈতিক রাজনৈতিক উদ্যোগকে অধিকতর জোরদার করার জন্য জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক এনজিওসমূহ এবং সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। আন্তর্জাতিক এনজিওগুলোকে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোতেও এই বিষয়ে তৎপর হওয়ার আহবান জানান তাঁরা। তাঁরা আরও বলেন, কক্সবাজার জেলা এমনিতেই জলবায়ু পরিবর্তনের নেতবিাচকত নানা প্রভাবে আক্রান্ত একটি এলাকা, এর পাশাপাশি জেলার মানুষজন কোভিড ১৯সহ বিভিন্ন সমস্যায় ভূগছেন।
মঙ্গলবার (১৮ আগস্ট) কক্সবাজারে কর্মরত প্রায় ৫০টি স্থানীয় এনজিওর নেটওয়ার্ক সিসিএনএফ বিশ্ব মানবিকতা দিবস উপলক্ষে ‘কোভিড ১৯ এর সম্মুখযোদ্ধাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা: সংহতি এবং বৈচিত্র্য’ শীর্ষক এই ভার্চুয়াল সেমিনারের আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দিয়ে এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর মহাপরিচাল রাশেদুল ইসলাম বলেন,  মায়ানমারের এই নাগরিকদের মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তন হতে পারে  মানবতাবাদের সর্বোত্তম উদাহরণ। তিনি কোভিড ১৯ মোকাবেলায় এনজিওদের সম্মুখযোদ্ধাদের ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন।
ভার্চুয়াল সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আশরাফুল আফসার।
এতে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আন্তর্জাতিক রেডক্রস এবং রেডক্রিসেন্টের বাংলাদেশ প্রতিনিধি আজমাত উল্লাহ।
এতে অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন অতিরিক্ত  আরআরআরসি শামসুদ্দোহা, ইউএনএইচসিআর’র প্রতিনিধি কেএফায়েত মোস্তফা, আইওএম’র ড. সামির হালদার এবং আইএসসিজি থেকে মিঃ সৈকত। সেমিনারটি পরিচালনা করেন সিসিএনএফ’র কে-চেয়ার আবু মোর্শেদ চৌধুরী এবং রেজাউল করিম চৌধুরী।
সেমিনারে কেভিড সংকট মোকাবেলায় নিয়োজিত আটজন সম্মুখযোদ্ধা বক্তৃতা করেন, তাঁরা হলেন আফরোজা সুমি, শফিউল সুইট, সানজিদা আখি, আলোকা অধিকারী, জাহাঙ্গীর আলম, এবং হুরি জান্নাত। স্থানীয় এনজিও-এর এই কর্মীবৃন্দ কোভিড ১৯ বিষয়ে নিজেদের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। জানা যায়, কক্সবাজারে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় ১২৯টির মতো এনজিওর প্রায় ১৬ হাজার কর্মী মাঠ পর্য়ায়ে কর্মরত আছে, এদের মধ্যে প্রায ১০০০ জন সম্মুখ যোদ্ধা করোনা ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয়েছেন। সেমিনারে অংশগ্রহণকারীবৃন্দ রোহিঙ্গা শিবির এবং স্থানীয় এলাকাগুলোতে কর্মরত স্বেচ্ছাসেবক, এবং মানুষের জীবন রক্ষায় নিয়োজিত ডাক্তার ও নার্সসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি বিশেষ শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।
স্থানীয় এনজিও জাগো নারী’র শিউলি শর্মা সংকটে প্রথম সাড়াদানকারী হিসেবে স্থানীয় এনজিওগুলিকে অধিকতর অর্থায়নের অনুরোধ করেন। ইপসার আরিফুর রহমান আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে ’অংশীদারিত্বের নীতিমালা’  প্রতি তথা স্থানীয় এবং জাতীয়এনজিওর সাথে সমান আচরণের প্রতি সম্মান জানাতে অনুরোধ করেন। মেঘনা ফাউন্ডেশনের আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন,  সামর্থ্য বা দক্ষতা বিনিময়ের বিষয়টি এখন বিবেচনা করতে হবে। একলাব’র তারিকুল রোহিঙ্গা সংকট ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় সংস্থাগুলোর প্রবেশাশিকার এবং অধিকতর অংশগ্রহণের দাবি জানান। মুক্তি কক্সবাজারের বিমল দে সরকার  কমপক্ষে ১২ মাসের জন্য প্রকল্প অনুমোদনের অনুরোধ করেন। হেল্প কক্সবাজার’র আবুল কাশেম উখিয়া এবং  টেকনাফের স্থানীয়দের বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরে বলেন, এসব সমস্যা আরও বেড়েছে, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সংকট আরও প্রকট হচ্ছে। অগ্রযাত্রা’র নীলিমা আক্তার বলেন, স্থানীয় জনগণ রাজনৈতিকভাবে তেমন অগ্রগতি না দেখে হতাশ, তিনি তহবিল সংগ্রহের জন্য প্রচেষ্টা না করে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের জন্য সরকার ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলিকে প্রচেষ্টা দ্বিগুণ করার প্রচেষ্টা করার আহ্বান জানান।
সেমিনারের সঞ্চালক  আবু মোর্শেদ চৌধুরী এবং রেজাউল করিম চৌধুরী,  কোভিড সংকট মোকাবেলায় স্থানীয় প্রশাসনকে সহযোগিতা করায় আন্তর্জাতিক সংস্থা বিশেষত ইউএনএইচসিআর এবং আইওএম-এর প্রশংসা করেন। উল্লেখ্য যে, ইউএনইচসিআরসহ অন্যান্য মানবিক সংগঠন এবং সরকার মিলে ৬৫০ শয্যার ১২টি কোভিড চিকিৎসাকেন্দ্র  স্থাপন করেছে এবং কক্সবাজার সদর হাসপাতালে যাবতীয় সুবিধাসহ ১০টি আইসিইউ বেড প্রদান করেছে।  তারা বলেন সবার সর্বাত্মক অংশগ্রহণ ভিত্তিক প্রচেষ্টার ফলে স্থানীয় জনগোষ্ঠী এবং রোহিঙ্গা শিবিরে কোভিড ১৯ সংক্রমণ সীমিত রাখা সম্ভব হচ্ছে।