মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :

সেনাবাহিনী থেকে স্বেচ্ছায় অবসরে নেওয়া মেজর (অবঃ) সিনহা মোঃ রাশেদ খান নিহত হওয়া নিয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে মোট ৩ টি মামলা দায়ের করা হয়েছিলো। তারমধ্যে, মেজর (অবঃ) সিনহা মোঃ রাশেদ খানের সাথে তাঁর প্রাইভেট কারে থাকা সাহেদুল ইসলাম সিফাত’কে আসামী করে টেকনাফ থানায় ২টি মামলা দায়ের করা হয়। তার একটি ২০১৮ সালের মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে এবং অপরটি সরকারি কর্মচারীদের দায়িত্ব পালনে বাঁধা দেওয়ার অভিযোগে। মামলা ২ টির নম্বর হলো : জিআর ৫৯৫/২০২০ ও জিআর ৫৯৬/২০২০ ইংরেজি। মামলা ২টির বাদি হন- বাহারছরা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই (নিরস্ত্র) নন্দ দুলাল রক্ষিত। যে নন্দ দুলাল মেজর (অবঃ) সিনহা মোঃ রাশেদ খানের বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস এর করা হত্যা মামলার ৩ নম্বর আসামী। বৃহস্পতিবার ৬ আগস্ট আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তিনি সহ ৭জন আত্মসমর্পন করলে তাদের জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানো হয়। পরে নন্দলাল রক্ষিত, টেকনাফের সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, লিয়াকত আলীর ৭দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।

কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ রোডের বাহারছরা শামলাপুর পুলিশ চেকপোস্টে গত ৩১ জুলাই রাত্রে যখন মেজর (অবঃ) সিনহা মোঃ রাশেদ খান
পুলিশের গুলিতে খুন হন, তখন তাদের ডকুমেন্টারি ফ্লিম তৈরির টিমের অপর ২ সদস্য যথাক্রমে স্টামফোর্ট ইউনিভার্সিটির ছাত্র শিপ্রা রানী দেব ও তাহসিন রিফাত নুর ছিলেন হিমছড়ি নীলিমা রিসোর্টে। হিমছড়ি এলাকাটি ভৌগোলিকভাবে রামু উপজেলাতে হওয়ায় রামু থানার হিমছড়ি ফাঁড়ির পুলিশ খুনের ঘটনার পর পরই এসে শিপ্রা রানী দেব ও তাহসিন রিফাত নুর’কে হিমছড়ি নীলিমা রিসোর্ট থেকে গ্রেফতার করে। পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী নীলিমা রিসোর্ট থেকে ৫টি বিদেশি মদের বোতল, ১ লি: বাংলা মদ ও এক পোটলা গাঁজা উদ্ধার করা হয়।

গত ৩১ জুলাই রাত্রে শিপ্রা রানী দেব ও তাহসিন রিফাত নুর’কে গ্রেপ্তার করার পর পরই তাদের রামু থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাহসিন রিফাত নুর’কে তার পিতার জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়। আর উদ্ধারকৃত মালামাল গুলো সহ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে রামু থানায় একটি মামলা করে শিপ্রা রানী দেব’কে গত ১ আগস্ট আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। মামলা নং জিআর ৩১১/২০২০ ইংরেজি (রামু)। একই সাথে মামলার আইও রামু থানার এসআই দীপংকর শিপ্রা রানী দেবের বিরুদ্ধে ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করলে আদালত গত ৫ আগস্ট রিমান্ড আবেদন শুনানির জন্য রাখেন। কিন্তু ৫ আগস্ট আদালতে রিমান্ড আবেদনটির কোন শুনানি হয়নি। আবার একই দিন মেজর (অবঃ) সিনহা মোঃ রাশেদ খানকে হত্যার দায়ে তাঁর বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস বাদী হয়ে একই আদালতে দায়ের করা মামলাটি গ্রহন ও বিভিন্ন আদেশ দেন আদালতের বিজ্ঞ বিচারক। জিআর ৩১১/২০২০ ইংরেজি (রামু) মামলার রিমান্ড আবেদন গত ৫ আগস্ট শুনানি না হলেও শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌসের দায়ের করা সিআর ৯৪/২০২০ নম্বর মামলায় ১, ২ ও ৩ নম্বর আসামী যথাক্রমে লিয়াকত আলী, প্রদীপ কুমার দাশ ও নন্দ লাল রক্ষিতকে ৭ দিন করে ডিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।

অর্থাৎ মেজর (অবঃ) সিনহা মোঃ রাশেদ খান নিহত হওয়ার পর টেকনাফ ও রামু থানা পুলিশের দায়েরকরা উক্ত ৩ টি মামলা মূলত সম্পূর্ণ গতিহীন হয়ে পড়েছে।