শাহেদ মিজান, সিবিএন:

মেজর (অব.) সিনহা মোঃ রাশেদ খান হত্যা মামলায় জামিন নামঞ্জুর হওয়া এবং সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হওয়া টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির সাবেক আইসি লিয়াকত আলী ও এসআই নন্দদুলাল রক্ষিতকে জিজ্ঞাবাদের জন্য নিজেদের হেফাজতে নেবে র‌্যাব । আদালতের নির্দেশ মতে রিমান্ড জিজ্ঞাসাবাদের এই তিন আসামীকে হেফাজতে নেবে এই সরকারি বাহিনী ।

আদালতের উদ্ধৃতি দিয়ে বাদি পক্ষের প্রধান আইনজীবি মোহাম্মদ মোস্তফা আদালত কক্ষ থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান।

তিনি জানান, আসামীদের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হলে আদালতের বিচারক মুহাম্মদ হেলাল উদ্দীন ৩ জনের সাত দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেছেন। তারা হলেন, সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, প্রধান আসামী লিয়াকত ও এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত। বাকিদের জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেয়া হয়েছে।

সে মোতাবেক রিমান্ডের অংশ হিসেবে শীর্ষ তিন আসামীকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেবে র‌্যাব। বাকি চার আসামীকে প্রয়োজন মতো জেলগেইটে জিজ্ঞাবাদ করবে র‌্যাব।

জানা গেছে, আদালতের নিদের্শনা মতে, যে চার আসামীকে জেলগেইটে জিজ্ঞাবাদের জন্য অনুমতি দেয়া হয়েছে তাদেরকে ইতিমধ্যে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। রাত ৮টা ১০ মিনিটি নাগাদ তাদের তাদের বহন করে একটি প্রিজন ভ্যান কক্সবাজার আদালত চত্বর ত্যাগ করে। ৮টা ৪০ মিনিটে ওই প্রিজন ভ্যানটি কারাগারে পৌঁছেছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে এখনো আদালত কক্ষে রয়েছেন রিমান্ড মঞ্জুর হওয়া তিন আসামী সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, প্রধান আসামী লিয়াকত ও এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত। অল্প সময়ের মধ্যেই র‌্যাবের দল তাদেরকে নিয়ে যাবে বলে জানা গেছে।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার (৩১ জুলাই) রাত সাড়ে ১০টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর সিনহা রাশেদ খান। এই ঘটনায় চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমানকে প্রধান করে একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জন ও নিরাপত্তা বিভাগ। একইভাবে তদন্তের স্বার্থে টেকনাফের বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ লিয়াকত আলিসহ ১৬ পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

এই ঘটনায় বুধবার দুপুরে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন মেজর সিনহার বড়বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। মামলাটির শুনানিতে সন্তুষ্ট হয়ে তা ‘ট্রিট ফর এফআইআর’ হিসেবে আমলে নিতে টেকনাফ থানাকে আদেশ দেন আদালতের বিচারক। আদালতের নির্দেশে টেকনাফ থানায় বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে মামলাটি রুজু হয়। দণ্ডবিধি ৩০২, ২০১ ও ৩৪ জামিন অযোগ্য ধারায় মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়। মামলা নম্বর সিআর: ৯৪/২০২০ইং/টেকনাফ।