শাহেদ মিজান, সিবিএন:
মেজর (অব.) সিনহা মোঃ রাশেদ খান হত্যা মামলার আসামি প্রদীপ কুমার দাশ নয় আসামীকে আজ বৃহস্পতিবার কক্সবাজার জেলা জজ আদালতস্থ টেকনাফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত (আদালত নম্বর-৩) আদালতে তোলা হয়। বিকাল ৫টার দিকে তাদেরকে এজলাজে তোলা হয়। টানা এক ঘণ্টা আসামীদের নিয়ে শুনানী করা হয়। আলোচিত এই হত্যা মামলার আসামীদের দেখতে কক্সবাজার আদালত চত্বরে উৎসুক মানুষের নজিরবিহীন সমাগত হয়েছে।

মেজর সিনহা মোঃ রাশেদ খান হত্যা মামলার আসামী প্রত্যাহার হওয়া উপ-পরিদর্শক লিয়াক ও ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ এজাহারভুক্ত নয় আসামীকে আদালতে তোলার খবর প্রকাশ হয়। সেই খবর পেয়ে কক্সবাজার শহরসহ আশেপাশের বিভিন্ন এলাকার উৎসুক লোকজন কক্সবাজার জেলা আদালত চত্বরে সমবেত তাকে। ক্রমান্বয়ে লোক সমাগম বেড়ে বিপুল সংখ্যক মানুষের সমাগমে পরিণত হয়।

এদিকে এই বিপুল উৎসুক জনতার সমাগমের শৃঙ্খলা ঠেকাতে আদালত চত্বরে মোতায়েন করা হয় বিপুল সংখ্যক পুলিশ, র‌্যাব, গোয়েন্দা পুলিশের সদস্য। তারা একদিকে বিপুল মানুষের সমাগমে শৃঙ্খলা রক্ষা এবং পাশাপাশি নিরাপত্তার বজায় রাখার জন্য নিশ্চিদ্র বেষ্টনি জোরদার করেছেন। কেননা দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর সাবেক মেজর এবং প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তারক্ষী সিনহা মোঃ রাশেদ খান হত্যা নিয়ে পুরো দেশের মানুষ টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও গুলি ‘স্যুট’ করা সাবেক উপ-পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ আসামীদের প্রতি চরম ক্ষুব্ধ ছিলো। সে বিবেচনায় অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটারও আশঙ্কা থেকে যায়। তাই নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা জোর করা হয় বলে জানা গেছে।

জানা গেছে, সাবেক ওসি প্রদীপ সহ নয় আসামীকে টেকনাফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের (আদালত নম্বর-৩) সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ হেলাল উদ্দিনের আদালতে আসামীদের তোলা হয় এবং তাদের আইনজীবি তাদের জামিন আবেদন করেন। পরে দীর্ঘ এক ঘণ্টা শুনানী হয়।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার (৩১ জুলাই) রাত সাড়ে ১০টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর সিনহা রাশেদ খান। এই ঘটনায় চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমানকে প্রধান করে একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জন ও নিরাপত্তা বিভাগ। একইভাবে তদন্তের স্বার্থে টেকনাফের বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ লিয়াকত আলিসহ ১৬ পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

এই ঘটনায় বুধবার দুপুরে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন মেজর সিনহার বড়বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। মামলাটির শুনানিতে সন্তুষ্ট হয়ে তা ‘ট্রিট ফর এফআইআর’ হিসেবে আমলে নিতে টেকনাফ থানাকে আদেশ দেন আদালতের বিচারক। আদালতের নির্দেশে টেকনাফ থানায় বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে মামলাটি রুজু হয়। দণ্ডবিধি ৩০২, ২০১ ও ৩৪ জামিন অযোগ্য ধারায় মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়। মামলা নম্বর সিআর: ৯৪/২০২০ইং/টেকনাফ।