মনছুর আলম মুন্না#
বর্ষ পরিক্রমায় আবারও এসেছে পবিত্র ঈদুল আযহা। আমাদের জীবনে প্রতি বছর ঈদ আসে আনন্দ আর সীমাহীন প্রেম, প্রীতি ও কল্যানের বার্তা নিয়ে। তাই এই দিন সকল কালিমা আর কলুষতাকে ধুয়ে মুছে, হিংসা বিদ্বেষ ভুলে পরস্পর প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া উচিৎ।
ঈদের শুভেচ্ছা।
ঈদ আরবি শব্দ-যার অর্থ খুশি বা আনন্দ। ঈদ একাধারে উৎসব ও ইবাদত।ঈদ এলে ধনী-গরিব, উঁচু-নিচু সব মানুষ মেতে ওঠে উৎসবে।সব বৈষম্য ও ভেদাভেদ ভুলে মানুষে মানুষে সৃষ্টি হয় সাম্য ও ভ্রাতৃত্ববোধ। ধনী -গরিব নির্বিশেষে সব মানুষ একটি দিনের জন্য হলেও ভুলে যায় হিংসা-বিদ্বেষ।
মহানবী (সা.) মদিনায় হিজরত করার আগে আরব জাতি ‘নাইরোজ’ ও ‘মেহেরজান’ নামে দুটি উৎসব পালন করত। মহানবী (সা.) মদিনায় হিজরত করার পর অশ্লীলতায় নিমজ্জিত উৎসব দুটির মূলোৎপাটন করে মুসলমানদের জন্য চালু করেন ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা নামে দুটি ধর্মীয় উৎসব। মূলত মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে তখন থেকেই শুরু হয় ঈদ উৎসব পালনের প্রচলন।
ঈদ হচ্ছে মুসলমানের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় এই উৎসব এখন আর শুধু মুসলমান সম্প্রদায়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি। বিস্তৃত হয়েছে ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যেও। ঈদের আনন্দে এখন সব ধর্মের মানুষ শরিক হয় বলে এটা এখন সর্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে। ঈদের দুটি মাহাত্ম্য রয়েছে। একটি হচ্ছে সিয়াম সাধনার মাধ্যমে আত্মশুদ্ধি অর্জন, অন্যটি হচ্ছে অসচ্ছল ও অবহেলিত মানুষের অধিকার নিশ্চিতকরন।
এবারের ঈদের ভিন্ন তাৎপর্য রয়েছে। করোনা ভাইরাসের কারনে পুরো সমাজে অর্থনৈতিক বিপর্যয় চলছে।ফলে ঘরে ঘরে বিরাজ করছে বিষাদের ছায়া। তা ছাড়া দীর্ঘ দিন ধরে ব্যবসা-বাণিজ্য ও কাজকর্ম বন্ধ থাকায় অর্থনীতিতে দেখা দিয়েছে স্থবিরতা। নিম্ন আয়ের মানুষেরা এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি সমস্যাপীড়িত। অনেকের ঘরে নেই দু-মুঠো অন্নের সংস্থান। এই সময়ে আমাদের সবার উচিত বিপন্ন ও অসহায় এসব মানুষের পাশে দাঁড়ানো। সব ভয়ভীতি ও আতঙ্ককে জয় করে আমরা যদি এবারের ঈদে ক্ষুধার্ত অসহায় মানুষের মুখে হাসি ফুটাতে পারি, তাহলে ঈদের আনন্দ ও উদ্দেশ্য সার্থক হবে। ঈদ মোবারক

 

মনছুর আলম মুন্না
সাংবাদিক, কক্সবাজার।