মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :

কক্সবাজারে কিছু জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিবিদ ও বিভিন্ন সেক্টর ইয়াবা ব্যবসায় সরাসরি সম্পৃক্ত রয়েছে।

রোববার ২৬ জুলাই সকালে র‌্যাব-১৫ এর কার্যালয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে মত বিনিময়কালে র‌্যাব-১৫ এর অধিনায়ক উইং কমান্ডার মোহাম্মদ আজিম আহমেদ এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের কারনে ইয়াবা ব্যবসা মূলত বন্ধ করা যাচ্ছেনা। রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্পকে কেন্দ্র করে ইয়াবা ব্যবসা গড়ে উঠছে। সেখানে রোহিঙ্গা শরনার্থীরা জড়িয়ে পড়ছে। পুরো দেশে ইয়াবা ব্যবসার বিস্তৃতি ঘটানোর পেছনে রোহিঙ্গাদের একটা বড় ভুমিকা রয়েছে।

গণমাধ্যম কর্মীদের মাদক ব্যবসা বন্ধ করতে পরামর্শ, মাদক ব্যবসা সম্পর্কে সঠিক তথ্য উপাত্ত দিয়ে সহযোগিতার আহবান জানিয়ে উইং কমান্ডার মোহাম্মদ আজিম আহমেদ বলেন, ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত কেউ ছাড় পাবে না। শহর থেকে গ্রাম যেখানেই ইয়াবা বা মাদক ব্যবসায়ি সেখানেই যাবে র‌্যাব। তবে প্রয়োজন সঠিত তথ্যের।

দেশের স্বার্থে, ভবিষ্যত প্রজম্মকে গড়ে তুলতে মাদক নির্মূলে গণমাধ্যম সহ সবাইকে একযোগে কাজ করার আহবান জানিয়ে র‌্যাব-১৫ উইং কমান্ডার আজিম আহমেদ আরো বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে সরকারের ‘শূন্য সহিঞ্চুতা’ নীতির আলোকে গত ১৬ মাসে ধরে মাদকের বিরুদ্ধে র‍্যাব-১৫ এর অভিযান সব সময় ছিল এবং আগামীতেও অব্যাহত থাকবে। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ইয়াবা ব্যবসা যে পরিমান কমার কথা, সে পরিমান আদৌ কমেনি। বরং পাইকারী এবং খুচরা পর্যায়ে ইয়াবা ব্যবসার বিস্তৃতি আরো বাড়ছে। এতে, নতুন প্রজন্ম ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। আগামী প্রজন্মের স্বার্থে সবাইকে মাদকের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থেকে কাজ করার আহবান জানিয়ে তিনি আরো বলেন, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ইয়াবার চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ইয়াবা পাচার বাড়ছে এবং বেশ কিছু জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিবিদ সহ বিভিন্ন সেক্টরের এতে সম্পৃক্ততা রয়েছে। তাদের কারণেও ইয়াবা ব্যবসা কমছেনা বলেউইং কমান্ডার আজিম আহমেদ মন্তব্য করেন।

আগামী ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে কক্সবাজার জেলায় মাদক ব্যবসাকে নিয়ন্ত্রণ আনার জেলা পুলিশের ঘোষনাকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা সব সময় অপরাধ দমন ও মাদক নির্মূলে কাজ করছি, এজন্য আমরা সবার সাথে সহযোগিতা করে এখনো কাজ করতে চায়।

এ সময় সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে র‌্যাব কর্মকর্তাদের জানানো হয়, ইদানিং সীমান্ত দিয়ে মাদক পাচার কমে আসলেও নতুন আসা রোহিঙ্গাদের মায়ানমারের সমস্ত পথঘাট জানা থাকায় তারাই এখন বেশি মাদক পাচার করছে। গণমাধ্যমকর্মীরা রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্পে ফ্রি ওয়াইফাই ব্যবহার বন্ধ করা, মিয়ানমারের সিম ব্যবহার বন্ধ করা, মাদকের সাথে পৃষ্টপোষকতাকারী জনপ্রতিনিধি এবং রাজনৈতিক নেতৃবৃন্ধের তালিকা প্রকাশ সহ তাদের বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দেন। গণমাধ্যম কর্মীগণ মিয়ানমার সীমান্তে ইয়াবা কারখানাগুলো বন্ধে মিয়ানমারকে আর্ন্তজাতিক ভাবে চাপ দিতে কুটনৈতিক তৎপরতা চালানোর এবং তৃণমূল পর্যায়ে মাদকবিরোধী অভিযান আরো জোরদার করার দাবী জানান।

এই মতবিনিময় সভায় র‌্যাব-১৫’র মেজর মেহেদী হাসান, সহকারী পুলিশ সুপার বিধান চন্দ কর্মকার সহ উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। মতবিনিময় সভায় কক্সবাজার এবং উখিয়ার বিভিন্ন প্রিন্ট, অনলাইন এবং ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন। পরে অধিনায়ক উইং কমান্ডার মোহাম্মদ আজিম আহমেদ গণমাধ্যমকর্মীদের র‌্যাব-১৫ এর পক্ষে শুভেচ্ছা সামগ্রী প্রদান করেন।