থলিল চৌধুরী, সৌদি আরব:
মহামারি করোনা কারণে চলিত বছরের সীমিত আকারে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ইসলাম ধর্মের প্রথম ফরজ ও মুসলিম বিশ্বের সর্বোচ্চ ধর্মীয় জামায়েত পবিত্র হজ্ব।
‘লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে ফের মুখর পবিত্র নগরী মক্কা।
করোনাকালীন আইন মেনে ও সৌদি সরকারের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা মাধ্যমে হজ্ব ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে হজ্বে অংশ নেওয়া হজযাত্রীরা সাত দিনের হোম কোয়ারেন্টিন শেষ করে মক্কায় আসতে শুরু করেছেন।
সৌদি আরব হজ্ব ২০২০ হজ্জযাত্রীদের প্রথম দল গত ২৪ জুলাই বিকালে সৌদি আরবের কাসিম অঞ্চল থেকে জেদ্দা কিং আব্দুলাজিজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছেছে। ⁣এ সময়⁣ হজ গ্রহণ করতে, তাদের পাপ ক্ষমা করতে, তাদের প্রার্থনা পূর্ণ কবুল করতে এবং আমাদের দর্শকদের এবং বিশ্বজুড়ে মুসলমানদের শীঘ্রই ওমরাহ ও হজ পালনের সুযোগ দেওয়ার জন্য আল্লাহর দরবারে দোয়া করে আগাত হাজীদের স্বাগত জানিয়েছেন দেশটির হজ্ব কতৃপক্ষ।
এদিকে, সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহবিষয়ক মন্ত্রী মুহাম্মদ সালেহ বিন তাহের বেনতেন আল নিউজ চ্যানেলে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, হজযাত্রীদের নিরাপত্তায় সরকার সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে। এ সময় তিনি হজযাত্রীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানানোর পাশাপাশি দেশটির নাগরিকদেরও বিধিনিষেধ মেনে চলার অনুরোধ জানান।
আজ ২৫ জুলাই শনিবারের মধ্যে সৌদি আরবের অন্যান্য প্রদেশের হজযাত্রীরা মক্কায় এসে পৌঁছাবেন। তাঁরা গত রোববার থেকে হোম কোয়ারেন্টাইন শুরু করেন। হজ পালনের জন্য মক্কায় প্রবেশের প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে তারা নির্দিষ্ট হোটেলে আরো চার দিনের কোয়ারেন্টিন পালন করবেন। এরপর ৮ জিলহজ বাদ ফজর রওনা হবেন মিনায়। মিনাযাত্রার মধ্য দিয়ে শুরু হয় হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা। ১২ জিলহজ পর্যন্ত মিনা, মুজদালিফা, আরাফাতের ময়দান ও মক্কায় হজের বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে হয়।
সৌদি আরবে বসবাসকারী বিভিন্ন দেশের অধিবাসী ও দেশটির নাগরিকদের সমন্বয়ে এবার ১০ হাজার মানুষ হজ পালন করবেন। সীমিত মানুষের অংশগ্রহণে হজ অনুষ্ঠিত হলেও সার্বিক প্রস্তুতিতে কোনো ঘাটতি নেই সৌদি কর্তৃপক্ষের। মাশায়েরে মোকাদ্দাসায় (হজের বিধিবিধান পালনের বিশেষ স্থানগুলো) প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে সেসব স্থান হজযাত্রীদের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত রাখা হয়েছে। জীবাণুমুক্ত করা হয়েছে হাজিদের চলাচলের এলাকাগুলো।
মসজিদে হারামেও বিশেষ দল গঠন করা হয়েছে। হজের সময় সাড়ে তিন হাজার সদস্যের বিশাল একটি দল থাকবে মসজিদে হারামের তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে। মসজিদে হারাম পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, মসজিদের হারামের সার্বিক যান্ত্রিক ত্রুটি দেখাশোনা করা এবং অপবিত্রতা থেকে রক্ষার জন্য এই দল গঠন করা হয়েছে। তারা ২৪ ঘণ্টা মসজিদে হারামে কর্মরত থাকবেন এবং মসজিদের হারামকে জীবাণুমুক্ত রাখার চেষ্টা শুরু করে মসজিদে হারাম কর্তৃপক্ষ।
মসজিদে নামিরা ঘিরে আগামী ৩০ জুলাই বৃহস্পতিবার আরাফাত ময়দানে অনুষ্ঠিত হবে পবিত্র হজ্ব।