মুহাম্মদ মনজুর আলম,চকরিয়া :

কৃত্রিম বাতাসে দাউ দাউ করে জ্বলছে আগুন। সে আগুনেই তৈরি করা হচ্ছে নানা রকম লৌহজাত সরঞ্জাম সামগ্রী । শান দেওয়া চাপাতি , দা, বটি, ছুরি, চাকু সারি সারি করে সাজিয়ে রাখা হয়েছে কামার’র দোকান গুলোতে। চারদিকে টুং-টাং-টিং-টাং শব্দে চলছে কোরবানি ঈদের পশু জবাইয়ের সরঞ্জাম তৈরি ইস্পাত-লোহার কাজ।

আগামী পহেলা আগষ্ট পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপিত হবে। আর পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার কামার’র দোকান গুলো এখন এমনই ব্যস্ততা।

মুসলমানদের অন্যতম প্রধান এ ধর্মীয় উৎসব এলে সরগরম হয়ে ওঠে উপজেলার বাজারগুলোর সবগুলো কামার’র দোকান। কোরবানির পশু কেনার পাশাপাশি কামারদের তৈরী দা, ছুরি-চাকু , বটি ও চাপাতি কেনার ধুম পড়ে যায় । উপজেলার কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, আগুনের তাপে ঘাম ঝরছে কামারদের শরীর। ইস্পাত কঠিন হাত দু’খানা বার বার আঘাত করছে লোহার বস্তুতে। হাতুড়ির শক্ত আঘাতে ক্ষনে ক্ষনে বদলে যাচ্ছে লোহার ধরন। তৈরি হচ্ছে মাংস কাটার নানা রকম সরঞ্জাম ।

কামার’র দোকানে এ দৃশ্য নতুন নয়। তবে কোরবানির ঈদকে ঘিরেই বাড়ে তাদের কর্মব্যস্ততা। কামারদের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রতিবছর কোরবানির ঈদকে ঘিরেই তাদের ব্যবসা জমে। এ সময় ধার -ঋণ করে হলেও লৌহজাত সামগ্রী (ইস্পাত-লোহা) কিনে এনে মাংস কাটার সরঞ্জাম তৈরি করা হয়।

দরদামের বিষয়ে তারা জানান, এখন কামার’র দোকানে প্রতি পিস ছুরি ৭০-১০০ থেকে দেড় শ’ টাকা, চাপাতি ২০০-২৫০, দা ১৫০-৩০০, বটি দা ৪০০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে লোহা থেকে ইস্পাতের তৈরী সরঞ্জামের দাম অনেক বেশি। আর চাপাতিতে লৌহজাত সামগ্রী বেশি লাগে, তাই কেজি হিসেবে বিক্রি করেন।

উপজেলার লক্ষ্যারচর বাজারের কামার দুলাল কর্মকার সহ আরও ৭-৮ জন কর্মকার জানান, রেডিমেড বিক্রির পাশাপাশি অর্ডার অনুযায়ী পশু জবাইর সরঞ্জাম তৈরি করে বিক্রি করেন তারা। কাজের ওপর নির্ভর করে মেরামতে খরচ । কেজি প্রতি খরছ পড়ে ১৫০-৩০০ টাকা পর্যন্ত।

দুলাল কর্মকার আরো জানান, মাংস কাটার বা চামড়া ছাড়ানোর ছোট-বড় ৮ থেকে ১০ ধরনের ছুরি-চাকু তৈরি করে থাকেন তারা। প্রকারভেদে ৭০ টাকা থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করে থাকেন সেসব। এছাড়া, বটি দা ৪০০ থেকে ১০০০-১৩০০ টাকা দামে বিক্রি করেন। পশু জবাইয়ের মাঝারি ছুরি ২৫০-৬৫০, বড় ছোরা ৫শ’ টাকা নেয়া হয় বলে জানান ।