সিবিএন ডেস্ক: 
৮ আগস্ট থেকে সারাদেশের সব কওমি মাদ্রসা খোলার ঘোষণা দিয়েছে আল-হাইআতুল উলয়া লিল-জামি‘আতিল কওমিয়া বাংলাদেশ। যদিও কওমি মাদ্রাসা খোলার বিষয়ে অনুমতি দেয়নি সরকার। মাদ্রাসা খোলার জন্য সরকারের অনুমতি পাওয়ার আগেই বৈঠক করে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে আল-হাইআতুল উলয়া লিল-জামি‘আতিল কওমিয়া বাংলাদেশ। যদিও ধর্ম মন্ত্রণালয় বলছে, সরকারের অনুমতি ছাড়া খোলার কোনও সুযোগ নেই।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (২৩ জুলাই) আল-হাইআতুল উলয়া লিল-জামি‘আতিল কওমিয়া বাংলাদেশের কার্যালয়ে সংগঠনের কো-চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুল কুদ্দুছের সভাপতিত্বে স্থায়ী কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সিদ্ধান্ত হয়, করোনা পরিস্থিতির কারণে প্রায় সাড়ে চার মাস বন্ধ থাকার পর আগামী ৮ আগস্ট থেকে সারাদেশের সব কওমি মাদ্রাসা খুলবে। সংস্থার দফতর সম্পাদক অছিউর রহমানের স্বাক্ষরে গণমাধ্যমে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

যদিও এর আগে দেশের সব হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও হিফজখানা ১২ জুলাই থেকে চালুর অনুমতি দিয়েছে সরকার। গত ৮ জুলাই ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে জারি করে। সেখানে বলা হয়, এসব মাদ্রাসাকে স্বাস্থ্য অধিদফতরের স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করতে হবে। করোনাভাইরাসের মহামারির কারণে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মতো হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও হিফজখানার কার্যক্রমও বন্ধ হয়ে যায়। এসব মাদ্রাসার নিরবচ্ছিন্ন অধ্যবসায়ের আবশ্যকতার কথা উল্লেখ করে কার্যক্রম চালুর বিষয়ে দেশের আলেমরা আবেদন করেন। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও হিফজখানা খোলার অনুমোদন দেওয়া হয়।

এরআগে গত ১ জুন দেশের কওমি মাদ্রাসায় ছাত্র-ছাত্রী ভর্তির কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করে অফিস খোলার অনুমতি অনুমতি দেওয়া হয়।

জানা গেছে, আল-হাইআতুল উলয়া লিল-জামি‘আতিল কওমিয়া বাংলাদেশের কার্যালয়ে কো-চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুল কুদ্দুছের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মাওলানা মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস, মাওলানা নূরুল ইসলাম, মাওলানা আব্দুল হামীদ ( মধুপুর পীর), মাওলানা আবু তাহের নদভী, মুফতি শাসমুদ্দীন জিয়া, মাওলানা মুহিব্বুল হক, মাওলানা এনামুল হক, মুফতি আরশাদ রাহমানী, মাওলানা মাহমুদুল আলম, মুফতি মোহাম্মাদ আলী, মাওলানা ইয়াহইয়া মাহমুদ, মাওলানা সাজিদুর রহমান, মুফতি ফয়জুল্লাহ, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা মুছলেহ উদ্দিন রাজু, মুফতি জসিমুদ্দীন, মুফতি নূরুল আমীন, মাওলানা উবায়দুর রহমান মাহবুব, মাওলানা মোশতাক আহমদ, মাওলানা নূরুল হুদা ফয়েজী, মাওলানা বাহাউদ্দীন যাকারিয়া, মাওলানা উসামা আমীন, মাওলানা তাসনীম প্রমুখ।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আল-হাইআতুল উলয়া লিল-জামি‘আতিল কওমিয়া বাংলাদেশের দফতর সম্পাদক অছিউর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বৈঠকে দেশের খ্যাতনামা আলেমরা ছিলেন। সবার মতামতের ভিত্তিতে মাদ্রাসা চালুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। আর সংশ্লিষ্টরা এরমধ্যে আলাপ আলোচনা করবেন। সরকার এখনও অনুমতি দেয়নি। তবে যেহেতু ৬ আগস্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি শেষ হচ্ছে, তাই এ বিষয় বিবেচনা করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’

সরকার অনুমতি না দিলেও মাদ্রাসা খুলবে বলে জানান অছিউর রহমান।

ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নূরুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনবেক বলেন, ‘কওমি মাদ্রাসা খোলার বিষয়ে কোনও অনুমতি দেওয়া হয়নি। যেহেতু সরকারের নির্দেশে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে, ফলে খুলতেও সরকারের অনুমতি লাগবে। সরকারের অনুমতি ছাড়া খোলা যাবে না।’