নিজস্ব প্রতিবেদক:
কক্সবাজার সদর ঝিলংজার সদর উপজেলা গেইট এলাকার চায়ের দোকানদার ফোরকান আহমদ (৩৫) ১০০০ ইয়াবাসহ আটকের সপ্তাহের মাথায় আটক হয়েছে তার বড় বোন শাহনাজ বেগম শানু।
বুধবার (২২ জুলাই) দিবাগত রাতে ঝিলংজা উত্তর হাজিপাড়াস্থ নিজ বাড়ি থেকে তাকে আটক করে সদর মডেল থানার পুলিশ।
এ সময় তাক কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা পাওয়া গেছে বলে স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে। তবে, উদ্ধারকৃত ইয়াবার সঠিক পরিমাণ জানা যায় নি।
শাহনাজ বেগম শানু টেকনাফ নাজিরপাড়ার বাসিন্দা ও চিহ্নিত মাদক কারবারি মুহাম্মদ ইউনুছের স্ত্রী। ১৮০০০ ইয়াবাসহ আটক হয়ে মুহাম্মদ ইউনুছ ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে। ছেলে শামসু ৫০০০ ইয়াবাসহ আটক হয়ে জেলা কারাগারে বন্দি। আরেক ছেলে আয়াস সদর থানার মামলা নং-৬৮, জিআর- ৭৩৩/১২ এর আসামী।
শাহনাজ বেগম শানুর বিরুদ্ধে তিনটি মামলা রয়েছে। সেখানে দুইটির তথ্য পাওয়া গেছে। একটি চট্টগ্রামের বাকলিয়া থানা, জিআর-৩২৬/১৬। অপরটি ডিএমপি মীরপুর মডেল থানা, জিআর-৮২/১৯।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি (অপারেশন) মাসুম খান শাহনাজ বেগম শানুকে আটকের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে সম্ভাব্য জায়গায় অভিযান চলবে। এরপর বিস্তারিত জানানো হবে।
খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, শাহনাজ বেগম শানুর স্বামী মুহাম্মদ ইউনুছের পরিবারের অনেকেই মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত। ক্রসফায়ারে নিহত টেকনাফের নাজিরপাড়ার বাসিন্দা জিয়াউর রহমান তার ভাতিজা। নুর মোহাম্মদ প্রকাশ মংক্রিও নিকটাত্মীয়।
গত ১৩ জুলাই দিবাগত রাত সাড়ে ১১ টার দিকে হাজী আশরাফ আলী ফিলিং স্টেশন এলাকা থেকে শ্যালক ফোরকান আহমদকে ১০০০ ইয়াবাসহ আটক করেছিল সদর মডেল থানা পুলিশ।
এসব সিন্ডিকেটে শ্রমিক লীগ নেতা মুহাম্মদ আবদুল্লাহর সম্পৃক্ততার কথা এলাকাবাসীর অভিযোগে বারবার ওঠে আসছে।
বিশেষ করে, সেজ ভাই ফোরকান আহমদ আটকের পর থেকে তাদের পরিবারের মাদকের সম্পৃক্ততা পুরো এলাকায় সাওর হয়ে যায়। যারা এতদিন ভয়ে মুখ খোলেনি তারাও সাহস করে বলতে শুরু করেছে। নানা মাধ্যমে সংবাদকর্মী ও প্রশাসনকে মাদক কারবারের বিষয়ে তথ্য দিচ্ছে। এই সিন্ডিকেটটির বিরুদ্ধে ১০টির অধিক মামলা আছে বলে স্থানীয় সুত্র মারফত জানা গেছে।
১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে জেলাকে মাদকমুক্ত করার ঘোষণায় পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেনসহ পুলিশ প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছে স্থানীয় মানুষগুলো।
তাার এই সময়ের মধ্যে কঠোর অভিযানের মাধ্যমে এলাকাকে মাদকমুক্ত করার আহবান জানিয়েছে এলাকাবাসী।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছে, খাদ্য গুদামের পরিত্যক্ত ভবন, উপজেলা কম্পাউন্ডের ভিতরের পরিত্যক্ত ভবন, পানবাজার কেন্দ্রিক শক্তিশালী একটি মাদক সিন্ডিকেট গড়ে ওঠে। যেই সিন্ডিকেটের সঙ্গে হাত রয়েছে স্থানীয় প্রভাবশালী ও অভিজাত পরিবারের কয়েকজনের।
এলাকাবাসীর ভাষ্য মতে, ইমরান, ফয়সাল, রবি, হারুন, বাবু, আব্বাস, বান্ডাইয়া, বার্মাইয়া আবদুর রহিম মাদক সিন্ডিকেটের অন্যতম সদস্য। যাদের প্রত্যেকের নামে ৩ থেকে ৭টি পর্যন্ত মামলা রয়েছে। এসব অপরাধীদের চায়ের দোকানের আড়ালে ব্যবহার করে ফোরকান। তার মূল আশ্রয়দাতা ছোট ভাই আবদুল্লাহ। এই উঠতি সিন্ডিকেটটি ভেঙ্গে দিতে না পারলে হাজীপাড়াসহ আশপাশে ইয়াবার বিস্তার ঘটবে বলে আশঙ্কা এলাকাবাসীর। তবে, প্রথমবারের মতো ইয়াবা সিন্ডকেটে হানা দেয়ায় পুলিশ প্রশাসনকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছে এলাকাবাসী। মাদক নির্মূূলে তারা প্রশাসনকে যে কোন ধরনের সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছে।