বলরাম দাশ অনুপম, কক্সবাজার :
পর্যটন নগরী কক্সবাজারের খুরুশকুলের উদ্বাস্তু ৬শ পরিবারে বইছে আনন্দের জোয়ার। কারণ দীর্ঘদিন পর স্থায়ী বাসস্থান পেয়েছেন তারা। নামমাত্র মূল্যে বিশেষ আশ্রয়ণ প্রকল্পে সুউচ্চ ভবনের নির্ধারিত ফ্ল্যাটে এখন থেকে বসবাস করবেন তারা। তাই বিশেষ আশ্রয়ণ প্রকল্প উদ্বোধনকে ঘিরে বৃহস্পতিবার সেখানকার মানুষের মধ্যে ছিলো বাড়তি উন্মাদনা। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে জলবায়ু উদ্বাস্তুদের জন্য নির্মিত আশ্রয়ণ প্রকল্প উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাড়তি উন্মাদনার অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রীকে আবেগভরা কণ্ঠে গান শোনান সেখানকার আঞ্চলিক গানের সমাজ্ঞি বৃদ্ধা বুলবুল আক্তার। বাংলা গানের একটু প্যারোডি করে প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে গানে খুশি হন বঙ্গবন্ধুকন্যা। তাই তো গান শেষে হাততালি দিয়ে বুলবুল আক্তারকে ধন্যবাদ জানান সরকারপ্রধান।

উদ্বোধন শেষে জলবায়ু উদ্বাস্তু ৬০০ পরিবারের কাছে ফ্ল্যাটের চাবি হস্তান্তর করেন প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানের মাঝে খুরুশকুলের বুলবুল আক্তার গান গেয়ে শোনান। যেখানে তিনি প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। বুলুবুল আক্তার গানে গানে বলেন, ‘যদি সুন্দর একখান মুখ পাইতাম/যদি সুন্দর একখান মুখ পাইতাম/মহেশখালীর পানের খিলি তারে বানাই খাবাইতাম…।’ মূল গানের কথার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে বুলবুল আক্তার আরও গাচ্ছিলেন-‘ফুলের মালা দিলে হাতে/আরার নেত্রী আঁরে ফড়াইতাম/ও ভাই, শেখ হাসিনারে ফড়াইতাম।’ বৃদ্ধা বুলবুল আক্তারের গানটি গাওয়া শেষ হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাততালি দিয়ে তাকে উৎসাহ দেন। এ সময় ভিডিও কনফারেন্সের দুই পাশে থাকা সবাই আনন্দ করতে থাকেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কক্সবাজারের বিখ্যাত শুঁটকি দিয়ে ভাত খাবেন বলে জানান। খুরুশকুলে বিশেষ আশ্রয়ণ প্রকল্প দেখতে যাবেন জানিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘সেখানে যাব আর শুঁটকি দিয়ে ভাত খাব।’

এর আগে প্রধানমন্ত্রী তার উদ্বোধনী বক্তব্যে বলেন, এই প্রকল্পের মাধ্যমে খুরুশকুলের চেহারা বদলে যাবে। এখানে স্কুল, মসজিদ, মাদরাসা, গির্জা ও প্যাগোডা গড়ে উঠবে। সরকারপ্রধান আরও বলেন, দেশের একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না, মুজিববর্ষে এটা হলো আমাদের প্রতিশ্রুতি। আজ ৬০০ উদ্বাস্তু পরিবারকে ফ্ল্যাটের চাবি হস্তান্তর করা হলো। বাকি যারা আছেন তারাও পর্যায়ক্রমে ফ্ল্যাট পাবেন। শেখ হাসিনা আশ্রয়ণ প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ে ২০টি পাঁচ তলা ভবনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। সেখানে বিমানবন্দর সম্প্রসারণের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত জলবায়ু উদ্বাস্তু ৬০০ পরিবার নতুন ফ্ল্যাট পেল। কক্সবাজার সদরের খুরুশকুল ইউনিয়নের বাঁকখালী নদীর তীর ঘেঁষা বৃহৎ এ প্রকল্পে পর্যায়ক্রমে ৪ হাজার ৪৪৮টি পরিবার ফ্ল্যাট পাবে।