খুরুশকুল বিশেষ আশ্রয়ন প্রকল্প উদ্বোধন অনুষ্ঠান

৭ মিনিটের বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি কাড়লেন সিরাজুল মোস্তফা

প্রকাশ: ২৩ জুলাই, ২০২০ ০২:১১ , আপডেট: ২৩ জুলাই, ২০২০ ০২:১৬

পড়া যাবে: [rt_reading_time] মিনিটে


ইমাম খাইর:
জলবায়ু উদ্ভাস্তুদের জন্য কক্সবাজার সদরের খুরুশকুলে নির্মিত বিশ্বের সর্ববৃহৎ আশ্রয়ন প্রকল্প উদ্বোধন অনুষ্ঠানে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা বলেছেন, বাংলাদেশের জনগণের বিশ্বাস এবং সাহসের ঠিকানা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আপনার চৌকস নেতৃত্বে, আপনার সাহসিকতায় দুর্যোগ মোকাবেলা করে বারবার আমরা বিজয়ী হয়েছি। সমুদ্রের উপকূলে আমাদের বসবাস।
আমরা কক্সবাজারবাসী ঝড়-তুফান অমান্য করে আপনার নেতৃত্বে সাহসিকতার সাথে কাজ করে যাচ্ছি।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি কক্সবাজার। বাঁকখালী নদীর তীরে আপনার সুন্দর এবং অনন্য চিন্তা ধারা, একটি সফল সৃষ্টি এই আশ্রয়ণ প্রকল্প।
সুন্দর চিন্তা ভাবনা ছিল বলে বলেই এই ধরণের সুন্দর পরিকল্পনা করা আপনার পক্ষে সম্ভব হয়েছে। উপকারভোগীরা সবাই আনন্দিত। কক্সবাজারবাসী খুবই আনন্দিত ও কৃতজ্ঞ।
তিনি বলেন, এখানে পর্যটকরা আসবে। বাঁকখালীর উপকূল দিয়ে যখন পর্যটকেরা কুতুবদিয়া-মহেশখালী পর্যটন স্পটে যায়, তখন তারা এই সুন্দর স্থাপনা দেখে বিমোহিত হয়। এই ধরণের চিন্তাধারা একমাত্র জননেত্রী শেখ হাসিনার মাথা থেকে আসছে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, এখানকার মেগা প্রকল্পগুলো সঠিকভাবে চলছে। প্রশাসন, রাজনীতিবিদ ও স্থানীয়দের নিয়ে আমরা সুন্দরভাবে কাজ করে যাচ্ছি।
জীবন জীবিকার জন্য আপনি যে সংগ্রাম করে যাচ্ছেন; আমাদের যে নির্দেশনা দিচ্ছেন, সেভাবে চলছি। আমরা দশে মিলে কাজ করছি। কোভিট-১৯ মোকাবেলায় সমন্বিত কাজ করেছি। জনমত সৃষ্টি করতে পেরেছি। সে কারণে করোনা সংক্রমণ আমরা অনেকটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছি। এখন জীবনযাত্রা স্বাভাবিকভাবে চলছে। কোন মানুষের মধ্যে আহাজারি, হাহাকার নেই। আমরা সবকিছু দেখে শুনে কাজ করে যাচ্ছি।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, সেনাবাহিনী অত্যন্ত যত্নের সাথে আশ্রয়ণ কেন্দ্রগুলো করছে। সবকিছু সুন্দর, সাবলীলভাবে আমরা সম্পন্ন করতে পেরেছি। সবাই আমাদেরকে সহায়তা করেছে। পরামর্শ দিয়েছে।
রোহিঙ্গা শিবির পর্যন্ত সম্পূর্ণ নিরাপদ রয়েছে। আপনার ইন্সট্রাকশন মতে জেলা প্রশাসনসহ আমরা সবাই মিলে বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। তা বিদেশিরাও দেখছে। সুন্দর ব্যবস্থাপনায়া আপনার নেতৃত্বে কাজ করতে পেরে আমরা সফল।
আপনি যা নির্দেশ দেন সে মতে যদি আমরা অনুসরণ করি; অনুভব ও বাস্তবায়ন করি, তাহলে প্রতিটি ক্ষেতে আমরা সফল হবো।
কিন্তু দুর্ভাগ্য, আপনি আমাদের নেত্রী। আপনি আমাদেও নেতা। আপনি চিন্তা ভাবনায়-কাজকর্মে অনেক দূর এগিয়ে গেছেন। আমরা আপনার সাথে এগিয়ে যেতে পারছি না। এটাই আমাদের ব্যর্থতা।
আমরা যদি আপনার কথা মতো এগিয়ে যেতে পারি, তাহলে প্রতিটি ক্ষেতে সফলকাম হবো।
৭ মিনিটের বেশী সময় ধরে এডভোকেট সিরাজুল মোস্তফার বক্তব্য মনোযোগ সহকারে শুনুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শেষে ‘আমরা এগিয়ে যাব, এগিয়ে যাব’ বলে প্রধানমন্ত্রী তাকে ধন্যবাদ জানান।
বৃহস্পতিবার (২৩ জুলাই) সকাল ১১ টা ২০ মিনিটের দিকে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে কক্সবাজারের এই আশ্রয়ণকেন্দ্রটি উদ্বোধন করেন।
এ সময় জাফর আলম এমপি, আশেক উল্লাহ রফিক এমপি, সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি, কানিজ ফাতেমা আহমদ এমপি, প্রকল্প পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মাহবুব হোসেন, চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার এবিএম আযাদ, সেনাবাহিনীর দশম পদাতিক ডিভিশনের জিওসি এবং এরিয়া কমান্ডার মো. মাঈন উল্লাহ চৌধুরী, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কর্ণেল (অব.) ফোরকান আহমদ, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন, কক্সবাজার জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ চৌধুরী, পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান, সাবেক এমপি এথিন রাখাইন, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কায়সারুল হক জুয়েল, খুরুশকুল ইউপি চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিনসহ প্রশাসন, সামাজিক, রাজনৈতিক ও সুশীল সমাজের ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
গত ১৪ জুলাই লটারির মাধ্যমে নির্বাচিত ১৯ টি পরিবারকে বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠানে চাবি হস্তান্তর করা হয়। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে প্রথমিকভাবে ৬০০ পরিবারকে নির্ধারিত ফল্যাট বুঝিয়ে দেয়া হবে।
মোট ২৫৩ একর জমির প্রকল্পে পাঁচতলা বিশিষ্ট ১৩৯ টি ভবনে পুনর্বাসন করা হচ্ছে ৪৪০৯ টি পরিবার। ২০২৩ সালে পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ হবে।
৫ তলা বিশিষ্ট ভবনের দ্বিতীয় তলা থেকে পঞ্চম তলা পর্যন্ত প্রত্যেক তলায় ৮টি করে ৪৫৬ বর্গফুট আয়তনের মোট ৩২টি করে ফ্ল্যাট রয়েছে। প্রত্যেকটি ভবনের নিচতলা উম্মুক্ত রাখা হয়েছে।
১৯৯১ সালের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ে উদ্বাস্তু হওয়া লোকজনের জন্যই এই প্রকল্প।
খুরুশকুল আশ্রয়ণ প্রকল্পে যাদের পুনর্বাসিত করা হচ্ছে তারা সবাই কক্সবাজার পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডের কুতুবদিয়া পাড়া, সমিতি পাড়ার বাসিন্দা।