বলরাম দাশ অনুপম :
উখিয়ায় রাজনৈতিক দলের সাইনবোর্ড ব্যবহার করে চলছে ইয়াবা পাচার। করোনা সংকটে আগের চেয়ে বেড়েছে ইয়াবা পাচার। করোনা সংক্রমন ঠেকাতে আইন শৃংখলা বাহিনী যখন ব্যস্ত সময় পার করছে ঠিক সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে অনেকটা নিরাপদ ভাবে ইয়াবা ক্রয়-বিক্রয়ের কাজটি নির্ধিদায় করে যাচ্ছে সংঘবদ্ধ ইয়াবা পাচারকারী সিন্ডিকেট। আর এই ইয়াবা ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে নিরাপদ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে রাজনৈতিক দলের সাইনবোর্ড।
বিশেষ করে উখিয়া উপজেলা যুবলীগ আটকে আছে ইয়াবার মাঝেই। ইতোমধ্যে এই উপজেলা যুবলীগের শীর্ষ নেতা থেকে শুরু করে কর্মী পর্যন্ত আটক হয়েছে ইয়াবার চালান নিয়ে। সর্বশেষ গত সোমবার (১৩ জুলাই) র‌্যাবের হাতে ১০ হাজার ইয়াবা ও এক সহযোগিসহ আটক হয়েছে উখিয়া উপজেলা যুবলীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক এবং পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান নুরুল আবছার চৌধুরী।
শুধু উপজেলার শীর্ষ নেতা নয় ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড নেতারাও ইয়াবার চালান নিয়ে ধরা পড়েছে। উখিয়া উপজেলা যুবলীগের নেতারা একের পরে এক ইয়াবা নিয়ে আটকের ঘটনায় উখিয়া যুবলীগের কর্মকান্ড নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। দলের পরিচয় ব্যবহার করে প্রভাব খাটিয়ে উখিয়ার যুবলীগের নেতারা ইয়াবা ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ছে বলে স্থানিয়রা।
জানা যায়-গত ১৩ জুলাই উখিয়া উপজেলা যুবলীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ও পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান নুরুল আবছারকে বালুখালী পূর্ব পাড়াস্থ তার নিজ বাড়ির সামনে থেকে ১০ হাজার ইয়াবা, বেশ কয়েকটি ব্যাংক চেক ও এক সহযোগিসহ আট করে কক্সবাজারস্থ র‌্যাব-১৫ এর সদস্যরা।
এর আগে উখিয়া উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি হানিফ ছিদ্দিকীকে ইয়াবা মামলায় গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। গ্রেপ্তারকৃত যুবলীগ নেতা হানিফ উখিয়ার রাজাপালং ইউনিয়নের পূর্ব ডিগলিয়াপালং গ্রামের মৃত আবু ছিদ্দিকের পুত্র। এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন উখিয়া থানার উপ-পরিদর্শক প্রভাত কুমার কর্মকার।
তিনি জানান- উখিয়ার পূর্ব ডিগলিয়া পালং এলাকায় র‌্যাব অভিযান চালিয়ে ২২ হাজার ইয়াবা নিয়ে সৈয়দ আলমসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। উক্ত মামলায় যুবলীগ নেতা হানিফকে পলাতক আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয়। এছাড়া রাজাপালং ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি কুতুপালং এর নুর মোহাম্মদ মিজান ২০ হাজার ইয়াবাসহ চট্টগ্রামের চন্দনাইশ থানায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছে।
উখিয়া উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ইমাম হোসেন জানান-কোন মাদক ব্যবসায়ীর স্থান যুবলীগে হবে না। যারাই এই মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইতোমধ্যে হানিফ সিদ্দিকীকে দল থেকে বহিস্কার করা হয়েছে বলে স্বীকার করে তিনি বলেন-নুর মোহাম্মদ মিজান যুবলীগের কেউ নয় আর নুরুল আবছার চৌধুরীর বিষয়ে জেলার সাথে আলাপ আলোচনা করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উখিয়া উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মুজিবুল হক আজাদ বলেন-উপজেলা যুবলীগের যেসব নেতাকর্মী ইয়াবা ব্যবসা করেছে কিংবা আইন শৃংখলা বাহিনীর হাতে আটক হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তাছাড়া ইয়াবাসহ আটক নুর মোহাম্মদ মিজান এক সময়ে যুবলীগে ছিল বলে তিনি স্বীকার করেন। তবে তাকে কয়েক বছর আগে তাকে বহিস্কার করা হয়েছে।
কক্সবাজার জেলা যুবলীগের সভাপতি সোহেল আহমদ বাহাদুর জানান-মূলত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কিছু ষড়যন্ত্র চলছে। এসব ষড়যন্ত্রের কবলেও যারা আটক হয়েছে তারাও থাকতে পারে। তবে সাংগঠনিক ভাবে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। যদি আসলেই তারা মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত থাকে যাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়নি তাদের বিরুদ্ধে শীঘ্রই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।