ইমাম খাইর:

দেশীয় শিল্প ধ্বংস করে লবণ আমদানিতে আবারো সক্রিয় হয়ে উঠেছে সেই পুরনো শক্তিশালী সিন্ডিকেটটি। তারা ইতোমধ্যে পরিকল্পনা নিয়েছে- যে কোন মূল্যে মন্ত্রণালয়কে ম্যানেজ করবে, বিদেশী লবণ দেশে ঢুকাবেই। অথচ, দেশে লবণের কোন ঘাটতি নেই। যা আছে তা দিয়ে আগামী লবণ মৌসুমও অতিক্রম হবে।

বিসিক সুত্রে জানা গেছে, বর্তমানে লবণ মজুদ আছে ১০ লাখ ৩৫ হাজার ৩৬৪ মে.টন।

এ বছর লবণ উৎপাদন হয়েছিল ১৫ লাখ ৭০ হাজার মে. টন। গত বছরের উদ্বৃত্ত ছিল ৪ লাখ ২২ হাজার মে. টন।

প্রায় সাড়ে ১৮ লাখ চাহিদার বিপরীতে দেশে লবণ মজুদ আছে ২০ লাখ ১২ হাজার মে. টন।

সব মিলিয়ে মোট লবণ উদ্বৃত্তের পরিমাণ ১ লাখ ৬২ হাজার মে. টন। চার মাস পরের নতুন মৌসুম শুরু হবে। এই মৌসুমে লবণের ঘাটতি নেই।

তথ্যগুলো রবিবার (১৯ জুলাই) সকালে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের সমন্বয় সভায় উপস্থাপন করেন বিসিক কক্সবাজার অফিসের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মুহাম্মদ হাফিজুর রহমান।

তিনি জানিয়েছেন, মোট ৫৭ হাজার ৭২২ একর জমিতে এই মৌসুমে লবণ উৎপাদন হয়েছে। চাষির সংখ্যা ২৮ হাজার ৭৯১ জন।

ডিজিএম জানান, লবণের ন্যায্য মূল্য না থাকা সত্ত্বেও চাষিদের মাঠে নামানোর চেষ্টা ছিল তাদের। তাদের পক্ষ থেকে চাষিদের সর্বোচ্চ উৎসাহ দেয়া হয়েছে। সেভাবে চাষিরাও মাঠে নেমেছেন। বৈরী আবহাওয়াতেও লবণ উৎপাদনে সক্রিয় ছিল চাষিরা। বর্তমানে  মাঠে পর্যাপ্ত লবণ জমা আছে। কোন সংকট নেই।

লবণচাষি বাঁচাও পরিষদের সভাপতি সাজেদুল করিম জানান, দাম না পাওয়ায় ১৫ লাখ মে. টনের উপরে লবণ অবিক্রিত রয়েছে গেছে। অনেক মিলেও লবণ রয়েছে। কোন সংকট নেই।

নির্ভরযোগ্য সুত্রে জানা গেছে, কক্সবাজারের আমদানিকারক সিন্ডিকেটের সদস্যরা ইতোমধ্যে ঢাকায় অবস্থান করছে। ঢাকাকেন্দ্রিক আমদানি কারকদের সাথে গোপন বৈঠকে কলাকৌশল ঠিক করেছে। মন্ত্রণালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করতে বড় অংকের বাজেটও করেছে তারা।

আমদানিকারকদের টার্গেট, বিদেশী লবণ দেশে ঢুকানোর অনুমতি নিতে যত টাকাই লাগুক, তারা দিবে। তবু ম্যানেজ করে ছাড়বে। বিসিকের রিপোর্ট তারা পাত্তাই দিচ্ছে না। দেশের স্বার্থের চেয়ে নিজেদের পকেটেই তাদের কাছে মূখ্য।

লবণ চাষিসহ সংশ্লিষ্টদের অভিমত, আমদানির সুযোগ দিলে দেশীয় শিল্প ধ্বংস হবে। আগামী মৌসুমে চাষিদের মাঠে নামানো যাবে না।