সিবিএন ডেস্ক:
চীনের তৈরি করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) ভ্যাকসিন বাংলাদেশে পরীক্ষামূলক প্রয়োগের অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদ (বিএমআরসি)। ফলে এই ভ্যাকসিনটির তৃতীয় ধাপের ট্রায়াল হতে যাচ্ছে বাংলাদেশে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছন বিএমআরসি পরিচালক ডা. মাহমুদ-উজ-জাহান।

তিনি  বলেন, নিজেদের তৈরি ভ্যাকসিনের বাংলাদেশে পরীক্ষা করার অনুমতি চেয়েছিল চীন। এ বিষয়ে গঠিত জাতীয় কমিটি নীতিগতভাবে তা অনুমোদন দিয়েছেন।

তিনি জানান, প্রাথমিকভাবে সরকারি সাত-আটটি কোভিড হাসপাতালে এই ভ্যাক্সিন প্রয়োগ করার কথা রয়েছে।

চীনের করোনা ভ্যাকসিনের তৃতীয় ধাপের এই ট্রায়ালের জন্য আন্তর্জাতিক উদারাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশকে (আইসিডিডিআর,বি) অনুমোদন দিয়েছে বিএমআরসি।

এ বিষয়ে ডা. মাহমুদ বলেন, ‘আইসিডিডিআর,বি বাংলাদেশে চীনের একটি ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করার অনুমতি চেয়েছে। নিয়ম অনুসারে কোনো ট্রায়ালের জন্য বিএমআরসি নীতিগত অনুমোদন দেয়। আমরা সবকিছু পর্যালোচনা করে অনুমোদন দিয়েছি।’

এ বিষয়ে আইসিডিডিআর,বি-কে এখনও আনুষ্ঠানিক চিঠি দেয়া হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, সিদ্ধান্ত যেহেতু হয়েছে, শিগগিরই তাদেরকে চিঠি দেয়া হবে।

এর পরের প্রক্রিয়া কী হবে জানতে চাইলে বিএমআরসি পরিচালক বলেন, ‘এরপর আইসিডিডিআর, বি ঠিক করবে তারা কীভাবে পরবর্তী পদক্ষেপে যাবেন। প্রাথমিকভাবে সাত-আটটি সরকারি কোভিড হাসপাতালের সঙ্গে তারা আলোচনা করে কীভাবে পরবর্তী ধাপে ট্রায়াল শুরু করবেন, তাদের পার্টিসিপেন্ট সিলেকশন কীভাবে হবে তা নির্ধারণ করবেন। এরপর ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর, স্বাস্থ্য অধিদফতরের কাছ থেকে বিভিন্ন ধাপের অনুমোদন বা অনুমতি নিতে হবে।

জানা গেছে, ইতোমধ্যে চীন উদ্ভাবিত করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। চলছে তৃতীয় ধাপের পরীক্ষার প্রস্তুতি। বড় আকারে তৃতীয় ধাপের ভ্যাকসিন পরীক্ষা চালাতে ইতোমধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুমোদন পেয়েছে চীনের সরকারি প্রতিষ্ঠান চায়না ন্যাশনাল বায়োটেক গ্রুপ (সিএনবিজি)। পাশাপাশি বাংলাদেশেও এর পরীক্ষা চালানোর আগ্রহ দেখায় দেশটি।

চীনে নতুন করে করোনায় সংক্রমিত রোগী কমে যাওয়ায় এখন দেশের বাইরে সম্ভাব্য ভ্যাকসিন পরীক্ষার জন্য জায়গা খুঁজছে দেশটি। বর্তমানে করোনা সংক্রমণের হার ঊর্ধ্বগতিতে থাকায় বাংলাদেশকে এর উপযুক্ত মনে করছে চীন।

ভ্যাকসিনের প্রাপ্যতা নিশ্চিতে চীনের ভ্যাকসিনের ট্রায়ালকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে বাংলাদেশ। এ বিষয়ে অবহিত আছেন সরকারের ঊর্ধ্বতন এমন এক কর্মকর্তা জাগো নিউজকে বলেছিলেন, ‘দেখুন, ঘনবসতিপূর্ণ দেশ হিসেবে করোনার সংক্রমণের ভয় আমাদের বেশি। আবার মাসের পর মাস সবকিছু বন্ধও রাখা যাবে না। এমন অবস্থায় এই করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন অত্যন্ত জরুরি। বাংলাদেশ শুধু নয়, পুরো বিশ্ব এর অপেক্ষায়।’

এর আগে বাংলাদেশে আসা চীনের প্রতিনিধি দলকে বিদায় জানানোর সময় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছিলেন, ‘চীন করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ করছে। তাদের কাজে অগ্রগতিও অনেক। এ ভ্যাকসিন আবিষ্কার হলে সবার আগে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাংলাদেশকে পাঠাবে বলে চীন সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়। চীনের করোনা সংক্রমণের সময় বাংলাদেশ যেভাবে পাশে ছিল, চীন সরকার সে উদারতার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের জন্য সবার আগে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেবে।’