মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :

কক্সবাজার শহরের মাঝিরঘাটস্থ বাঁকখালী নদী থেকে খালাসের সময় এক কোটি ইয়াবা লুটকারীর মূলহোতা কক্সবাজার শহরের মিজানকে বেনাপোল সীমান্তে আটক করা হয়েছে। কক্সবাজারে তোলপাড় সৃষ্টি করা এই ঘটনার নায়ক মিজানকে শুক্রবার ১৭ জুলাই দিবাগত রাতে বাংলাদেশে প্রবেশের পথেই বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে আটক করে।

বিষয়টি বিশ্বস্ত সুত্র সিবিএন-কে নিশ্চিত করেছেন।

এ বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি ইয়াবার এই বিশাল চালানটি লুটের পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ফাঁকি দিয়ে মিজান ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সেই ইয়াবাগুলো বিভিন্ন জনের কাছে বিক্রি করে।

এ বিষয়ে কক্সবাজার শহরজুড়ে আলোচনার ঝড় ওঠলে ১৫ ফেব্রুয়ারি ভোরে মিজান কক্সবাজার শহরের বিমানবন্দর রোডস্থ একটি গণ পরিবহনে করে চট্রগ্রাম চলে যায়। ওই সময় চট্রগ্রাম শহরে মিজান ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অবস্থান করার পর একইদিন রাতেই বিমানযোগে সে ভারত পালিয়ে যায়। পরে মিজানের মোবাইলের সিডিএমএস পর্যাবেক্ষণ, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে এবং বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশনের সঙ্গে কথা বলে মিজান দেশের আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বাহিনীকে ফাঁকি দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার খবরটি নিশ্চিত হয় পুলিশ। ভয়ংকর মিজান টেকপাড়া ও আশেপাশের এলাকার মানুষের কাছে এক মুর্তিমান আতংকের নাম।

এক কোটি ইয়াবা লুটের প্রধান হোতা মিজান (৩২) কক্সবাজার শহরের পশ্চিম টেকপাড়ার বাসিন্দা গোলাম মওলা বাবুল প্রকাশ ‘জজ বাবুল’ এর পুত্র। গোলাম মওলা বাবুল কক্সবাজার জেলা জজ আদালতে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী হিসাবে চাকুরীরত অবস্থায় নিজেকে ‘জজ বাবুল’ হিসাবে জাহির করতে করতে সে এখন সবার কাছে ‘জজ বাবুল’ হিসাবে পরিচিত। একজন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারি হয়েও নামের আগে ‘জজ’ শব্দ ব্যবহার করতে পেরে গোলাম মওলা বাবুল এট নিয়ে এখন বেশ গর্ববোধ করেন। তার সন্তান মিজানের বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় এবছরের ২৫ ফেব্রুয়ারী মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৩৬(১) এর ১০(গ)/৪২ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়। যার নম্বর ৮৭/২০২০ ইংরেজি।

এই চাঞ্চল্যকর এক কোটি ইয়াবা লুটের ঘটনার দীর্ঘ ৫ মাস পরে মিজান সড়ক পথে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করার সময় শুক্রবার ১৭ জুলাই দিবাগত রাতে যশোরের বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশ মিজানকে আটক করে এবং বিষয়টি কক্সবাজার জেলা পুলিশকে অবহিত করে।

বিশ্বস্থ সুত্র মতে, শুক্রবার রাতেই কক্সবাজার জেলা পুলিশের একটি দল মিজানকে আনার জন্য বেনাপোলের উদ্দেশ্যে রাওনা দেন। শনিবার বেলা ১ টার দিকে কক্সবাজার জেলা পুলিশের দলটি বেনাপোল পৌছেঁছে।

এদিকে ইয়াবা লুটের পর ওই সময় মিজান পালিয়ে গেলেও তার প্রধান দুই সহযোগী ফিরোজ ও তার সহোদর মোস্তাককে ২৩ ফেব্রুয়ারি ভোরে দুই লাখ ইয়াবাসহ আটক করেছিলো পুলিশ।