এম.মনছুর আলম, চকরিয়া :

কক্সবাজারের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (চকরিয়া সার্কেল) কাজী মোহাম্মদ মতিউল ইসলাম বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনা ধারণ করে বঙ্গবন্ধু সোনার বাংলাদেশ ও ২০৪১সালে উন্নত সমৃদ্ধিশালী দেশ গড়তে পুলিশ নিরলস ভাবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। দেশের জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তায় পুলিশ নিজের জীবন বাজি রেখে নির্বিঘ্নে কাজ করছে। এলাকায় আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ও জনগণের সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছাতে অপরাধ দমনে টেকসই উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন টেকসই নিরাপত্তা।
বুধবার (১৫ জুলাই) দুপুরে চকরিয়া থানা প্রশাসনের আয়োজনে উপজেলার বিএমচর ইউনিয়নের হলরুম মিলনায়তনে বিট পুলিশ কার্যালয় শুভ উদ্বোধন উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য এএসপি মতিউল ইসলাম উপরোক্ত এসব কথা বলেন।
এএসপি আরো বলেন, মানুষকে এখন আগের মতো ভোগান্তি বা হয়রানির শিকার হতে হবে না। বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে আমরাই মানুষের দোরগোড়ায় গিয়ে সেবা পৌঁছে দেবো। মানুষের সমস্যা জানার সঙ্গে সঙ্গে ইউনিয়নে দায়িত্বে থাকা সুনির্দিষ্ট বিট পুলিশ অফিসার তা নিরসন করবেন। আর এ বিট পুলিশ কার্যক্রমের সেবা নিশ্চিতে এবং এলাকার অপরাধ প্রবণতা নির্মূলে পুলিশ ও জনতার সহযোগিতার বিকল্প নেই। সমাজের সকল শ্রেণী পেশার মানুষের সহযোগিতা ছাড়া শুধু আইন প্রয়োগ করে মাদক ও সন্ত্রাস দমন করা যাবে না। আপনারা পুলিশকে পজিটিভলি দেখেন। পুলিশ এখন আগের অবস্থানে নেই, পুলিশের দৃষ্টিভঙ্গি অনেক পরিবর্তন হয়েছে। মাদক, সন্ত্রাস, ইভটিজিং ও জঙ্গিবাদের মতো অপরাধ সম্পর্কে তথ্য দিন, পুলিশ আপনাদের পাশে আছে। এলাকার চিহ্নিত অপরাধী ব্যাক্তি সম্পর্কিত তথ্য পুলিশকে দেওয়া হলে তথ্য দাতার নাম কোন অবস্থায় প্রকাশ করা হবে না। যারা মাদক, চুরি-ডাকাতি, সন্ত্রাসী, দখলবাজি কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত থাকবে তাদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে এবং কোন ধরণের ছাড় দেয়া হবে না।
তিনি এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে বলেন,আমরা জনগণের সহযোগিতা ও আন্তরিকতার কারণে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, ভূমি দখল, চাঁদাবাজি, ইভটিজিং মতো অপরাধ নেই বললেই চলে। তবে একেবারেই ক্রাইম ফ্রি সমাজ চিন্তা করা যায় না। কেউ অপরাধ করলে আমরা তা দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের সনাক্ত করে গ্রেফতার করছি। পুলিশের সাথে জনতার সম্পর্ক সৃষ্টি হলেই এ সমাজ থেকে মাদক, সন্ত্রাস, ইভটিজিংসহ সকল অপরাধ নির্মূল করা সম্ভব।
‘পুলিশ জনতা, জনতাই পুলিশ’ এ প্রতিপাদ্যকে ধারণ করে পুলিশ জনগণের বন্ধু ও সেবক এই কথা গুলো তৃণমূল পর্যায়ে বাস্তবে প্রমাণ করতে চকরিয়া উপজেলায় ১৮টি ইউনিয়নে বিট পুলিশিং কার্যক্রম আরও জোরদার করা হয়েছে। মানুষের দোরগোড়ায় পুলিশের সেবা পৌঁছাতে আইজিপির নির্দেশে প্রতিটি ইউনিয়নে বিট পুলিশ অফিসারের কার্যালয় স্থাপন করা হচ্ছে।
বিএমচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে ও মাতামুহুরী পুলিশ ফাঁড়ির এসআই সিরাজুল ইসলামের সঞ্চলানায় বিট পুলিশ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.হাবিবুর রহমান। তিনি বলেন, প্রতিটি ইউনিয়নে এলাকার আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে, অপরাধ দমনে এবং জনগণকে মানুষের দোরগোড়ায় সেবা পৌছাতে এই বিট পুলিশ কার্যক্রম স্থাপন করা হয়েছে। এলাকার প্রতিটি মানুষ বিভিন্ন ধরণের নানা সমস্যা নিয়ে থানায় যেতো। এখন আর যেতে হবে না। তাছাড়া বিট পুলিশ স্থাপনের কারণে এলাকায় কোন ধরণের অন্যায় ও অপরাধ সংঘটিত হওয়ার সম্ভবনা কমে যাবে। তবে এলাকার অপরাধী যে হউক না কেন আমরা কাউকে ছাড় দেবো না।
বিট পুলিশিং কার্যক্রমে এসময় উপস্থিত ছিলেন, মাতামুহুরী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ (পুলিশ পরিদর্শক) আমিরুল ইসলাম, চকরিয়া প্রেসক্লাবের প্রচার সম্পাদক সাংবাদিক এম.মনছুর আলম, মাতামুহুরী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এস আই ফারুক, বিএমচর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান জিয়াদুল ইসলাম সেলিম, পরিষদের সচিব, ইউপিসদস্যবৃন্দ ও স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণির পেশার ব্যক্তিবর্গ।
উল্লেখ্য, অলোচনা সভার পূর্বে বিএমচর ইউনিয়ন পরিষদের দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষে বিট পুলিশ অফিসারের এ কার্যালয় ফিতা কেটে উদ্বোধন করা হয়।