বলরাম দাশ অনুপম :

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ভেসে আসা শত শত টন বর্জ্যে ও জালের সাথে আটকে পড়েছিল বিভিন্ন প্রকারের সামুদ্রিক প্রাণী। এদের মধ্যে বিশেষ করে সামুদ্রিক কাছিম ও সাপ ছিল উল্লেখযোগ্য। গত শনিবার (১১ জুলাই) রাত থেকে সৈকতের কলাতলী পয়েন্ট থেকে হিমছড়ি পর্যন্ত ভেসে আসে বর্জ্য আটকে পড়া সামুদ্রিক প্রাণী উদ্ধারে ওইদিন রাতেই নেমে পড়েন দরিয়ানগরের কিছু যুবক।

সেভ দ্যা নেচার অফ বাংলাদেশের সাংগঠনিক সম্পাদক ও টীম দরিয়ানগরের সমন্বয়ক বড়ছড়ার সন্তান যুবলীগ কর্মী পারভেজ মোশারফের নেতৃত্বে করোনার মাঝেও জীবে প্রেম করে যেজন সেজন সেবিছে ঈশ^র-মানবতাবাদী ব্যক্তিত্ব স্বামী বিবেকানন্দের এই মূল্যবান বানীটিকে ধারণ করেই সেই প্রাণীগুলোকে উদ্ধার করে সমুদ্রে অবমুক্তের কাজ শুরু করেন ওই যুবকেরা। সে থেকে আজ অবধি বর্জ্যে অপসারন থেকে শুরু করে প্রাণী অবমুক্ত করণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন পারভেজের নেতৃত্বে দরিয়ানগরের ২০ জনের মত যুবক।

তাদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে জেলা প্রশাসন, পরিবেশ অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন সংস্থা। বিপদে পড়ে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা সামুদ্রিক প্রাণীগুলোকে রক্ষায় এগিয়ে আসার জন্য ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও উঠে এসেছে পারভেজের বিভিন্ন সুনাম। মঙ্গলবার বিকেলে বিপদে পড়া সামুদ্রিক প্রাণীর বন্ধু হয়ে কাজ করা পারভেজ জানান-প্রথমে শনিবার রাত ১০টার দিকে সে বিষয়টি জানতে পেরে কয়েকজন এলাকার যুবককে নিয়ে সাথে সাথে সমুদ্র সৈকতের দরিয়ানগর পয়েন্ট থেকে হিমছড়ি পয়েন্ট পর্যন্ত গিয়ে ওইদিন রাতেই ১৩০টির মত কাছিমকে উদ্ধার করে সমুদ্রে অবমুক্ত করে। পরের দিন অর্থ্যাৎ রবিবার জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের উপস্থিতিতে অবমুক্ত করা হয় আরো ৩০টি কাছিম। পাশাপাশি ২টি বিরল প্রজাতির সামুদ্রিক সাপও অবমুক্ত করা হয়।

মূলত দীর্ঘদিন ধরে পরিবেশ নিয়ে কাজ করার কারণে নিজের বিবেকবোধ থেকেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজটি করেছেন বলে জানান পারভেজ। কক্সবাজার নাগরিক আন্দোলনের সদস্য সচিব সাংবাদিক এইচএম নজরুল ইসলাম বলেন-আসলে ঘটনাটি ঘটনার সাথে সাথে পারভেজের নেতৃত্বে যে এলাকার যুবকেরা এগিয়ে এসেছে তারা ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য। কারণ তারা যদি তাৎক্ষনিক এগিয়ে না আসতো তাহলে হয়তো অনেক কাছিম মারা পড়তো। শুধূ তাই সেগুলো পঁচে গিয়ে দুগন্ধের মাধ্যমে পরিবেশ দূষিত হত।