বলরাম দাশ অনুপম :

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ভেসে আসা বর্জ্যগুলো অপসারণ শুরু হয়েছে। সৈকতের কলাতলী পয়েন্ট থেকে শুরু করে দরিয়া নগর ও হিমছড়ি সহ বিভিন্ন পয়েন্টে সোমবার থেকে এসব বর্জ্য অপসারণ শুরু হয়। তবে আগামীকাল বুধবার থেকে বৃহৎ পরিসরে বিভিন্ন সংগঠনের সমন্বয়ে এই অপসারন কাজ চলবে। সে সংক্রান্ত একটি সভা আজ জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে অনুস্টিত হয়েছে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে। এদিকে কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো: নাজমুল হুদা। মো: নাজমুল হুদা আরো বলেন, ‘কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় আমরা বর্জ্যগুলো সৈকত থেকে অপসারণ শুরু করেছি। সোমবার সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে স্থানীয় যুবকদের মাধ্যমে বর্জ্যগুলো অপসারণ করা হচ্ছে। তা আগামী আরো দুইদিন লাগতে পারে।’ সেভ দ্যা নেচার অফ বাংলাদেশের সাংগঠনিক সম্পাদক এম এইচ পারভেজ জানান-স্থানীয় ২০ জনের মত যুবক স্বেচ্ছায় বর্জ্যে অপসারনের কাজ করছে। তাদের এই কাজে জেলা প্রশাসন সহযোগিতা করছে বলেও জানান তিনি।

এদিকে, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে বর্জ্য ভেসে আসার কারণ জানতে রোববার রাতেই ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন।

মো: কামাল হোসেন জানান, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সুগন্ধা থেকে হিমছড়ি পর্যন্ত অন্তত ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ভেসে আসছে নানা ধরণের প্লস্টিক বর্জ্য, মাছ ধরার ছেড়া জাল ও রশি। এছাড়া এসব বর্জের সঙ্গে ভেসে আসে সামুদ্রিক কাছিমসহ কিছু জলজপ্রাণিও। ধারণা করা হচ্ছে, বর্জ্যের দূষণ ও আঘাতে এসব প্রাণির মৃত্যু হয়েছে’।

তিনি জানান, শনিবার রাত থেকে এসব বর্জ্য ও মৃত প্রাণিগুলো ভেসে আসার বিষয়টি আমলে নিয়ে রোববার বিকালে জেলা প্রশাসনের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে একটি দল সমুদ্র সৈকত পরিদর্শনে যান। এর প্রেক্ষিতে সৈকতে বর্জ্যসহ মৃত জলজপ্রাণিগুলো ভেসের আসার কারণ জানতে তদন্তের জন্য প্রশাসন ৫ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে জেলা প্রশাসন ছাড়াও পরিবেশ অধিদপ্তর ও বনবিভাগসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের রাখা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত শনিবার রাত থেকে কক্সবাজার জনশুন্য সমুদ্র সৈকতে ভেসে এসেছে বিপুল পরিমাণ বর্জ্য। রোববার সারাদিন সমুদ্রের জোয়ারের পানিতে এসব বর্জ্য ভেসে এসে কূলে ভিড়েছে। এরমধ্যে প্লাষ্টিক, ইলেক্ট্রনিক্স বর্জ্য ছাড়াও দেশী-বিদেশী মদের খালি বোতল, ছেড়া জাল সহ নানা প্রকার বর্জ্য রয়েছে। সৈকতের ভ্যালি হ্যাচারি থেকে দরিয়া নগর পয়েন্ট পর্যন্ত এসব বর্জ্য ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে।

করোনা সংকটে দীর্ঘ সাড়ে ৩ মাসেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে কক্সবাজার সৈকত সহ এখানকার হোটেল-মোটেল ও সব পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ রয়েছে। কিন্তু জনশূন্য এই সমুদ্র সৈকত সয়লাব হয়ে গেছে বিপুল পরিমাণ বর্জ্যে। বিশেষ করে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের কলাতলী, দরিয়া নগর থেকে শুরু করে হিমছড়ি সৈকত এলাকা পর্যন্ত শনিবার রাত থেকে একের পর এক বর্জ্য ভেসে আসছে। এই বর্জ্যরে মধ্যে শুধু প্লাস্টিক, ইলেকট্রনিক পণ্য নয় ভেসে এসেছে ছেঁড়া নাইলনের জাল ও শত শত বিভিন্ন প্রকারের মদের বোতল। এতে আটকে যেমনি সামুদ্রিক নানা ধরনের প্রাণী মারা পড়ার পাশাপাশি পরিবেশ দূষনের আশংকা করছেন পরিবেশ নিয়ে কাজ করা ব্যক্তিরা। তবে স্থানীয় প্রশাসন বলছেন, সৈকতে ভেসে আসা এসব বর্জ্য কোন হোটেল মোটেলের বর্জ্য হতে পারে না। কারণ, ভেসে আসা বর্জ্যগুলোতে ছেড়া জাল, প্লাষ্টিকের তেলের ড্রাম সহ জেলেদের ব্যবহৃত।