মোঃ ফারুক, পেকুয়া:
পেকুয়া উপজেলায় চুরির অপবাদে মোছাদ্দেক (২৮) নামে এক যুবকের উপর মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন চালিয়েছেন ইউপি সদস্যের নেতৃত্বে একদল দুর্বৃত্ত।

গুরুতর আহত যুবককে পেকুয়া সরকারী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

১২ জুলাই রাত সাড়ে ১০ টার দিকে পেকুয়া উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের বাজার পাড়া গ্রামে উক্ত ঘটনাটি সংঘটিত হয়।

নির্যাতনের শিকার মোছাদ্দেক উপজেলার বারবাকিয়া ইউনিয়নের পূর্ব জালিয়াকাটা গ্রামের মৃত ছাবের আহমদের ছেলে।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গুরুতর আহত মোছাদ্দেক অভিযোগে জানান, তার বাড়ি উপজেলার বারবাকিয়া ইউনিয়নের পূর্ব জালিয়াকাটা গ্রামে। তিনি বিবাহসূত্রে পাশের ইউনিয়ন মগনামার বাজার পাড়া গ্রামে শাশুর বাড়িতে বর্তমানে বসবাস করছেন। স্থানীয় ইউপি সদস্য নুর মোহাম্মদ মাদু প্রায় সময় তার স্ত্রীকে কু প্রস্তাব দিতো। কিন্তু তার স্ত্রী সে প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ইউপি সদস্য প্রায় সময় স্বামী-স্ত্রী দুইজনকেই হুমকি দিতো।

হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, মোছাদ্দেকের শরীরের বিভিন্ন অংশে গুরুতর আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তার একটি পায়ে ধারালো অস্ত্রের আঘাতও রয়েছে।

স্থানীয় এলাকাবাসী ও নির্যাতনের শিকার মোছাদ্দেকের স্ত্রী বেবী আক্তার জানান, ইউপি সদস্য মাদু বিভিন্ন সময় তাকে কু-প্রস্তাব দিত। গতকাল ১২ জুলাই রাত সাড়ে ১০ টার দিকে ঘটনার রাতে স্বামী মোছাদ্দেক বাড়িতে নাই মনে করে ইউপি সদস্য নুর মোহাম্মদ মাদু বাড়িতে ডুকে মারধর করে আহত করার পাশাপাশি ধর্ষণের চেষ্টা করে। ওই সময় তার স্বামী তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে ইউপির সদস্য মাদুর নেতৃত্বে একদল দূর্বৃত্ত স্বামীকে বাড়ী থেকে তুলে অজ্ঞাতস্থানে নিয়ে হাত-পা রশি দিয়ে বেঁধে চুরির অপবাদে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন চালিয়েছে। তার স্বামী চোর নয়। তার স্বামীকে হত্যা করার জন্য পরিকল্পিতভাবেই ইউপি সদস্য ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা অমানবিক নির্যাতন চালিয়েছে। তিনি এ ঘটনায় ইউপি সদস্যের বিচার দাবি করেছেন।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে মগনামা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নুর মোহাম্ম মাদু জানান, মোছাদ্দেক ও তার স্ত্রী খুবই খারাপ প্রকৃতির মানুষ। তারা প্রতিনিয়তই এলাকার নিরীহ লোকজনের কাছ থেকে রাতের আধারে মোবাইল, টাকা কেড়ে নিতো। গতকালও এক বাড়িতে চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়লে মোছাদ্দেককে উত্তম মাধ্যম দিয়েছে জনতা।
ইউপি সদস্য আরো জানান,তিনি কোন নারীকে কু-প্রস্তাব দেননি। নিজেদের অপকর্ম আড়াল করতে মোছাদ্দেকসহ তার স্ত্রী অপপ্রচার শুরু করেছে।

তবে স্থানীয় এলাকাবাসীরা আরো জানান, মগনামা ইউনিয়নের বাজার পাড়া গ্রামে কোন চুরির ঘটনা ঘটেনি। চুরির ঘটনাটি ইউপি সদস্যের সাঁজানো নাটক ছাড়া আর কিছুই নয়।

পেকুয়া থানার ওসি কামরুল আজম জানান, তিনি ঘটনাটি সম্পর্কে শুনেছেন। লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।