বলরাম দাশ অনুপম :
দীর্ঘদিন পর প্রাণচাঞ্চল্য ফিরেছে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে। এখনো সমুদ্র সৈকত ভ্রমনে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও গত কয়েকদিন ধরে ভ্রমণ পিপাসুদের আনাগোনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এদের সবাই স্থানীয় বাসিন্দা। তবে এখনো বন্ধ রয়েছে সব হোটেল-মোটেল থেকে শুরু করে গেস্ট হাউস, কটেজ, পর্যটন বিনোদন কেন্দ্রসহ পর্যটক নির্ভর সব ব্যবসা প্রতিষ্টান।
শুক্রবার (১০ জুলাই) বিকেলে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্ট ও কলাতলী এলাকা সরেজমিনে গিয়ে এই দৃশ্য অবলোকন করা গেছে। এদিকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যেহেতু এখনো নিষেধাজ্ঞা রয়েছে সেহেতু কেউ গেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
জানা যায়-বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারকে ঘিরেই গড়ে উঠেছে এখানকার পর্যটন শিল্প। সারা বছর কক্সবাজার ভ্রমণে এসে সৈকত মাতিয়ে রাখতেন দেশ-বিদেশের হাজারো পর্যটক। পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দারা সকাল-বিকাল ঘুরতে চলে আসতেন এই সৈকতে। কিন্তু করোনা মহামারীর কারনে গত মার্চ মাস থেকে বন্ধ রয়েছে কক্সবাজার সৈকত ভ্রমণসহ জেলার সব পর্যটন কেন্দ্র। সেই থেকে প্রাণহীন ছিল এই সৈকত। তবে সম্প্রতি লকডাউন কিছুটা শিথিল হওয়ায় আবারো সৈকতে বাড়ছে মানুষের আনাগোনা। ফিরছে প্রাণ চাঞ্চল্য।
শুক্রবার বিকেলে সমুদ্র সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে কথা হয় কক্সবাজার শহরের বাহারছড়া এলাকার বাসিন্দা আবুল কাশেম বলেন-আর বন্দি থাকতে ভালো লাগছে না। তাই একটু প্রাণ খুলে শ্বাস নিতে ছুটে এসেছি সৈকতে। একই ভাবে পরিবার নিয়ে এসেছেন কলাতলীর আবু জাফর। তিনি বলেন-অনেক দিন ধরে ছেলে মেয়েরা বাড়ির মধ্যে বন্দী ছিল। এখন লকডাউন কিছুটা শিথিল হওয়ায় তাদের নিয়ে একটু সমুদ্রের মুক্ত হাওয়ায় বেড়াতে এসেছি। এতে কিছুটা হলেও ছেলে মেয়েদের মনে শান্তি জোগাবে।
অন্যদিকে সমুদ্র সৈকতকে ঘিরে যারা জীবন জীবিকা নির্বাহ করতেন তারাও খুশী স্থানীয় পর্যটকের আগমনে। তাদেরই একটি অংশ বীচ ফটোগ্রাফাররা পর্যটকদের সাথে নেমে পড়েছেন সৈকতে। তারা বলছেন অনেকদিন কষ্ট করে সংসার চালিয়েছেন এখন অল্প অল্প করে পর্যটক আসছে তাতে তাদের কোন রকমে সংসার চালানোর পথ হয়েছে।
সৈকতে দায়িত্বরত বীচ কর্মী সাইফুল ইসলাম জানান-সৈকত ভ্রমণের উপর জারি করা নিষেধাজ্ঞা এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রত্যাহার না হলেও গত ১ জুলাই থেকে আস্তে আস্তে সৈকতে মানুষের ভীড় বাড়ছে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোঃ আশরাফুল আফসার শুক্রবার রাতে মুঠোফোনে জানান-এখনো সৈকত ভ্রমণে যে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে তা প্রত্যাহার হয়নি। যারা সমুদ্র ভ্রমনে আসছেন তারা লুকোচুরি করে আসছেন। যারা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাও নেয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।