সিবিএন ডেস্ক:
বেশ কিছুদিন যাবত আঞ্চলিক দলের আধিপত্যের লড়াই অনেকটাই স্তিমিত ছিল পার্বত্য অঞ্চলে। ছোটখাটো কয়েকটি ঘটনা ঘটলেও বড় ধরনের সংঘর্ষ ঘটেনি।

তবে শেষ পর্যন্ত দেশে মহামারি করোনা পরিস্থিতিতেও থামেনি পাহাড়ের সংঘাত। আঞ্চলিক দলগুলোর আধিপত্যের লড়াইয়ে সবশেষ মারা গেছেন ৬ জন। আহত হয়েছেন ৩ জন।

মঙ্গলবার (০৭ জুলাই) সকালে বান্দরবানের রাজভিলা ইউনিয়নের বাঘবাড়ায় এলাকায় অজ্ঞাত অস্ত্রধারীদের গুলিতে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। ঘটনার পর থেকে এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

নিহতরা সবাই পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি এমএন লারমা গ্রুপের নেতাকর্মী। নিহতদের মধ্যে সংগঠনটির শীর্ষ কয়েকজন নেতাও রয়েছেন। তাদের পরিচয় নিশ্চিত করেছে সংগঠনটি।

নিহতরা হলেন—পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি বিমল কান্তি চাকমা (৬৮), উপদেষ্টা কমিটির সদস্য চিংথোয়াইয়াং মারমা ওরফে ডেভিড (৫৬), বান্দরবান জেলা সভাপতি রতন তঞ্চঙ্গা (৫০), পার্বত্য চট্টগ্রাম যুব সমিতির সদস্য রবীন্দ্র চাকমা (৫০), রিপন ত্রিপুরা ওরফে জয় (৩৫) ও জ্ঞান ত্রিপুরা ওরফে দিপন (৩২)। রতন তঞ্চঙ্গা ছাড়া বাকি সবার বাড়ি খাগড়াছড়ির বিভিন্ন উপজেলায়।

এ ঘটনায় আহতরা হলেন—নিরু চাকমা (৫০), বিদ্যুৎ ত্রিপুরা (৩৮) এবং প্রু বা চিং মারমা (২৬)। ঘটনার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতি সন্তু লারমাকে দায়ী করেছে জনসংহতি এমএন লারমা গ্রুপ। তারা বলছে, পরিকল্পিতভাবে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে।

সংগঠনটির বেশ কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সাংগঠনিক কার্যক্রম বৃদ্ধি করার জন্য গত এক মাস ধরে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে একটি দল বান্দরবানে কাজ করছিল। ঘটনার দিন হতাহতরা সবাই বান্দরবান জেলা সভাপতি রতন তঞ্চঙ্গার বাসায় অবস্থান করছিলেন।

সকাল আনুমানিক ৭টার দিকে কয়েকজন নাস্তা সেরে বাইরে বসেছিলেন। অন্যরা মূল ঘর থেকে বেরিয়ে রান্না ঘরে নাস্তা করতে যাচ্ছিলেন। এ সময় দুটি দলে ভাগ হয়ে ১০/১২ জন সন্ত্রাসী এলোপাথারি গুলি করে পালিয়ে যায়।

জনসংহতি সমিতি এমএন লারমা গ্রুপের কেন্দ্রীয় তথ্য ও প্রচার সম্পাদক সুধাকর ত্রিপুরা বলেন, বান্দরবান জেলা কমিটি গঠনের পর সেখানকার নেতাকর্মীদের আহ্বানে সারা দিয়ে আমরা বান্দরবানে সাংগঠনিক কার্যক্রম বৃদ্ধি করার জন্য গিয়েছি। সেখানে আমাদের নেতাকর্মীদের এলোপাথারি গুলি করে হত্যা করা হলো। এটি পরিকল্পনা মাফিক হত্যাকাণ্ড। আগে থেকে ওৎ পেতে থেকে হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডের দায় সন্তু লারমা কোনভাবে এড়াতে পারবেন না।

বান্দরবান পুলিশ সুপার জেরিন আখতার বলেন, ঘটনাস্থল থেকে মরদেহগুলো উদ্ধার করে বান্দরবান সদর হাসপাতাল মর্গে নিয়ে আসা হয়েছে। ময়না তদন্ত শেষে মরদেহগুলো পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এ ঘটনায় কারা জড়িত তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।