সিবিএন ডেস্ক:
বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিগুলো অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিলের জন্য দায়ীদের চিহ্নিত করে প্রতিবেদন দিয়েছে টাস্কফোর্সের কাছে। ঢাকা বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির (ডিপিডিসি) নিজস্ব প্রতিবেদনও জমা পড়েছে। তবে এখনই এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলতে চাইছেন না কেউ। বুধবার (১ জুলাই) বিকালে বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির কাছ থেকে প্রতিবেদন পাওয়ার কথা জানা গেছে। আগামী সপ্তাহের প্রথমেই টাস্কফোর্স এ বিষয়ে সরকারের কাছে প্রতিবেদন দেবে।
এদিকে বিতরণ কোম্পানিগুলোর পৃথকভাবে করা তদন্ত প্রতিবেদনও তাদের হাতে আসতে শুরু করেছে। টাস্কফোর্স সূত্র বলছে, এখন পর্যন্ত বিতরণ কোম্পানি যে তথ্য দিয়েছে তাতে দেখা গেছে ৭৬ হাজার গ্রাহক বাড়তি বিলের জন্য বিতরণ কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। এদের অনেকের বিল ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। তবে এর বাইরেও লাখ লাখ মানুষের বাড়তি বিল এসেছে। যাদের খুঁজে বের করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মার্চ থেকে মে তিন মাসেই গ্রাহকের ব্যবহার অতিরিক্ত বিল করাতে সারাদেশে বিদ্যুৎ বিল নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে। শুরুতে গুরুত্ব না দিলেও মানুষের ভোগান্তি রোধে গত বৃহস্পতিবার একটি টাস্কফোর্স গঠন করে বিদ্যুৎ বিভাগ। সাত দিন সময় দিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার (২ জুলাই) সেই সাত দিন সময় শেষ হচ্ছে।
টাস্কফোর্সের প্রতিবেদনের অবস্থা জানতে যোগাযোগ করা হলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক টাস্কফোর্সের এক সদস্য বলেন, এখনও সব কিছু চূড়ান্ত হয়নি। মাঠ পর্যায় থেকে তথ্য পেতে একটু বেশি সময় লেগে যাওয়াতে সাত দিনের মধ্যে হয়তো প্রতিবেদন দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
টাস্কফোর্স সূত্র বলছে, শুধু একবারের জন্য নয় চিরতরে গ্রাহকের এই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। বিতরণ কোম্পানির বিরুদ্ধে বাড়তি বিল দিয়ে গ্রাহক হয়রানি করার অভিযোগ পুরানো। এমন কোনও পদ্ধতির কথা চিন্তা করা হচ্ছে যাতে ভবিষ্যতে গ্রাহক হয়রানি নিরসন করা যায়। এজন্য দায়ীদের জবাবদিহিতার আওতায় কিভাবে আনা সম্ভব তার একটি উপায় খোঁজা হচ্ছে।
পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহম্মদ হোসেইন বলেন, আমরা বিতরণ সংস্থাগুলোর কাছ থেকে প্রতিবেদন আনতে শুরু করেছি। এখনও এসব চূড়ান্ত নয়। সব কোম্পানি যে একেবারে চূড়ান্ত কথাই লিখেছে তা আমরা ভাবছি না। তাই তাদের প্রতিবেদন পাবার পর আমরা যাচাই-বাছাই করবো। গ্রাহকদের সঙ্গে প্রয়োজনে কথা বলবো। বিতরণ কোম্পানিগুলোর কাছে যে গ্রাহকরা বিলের সমস্যা নিয়ে গিয়েছিল সেখানে তারা কেমন আচরণ করেছেন, বিল ঠিক করে দিয়েছেন নাকি ওই বিলই ঠিক আছে বুঝিয়ে দিয়েছেন তা খতিয়ে দেখা হবে। তিনি বলেন, এটি সময় সাপেক্ষ কাজ। প্রতিদিন কাজ করছে কমিটির সদস্যরা। দ্রুত গুছিয়ে আনা যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
ওই প্রতিবেদনগুলোর মধ্যে কোন সংস্থার বিরুদ্ধে অতিরিক্ত বিলের অভিযোগ বেশি জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখনই হলফ করে বলা সম্ভব নয়। তবে গ্রাহকের তুলনায় আরইবিতে অভিযোগ কম। অন্যদিকে ঢাকার দুই বিতরণ সংস্থা ডিপিডিসি ও ডেসকোর বিরুদ্ধে অভিযোগ বেশি বলে তিনি জানান।
এদিকে জানা যায়, ঢাকার বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিও (ডিপিডিসি) নিজস্ব তদন্ত শেষ করেছে। বুধবার শেষ বিকেলে ওই তদন্ত প্রতিবেদন প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আজ আমরা প্রতিবেদন দিয়েছি। অতিরিক্ত বিল আসা ১৮ হাজারের প্রায় সবগুলোই সমাধান করা হয়েছে। তবে এর বেশি কিছু জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন তিনি।
জানতে চাইলে ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ান বলেন,আমি প্রতিবেদন হাতে পেয়েছি। খুলে দেখিনি। কাল এ বিষয়ে বলতে পারবো।