মোঃ নেজাম উদ্দিন:
মহামারী করোন ভাইরাসের কারনে সারা বিশ্ব যখন থমকে গেছে এর বাইরে নেই আমাদের প্রিয় বাংলাদেশও। এরই মধ্যে দেড় লাখ ছাড়িয়ে গেছে করোনা রোগী আমাদের দেশে। মৃত্যুও সংখ্যাও প্রতিদিন আমরা শুনতে পাই। শহরের লকডাউন,রেডজোন,সব মিলিয়ে শহরের মানুষ আজ অসহায়। আমিও তার ব্যতিক্রম নই। শহর থেকে আমার গ্রামের বাড়ি ৪০মিনিটের পথ।গত ঈদে যখন বাড়িতে গেলাম তখন শহরে রেডজোন পড়ে যাওয়াতে বেশ কিছুদিন গ্রামে ছিলাম। গ্রামের সবুজ অরন্য আমাকে সবসময় বিমোহিত করে। আমি চেষ্টা করি শুধু আমার পরিবার নয় আমার পাশেরজন বা প্রতিবেশীদের নিয়ে সুন্দর জীবন যাপনে ।
আমি আগেই বলেছি সবুজ বনায়ন আমার ভালো লাগার তাই আমাদের ইউনিয়নে দায়িত্বরত বনবিভাগের সাথে কথা বলে এলাকায় ১০ হেক্টর সামাজিক বনায়নের করার জন্য দায়িত্বরত বাঘখালী রেঞ্জ কর্মকর্তাকে অনুরোধ করি । তিনি আমার কথা মাথায় রেখে সামাজিক বনায়নের কাজ শুরু করে আমাদের এলাকায়। যার সুফল পাবে এলাকার অসহায় দরিদ্র পরিাবার।
আমার গ্রামে তেমন কোন কাজ নেই তাই আমিও আমার কিছু পরিত্যাক্ত জায়গায় নিজের ও সমাজের জন্য অক্সিজেন ফ্যাক্টরী নামক সবুজ বনায়নে হাত দিলাম।
আমার মা এলাকার বিশিষ্ট জমিদার পরিবার মুন্সি বাড়ির সন্তান। আমার নানাজান হাজী মোঃ হোসন তার চার মেয়েকে ১৭৩২নং খতিয়ানের ১১একর ৩শতক জমি থেকে কিছু মসজিদ ও কবরস্থানের জন্য ওয়াকফ্ করে বাকি জমি আমার মা ও খালাদের ভাগ করে দেন। সেই সুবাধে আমি মায়ের জমি দেখাশুনা করি। চিন্তা করলাম ঐ জমিতে কিছু বনায়ন শুরু করবো ।
যেমন চিন্তা তেমন কাজ, ঈদের পরেই শুরু করে দিলাম বনায়নের কাজ। এলাকার কিছু লোক নিয়ে প্রথমে জঙ্গল পরিস্কার করে ঘেরাও করে ফেললাম নির্দিষ্ট জায়গা। কারন ঘেরাও না দিলে চারা নষ্ট করে ফেলে বিভিন্ন প্রজাতির প্রানীরা।
বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ৩ হাজার গাছ জোগাড় করে প্রচন্ড রোদে নিজে শ্রমিকদের সাথে কাজ করে সেই চারা গুলো রোপন করেছিলাম।
আমার চোখে নতুন স্বপ্ন , আমার এই বনায়নে আমি যেমন একদিন উপকার পাবো ঠিক তেমনি গ্রামের লোকেরাও উপকার ভোগ করবে ও সামাজিক বনায়নের অংশ হিসাবে আমি দেশকে সবুজ দেশ গঠনে সহায়তা করতে পারছি। এমন স্বপ্ন আমার মনে উকি দিচ্ছিল। আমার এই মুর্হুতে কিছু টাকা খরচ হলেও আমি দেশের সবুজ বনায়নের জন্য কিছুটা হলেও সহায়তা করতে পেরেছি।
হাজারো এমন স্বপ্ন নিয়ে সেদিন কাজ শেষ করে মাকে বলেছি গাছ রোপণের কথা। তিনি খুশী হয়েছিলেন।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশকে সবুজ বনায়ন করনে হাত দিয়েছেন। তাতে সরকারের বেশ বড় একটি বাজেট রয়েছে। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন বাস্তবায়নে এই সবুজ বনায়ন করেছিলাম দেশ ও জনগনের কল্যানে।
করেছিলাম এজন্য বলছি চারা রোপণের কিছুদিন পর স্থানীয় কিছু সন্ত্রাসী আমার চারাগুলো ভোর সকালে এসে কেটে সাবাড় করে ফেলে। খবর পেয়ে আমি গিয়ে দেখি কোন চারা তারা রাখেনি আমাকে দেখে আমাকে হত্যা করতে এগিয়ে আসে। তাদের হাতে ছিলো দেশীয় অস্ত্র যা আমার কাছে ভিড়িও ফুটেজ রয়েছে। আমি কোন রকম নিজেকে বাঁচিয়ে সরে গেলাম । তারা এলাকার চিহ্নিত ইয়াবা ব্যবসায়ী। যতটুকু জানতে পেরেছি যারা সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে আমার রোপিত চারা কেটে ফেলেছে তাদের এব আপন ভাই ইয়াবাসহ ঢাকায় আটক হয়েছে ও বর্তমানে জেল হাজতে আছে।
যারা চারাগুলো কেটেছে তাদের কথা জমি তাদের! তারা কোর্টে মামলা করেছে দলিল আছে বলছে তাদের। কিন্তু কোনদিন আমাদের সাথে তারা বৈঠকে বসেনি। জমির মাদার খতিয়ান আমার নানাজানের নামে সৃজিত। তাহলে জমি তাদের কিভাবে হয়? যদি তাদের জমি হয়েও থাকে তারা আদালতে মামলা করেছে আদালত ফায়সালা করবে কার জমি। কোন ধরনের আদালতের রায় ছাড়া আমার দখলীয় জমির গাছ এভাবে কেটে সাবাড় করেছেতারা আজও বীর ধর্পে ঘুওে বেড়াচ্ছে। আমাকে বিভিন্ন জনের মাধ্যমে হুমকী দিচ্ছে। আমি আগেও বলেছি ঐ জমিতে গত ৩০বছর আমরা ভোগদখল করে আসছি এরই ধারাবাহিকতায় আমার চারা রোপণ। তারা কিভাবে আমার রোপিত চারা কেটে সাবাড় করে ফেলেছে? আদালতের রায় মানতে আমরা বাধ্য। এই সন্ত্রাসীরা আমার রোপিত চারা কেটে ফেলেছে তাদের কি কোন বিচার হবেনা? আমি একজন সংবাদকর্মী হিসাবে দেশের প্রচলিত আইনে মাননীয় স্বরাষ্টমন্ত্রী, মাননীয় বনমন্ত্রী, মানীয় সাংসদ, জেলা প্রশাসক মহোদয়, পুলিশ সুপার মহোদয় এর কাছে সুবিচার আশা করছি।

মোঃ নেজাম উদ্দিন
জেলা প্রতিনিধি,কক্সবাজার
দৈনিক খোলা কাগজ।

বার্তা সম্পাদক
দৈনিক রূপালী সৈকত
কক্সবাজার।