বিবিসি বাংলা:

আফগানিস্তানে মার্কিন সৈন্যদের হত্যা করলে রাশিয়া তালেবান সংশ্লিষ্ট জঙ্গীদের পুরস্কার দেবার প্রস্তাব দিয়েছিল – এমন এক অভিযোগকে “ভিত্তিহীন” বলে প্রত্যাখ্যান করেছে রাশিয়া।

মার্কিন দৈনিক দি নিউ ইয়র্ক টাইমস এবং ওয়াশিংটন পোস্ট তাদের রিপোর্টে কিছু মার্কিন কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে জানায়, একটি রুশ সামরিক গোয়েন্দা ইউনিট – যারা ইউরোপে কিছু হত্যা প্রচেষ্টার সাথে জড়িত ছিল – তারা গত বছর এই প্রস্তাব দিয়েছিল।

এতে মার্কিন ও নেটোর অন্যান্য দেশের সৈন্যদের হত্যা করলে তালিবান-সংশ্লিষ্ট জঙ্গিদের পুরস্কার দেবার কথা বলা হয়।

যুক্তরাষ্ট্রে রুশ দূতাবাস বলছে, এই দাবির পর তাদের কূটনীতিরদের হুমকি দেবার ঘটনা ঘটেছে।

তালিবান নিজেও রাশ গোয়েন্দাদের সাথে এরকম কোন চুক্তি করার কথা অস্বীকার করেছে।

রিপোর্টের প্রতিবাদে রুশ দূতাবাসের টুইটরিপোর্টের প্রতিবাদে রুশ দূতাবাসের টুইট

তাদের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেন, “আমাদের টার্গেট কিলিং ও গুপ্তহত্যা অনেক বছর আগে চলেছিল এবং তা আমরা নিজেদের সম্পদ কাজে লাগিয়েই করেছিলাম।

তিনি আরো যোগ করেন যে যুক্তরাষ্ট্র ও নেটো পর্যায়ক্রমে সৈন্য প্রত্যাহার ও নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে রাজি হবার পর থেকে তালিবান তাদের ওপর আক্রমণ চালানো বন্ধ করে দিয়েছে।

এমন এক সময় এই রিপোর্ট বেরুলো যখন আফগানিস্তানে ১৯ বছর ধরে চলতে থাকা যুদ্ধ অবসানের জন্য যুক্তরাষ্ট্র একটি শান্তি চুক্তি করার চেষ্টা করছে।

নিউ ইয়র্ক টাইমস বলছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে মার্চ মাসেই এই রিপোর্টের ব্যাপারে জানানো হয়। তবে হোয়াইট হাউস এ কথা অস্বীকার করেছে।

নিউ ইয়র্ক টাইমসের রিপোর্টে নাম প্রকাশ না করা কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে বলা হয়, মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এব্যাপারে সিদ্ধান্তে পৌছেছে যে রাশিয়ার জি আর ইউ নামের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা তার প্রতিপক্ষকে অস্থিতিশীল করতে কোয়ালিশন বাহিনীর ওপর সফল আক্রমণ চালানোর জন্য গোপনে পুরস্কার দেবার প্রস্তাব দিয়েছিল।

তালিবান নিজেও মার্কিন পত্রিকার রিপোর্ট প্র্রত্যাখ্যান করেছেতালিবান নিজেও মার্কিন পত্রিকার রিপোর্ট প্র্রত্যাখ্যান করেছে

পত্রিকাটি লিখেছে, ইসলামপন্থী জঙ্গি বা তাদের সাথে সংশ্লিষ্ট সশস্ত্র অপরাধী গোষ্ঠী এভাবে কিছু অর্থ সংগ্রহ করেছে বলে মনে করা হয়।

যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত রুশ দূতাবাস কিছু টুইটার পোস্টে নিউ ইয়র্ক টাইমসের বিরুদ্ধে ফেইক নিউজ ছড়ানোর অভিযোগ আনে।

হোয়াইট হাউসের একজন মুখপাত্র কেইলি ম্যাকএনানি এ কথা অস্বীকার করে বলেছেন, প্রেসিডেন্ট বা ভাইস প্রেসিডেন্ট কাউকেই এ ব্যাপারে ব্রিফ করা হয় নি।

তবে তিনি বলেন, এই তথ্য ঠিক না বেঠিক তা নিয়ে তিনি কিছু বলছেন না , শুধু বলছেন যে নিউ ইয়র্ক টাইমস প্রেসিডেন্টকে ব্রিফ করার ব্যাপারে যা লিখেছে তা ভুল।

২০১৯ সালে আফগানিস্তানে ২০ জন মার্কিন সৈন্য নিহত হয়, তবে নিউইয়র্ক টাইমস বলছে, ঠিক কোন্ মৃত্যুগুলো সন্দেহের তালিকায় রয়েছে তা স্পষ্ট নয়।

কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে পত্রিকাটি বলছে, এ ব্যাপারে হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল কিভাবে জবাব দেবে তা নিয়ে বিচারবিবেচনা করেছিল – সম্ভাব্য পদক্ষেপের মধ্যে রাশিয়ার ওপর কড়া নিষেধাজ্ঞার আরোপের কথা ভাবা হয়েছিল।

জি আর ইউর যে ইউনিটটি এর সাথে জড়িত ছিল বলে অভিযোগ, তাদের সাথে ইংল্যান্ডে ২০১৮ সালে রুশ ডাবল এজেন্ট সের্গেই স্ক্রিপালকে নার্ভ এজেন্ট প্রয়োগ করে হত্যাপ্রচেষ্টারও সংশ্লিষ্টতা ছিল বলে মনে করা হয়।