গত ১৮ জুন ২০২০ ইং তারিখে দৈনিক আজাদী ও দৈনিক পূর্বকোণ পত্রিকায় প্রকাশিত “কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ট্রাস্টের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন কক্সবাজার -১ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য আলহাজ¦ জাফর আলম এম এ” শীর্ষক বিজ্ঞপিটির প্রতি আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ হয়েছে। বিজ্ঞপ্তি পড়ে জানতে পারি যে, গত ২০ মে ২০২০ তারিখে কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ট্রাস্টের সভা ট্রাস্টি বোর্ডের কথিত চট্টগ্রামস্থ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। এবং সেই সভায় আমাকে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে নতুন ট্রাস্টি জনাব আলহাজ¦ জাফর আলম এমপি সাহেবকে ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান নির্বাচিত করা হয়েছে। স্বভাবতই প্রশ্ন থেকে যায় যে, ২০ মে ২০২০ এর সভার সিদ্ধান্ত প্রায় একমাস পর অর্থাৎ ১৮ জুন ২০২০ ইং তারিখ কেনো প্রকাশ করা হলো? প্রকৃতপক্ষে লরেল মুজিব গংয়ের জালিয়াতির আরো একটি জাজ¦ল্যমান উদাহরণ এই কল্পিত ট্রাস্টি বোর্ডের সভা। গত ২০ মে বুধবার ২৬ রমজান শবে কদরের রাত্রি উদযাপনের পূর্বমূহুর্তে সারাদেশ যখন করোনা মহামারীর কারণে কঠোর লকডাউন চলছে এবং সরকারি নির্দেশেনায় সারাদেশে যখন যে কোন ধরণের মিটিংসহ জমায়েত সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ তখন কী করে বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সভা অনুুষ্ঠিত হয়? তাছাড়া বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সভা আহ্বান করার এখতিয়ার একমাত্র ট্রাস্টি সভাপতির। সেখানে ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতিকে না জানিয়ে সভা আহ্বান করার কোন আইনি সুযোগ নেই। যেখানে এ ধরণের কোন সভাই অনুষ্ঠিত হয়নি সেখানে কাগজে কলমে একটি ভূয়া মিটিং দেখিয়ে ট্রাস্টি চেয়ারম্যান নির্বাচিত করাটা চরম হাস্যকর। প্রস্তাবিত বোর্ড অব ট্রাস্টিজের ভাইস চেয়ারম্যান নামে যেখানে কোন পদই নেই সেখানে ভাইস চেয়ারম্যানের নাম দেখিয়ে একজনকে অন্তর্ভূক্ত করে তার সভাপতিত্বে মিটিং করার কোন সুযোগ নেই। আর তাছাড়া ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য হওয়ার কিছু নিয়ম কানুন রয়েছে। বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য হতে হলে সুনির্দিষ্ট এজেন্ডা পেশ করে আগে সভা আহ্বান করতে হয়। সেই সভায় সদস্য অন্তর্ভূক্ত করার প্রস্তাব পাশ হলে পরবর্তী সভা থেকে তারা ট্রাস্টি সদস্য হিসেবে পরিগণিত হবেন। কিন্তু লরেল মুজিব কাগুজে জালিয়াতির মাধ্যমে এখানে আবারো একটি অপকর্ম ঘটিয়েছে বলে ধারণা করি। প্রকৃতপক্ষে, লরেল মুজিব ট্রাস্টি সেক্রেটারি হিসেবে সীমাহীন অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে বিশ^বিদ্যালয়ের প্রায় পাঁচ কোটি টাকা আত্মসাৎ করার পর লরেল মুজিব গংয়ের বিরুদ্ধে বিশ^বিদ্যালয়ের মহামান্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিয়ুক্ত ট্রেজারার মহোদয় বাদী হয়ে কক্সবাজার সদর থানায় প্রায় তিন কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গত ০২ জুন ২০২০ ইং তারিখ একটি ক্রিমিনাল মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ১। এই মামলা দায়েরের পর লরেল মুজিবের বিরুদ্ধে বিশ^বিদ্যালয়ের স্থায়ী আমানতে প্রায় দুই কোটি টাকা আত্মসাতের প্রমাণ পাওয়া যায়। যার ভিত্তিতে চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশ থানায় আমি বাদী হয়ে অপর সহযোগী আট ট্রাস্টি সদস্যসহ লরেল মুজিবের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করি। যে মামলটি দুর্নীতি দমন কমিশন স্বপ্রণোদিত হয়ে তদন্ত করছে। এই দুটি মামলা দায়েরের পর লরেল মুজিব ও তার স্ত্রী মাহবুবা শিউলি আত্মগোপনে থেকে বিভিন্ন পত্রিকা, অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও তাদের ব্যক্তিগত ফেসবুক টাইমলাইন থেকে বিভিন্ন বক্তব্য ও প্রতিবাদ করে ্আসছে। যেখানে গত ১৭ জুন ২০২০ ইং তারিখ পর্যন্ত তারা নিজেরাই আমাকে বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সভাপতি হিসেবে স্বীকার করে বক্তব্য বিবৃতি দিচ্ছে সেখানে ১৮ জুন ২০২০ ইং তারিখে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে দেখা যায় যে, ২০ মে ২০২০ ইং তারিখ কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সভাপতি হিসেবে সংসদ সদস্য আলহাজ¦ জাফর আলম সাহেবকে নির্বাচিত করা হয়েছে। এই যে জালিয়াতি, জোচ্চুরি, এটা তার প্রথম জালিয়াতি নয়। ইতোপূর্বে পেকুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটিতে সদস্য হিসেবে স্থান পাওয়া পেকুয়া সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মুজিবুর রহমানের সাথে লরেল মুজিবের নামের মিল থাকায় লরেল মুজিব নিজেকে পেকুয়া আওয়ামী লীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য হিসেবে জাহির করে এবং মাননীয় সংসদ সদস্য আলহাজ¦ জাফর আলম সাহেবের সাথে মিটিংয়ে অংশগ্রহণ করে। বিষয়টি জাতীয় পত্রপত্রিকাসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড় সৃষ্টি হলে আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ এমনকি জাফর আলম এমপি সাহেব নিজে বিভিন্ন মাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে লরেল মুজিবের এই জালিয়াতির কথা প্রকাশ করেন। আমরা ধারণা করছি, এমনিভাবে ফৌজদারি মামলা ও দুর্নীতি মামলার আসামী এই লরেল মুজিব গং মাননীয় সংসদ সদস্য আলহাজ¦ জাফর আলম সাহেবকে বিব্রত করতেই এই জালিয়াতির খেলা খেলছেন। আমরা মনে করি জামায়াত শিবিরের দোসর লরেল মুজিবের ঐক্যবদ্ধ কক্সবাজারের আওয়ামী লীগে বিভেদ সৃষ্টি করার একটা সুচতুর ষড়যন্ত্রের বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে এই বিজ্ঞপ্তি। কক্সবাজারবাসীসহ বৃহত্তর চট্টগ্রামের জনগণকে বিনীতভাবে জানাতে চাই যে এইরূপ মিথ্যা ও জালিয়াতিপূর্ণ বিজ্ঞপ্তিতে আপনারা বিভ্রান্ত হবেন না। বিশ^বিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্ট্রিজ এতো ঠুনকো বিষয় নয় যে কারো একজনের জালিয়াতিতে সেটা বাতিল হয়ে যাবে বা কারো একজনের ইচ্ছা অনিচ্ছায় তা পূর্ণগঠন করা যায়। কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দান। কক্সবাজারবাসীকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার। এই বিশ^বিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজ পূর্নগঠন বা কারো অর্ন্তভূক্তি কেবলমাত্র মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় হতে পারে। এ লক্ষ্যে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছেন। এবং অতিশীঘ্রই আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক একটি নির্দেশনা পাবো বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল ব্যক্তিগণ আমাদের আশ^স্ত করেছেন। তাই এরূপ ভূয়া বিজ্ঞপ্তিতে বিভ্রান্ত না হয়ে সম্মানীত কক্সবাজারবাসী, শিক্ষানুরাগী, বিশ^বিদ্যালয়ের অভিবাবকবৃন্দ, শিক্ষার্থীবৃন্দ, শিক্ষক ও কর্মকর্তাবৃন্দকে ধৈর্য্য ধারণ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করার বিনীত অনুরোধ করছি। ইনশাল্লাহ, অতি দ্রুতই কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি দুর্নীতিবাজদের কবল থেকে মুক্ত হয়ে একটি স্বপ্নের বিশ^বিদ্যালয়ে পরিণত হবে।

সালাহউদ্দিন আহমদ সিআইপি
প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান
বোর্ড অব ট্রাস্টিজ- কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি