আবুল কালাম, চট্টগ্রাম:

সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা থাকলে মুক্তিযুদ্ধের মতো বাংলাদেশের করোনাভাইরাস জয় করা সম্ভব হ‌তো বলে মন্তব্য করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, একাত্তরে যেভাবে মানুষ রণাঙ্গণে গিয়ে দেশকে স্বাধীন করেছে ঠিক তেমনি দেশের জনগণ করোনার সঙ্গেও যুদ্ধ করে জিতবে। কিন্তু এজন্য পরিকল্পনা লাগবে। সরকারের প্রস্তাবিত বাজেটে মহামারি মোকাবিলার কোনো পরিকল্পনা নেই।’

শনিবার (১৩ জুন) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে ‘রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্মের’ উদ্যোগে এক অনুষ্ঠানে ইন্টারেনেট যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

অাব্দুল্লাহ অাল নোমান বলেন, ‘মনগড়া বাজেট করা হয়েছে। বাজেটে লুট করার সুযোগ পাচ্ছে। জনগণের কোনো কল্যাণ হবে না।’

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীসহ সকল করোনা আক্রান্তদের রোগমুক্তি কামনা ও যারা করোনায়া মৃত্যুবরণকারীদের মাগফেরাত কামনায় ‘নাগরিক ভাবনা ও আমাদের ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় দেশের আরও কয়েকটি রাজনৈতিক দলের নেতারা বক্তব্য দেন।

অাব্দুল্লাহ অাল নোমান বলেন, ‘করোনা ভাইরাস শুরু হওয়ার পর থেকেই বিএনপির পক্ষ থেকে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করে তা মোকাবিলার আহ্বান জানানো হলেও সরকার আমলে নেয়নি। দেশের বিরোধীদলগুলোর মধ্যে সব দলই একটি সমন্বয়ের দাবি জানিয়েছে। কিন্তু জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার কোনও উদ্যোগ নেয়নি সরকার।’

তিনি অারও বলেন, করোনা মোকাবিলায় সমস্ত দলগুলোকে একসঙ্গে করে সমাধান করতে হবে, টেলিভিশনের তথ্য দিয়ে সমস্যার সমাধান হবে না।দেশের করোনা পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে চলে গেছে, যা জনগণের আয়ত্তের মধ্যে নেই। মানুষ মারা যাচ্ছে, কিন্তু তারপরও সরকারের কোনও চিন্তা নেই।’

অাব্দুল্লাহ অাল নোমান বলেন,‘সরকার কোনো পরিকল্পনা দিচ্ছে না, যা মেনে আমরা এই ভাইরাস থেকে মুক্ত হতে পারি। এই সরকার করোনা থেকে মুক্তির যুক্তিযুক্ত কোনো পরিকল্পনার মধ্যে নেই।এই সরকার একসময় রাতের অন্ধকারে ভোট চুরি করেছে। এখন করোনা সমস্যা নিরসনে একতরফা উদ্যোগ নিয়ে সমস্যা বাড়িয়ে তুলেছে। দেশের জনগণকে জাগিয়ে তোলার প্রচেষ্টা আমরা সরকারের মধ্যে দেখতে পাচ্ছি না।’

তিনি বলেন, ‘আজ মানুষ কত অসহায়– কে কোথায় মৃত্যুবরণ করবে, তা কেউ জানছে না।’

বর্তমান সরকার পক্ষে সম্ভব নয় দেশকে করোনা মুক্ত করা বলে দাবি করে নোমান বলেন, ‘এজন্য প্রয়োজন জাতীয় ঐক্য। তার প্রধান ভূমিকা পালন করবে সরকার। কিন্তু তারা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার পরিকল্পনা তো নেই। বরং বিরোধী দলের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়া কথা বললে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের নেতিবাচক মন্তব্য করে তা ভেস্তে দেয়।’

জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে সভায় ইন্টারনেটে যুক্ত হন বিএনপির সাবেক নেতা কর্নেল (অব.) অলি আহমদ, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক আসিফ নজরুল, ডাকসু ভিপি নুরুল হক। এছাড়াও সভায় উপস্থিত ছিলেন নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহামুদুর রহমান মান্না, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ।