সোয়েব সাঈদ ,রামু :

মাদকাসক্ত ছেলে কর্তৃক মারধর ও লাঞ্চনার শিকার হয়েছে ৭০ বছর বয়সী ব্যক্তি। ভাংচুর করেছেন বসত ঘর ও ঘেরা-বেড়াও। ঘটনাটি ঘটেছে কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের পূর্ব খরুলিয়া নয়াপাড়া এলাকায়। মারধরের শিকার হাজী বশির আহমদ ওই এলাকার মৃত কাছিম আলীর ছেলে।

হাজী বশির আহমদ জানান, তাঁর বড় ছেলে আবদুল মালেক মাদক সেবন করে প্রায়ই তাকে এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের মারধর, হুমকি-ধমকি ও বিভিন্নভাবে লাঞ্চিত করে আসছেন। পৃথকভাবে বাড়িতে বসবাস করলেও প্রায়ই মাদক সেবন করে আবদুল মালেক তার বাড়িতে এসে এমন অপকর্ম চালিয়ে আসছে।

বুধবার (১০ জুন) বিকাল ৪ টায় আবদুল মালেক মাদকাসক্ত হয়ে পিতার বশির আহমদের বাড়ির উঠোনে এসে মাতলামি এবং ঘেরা-বেড়া ও ঘরের দরজা-জানালা ভাংচুর শুরু করে। এসময় বৃদ্ধ বশিদ আহমদ এর প্রতিবাদ জানালে আবদুল মালেক আরো ক্ষিপ্ত হয়ে বৃদ্ধ পিতার গায়ে ঢিল ছোড়ে। এতে জখমপ্রাপ্ত হন বশির আহমদ। এ দৃশ্য দেখে বৃদ্ধ বশির আহমদের অন্যান্য ছেলে-মেয়ে এগিয়ে এসে তাকে রক্ষার চেষ্টা চালায়। এসময় হামলাকারি আবদুল মালেকের স্ত্রী-সন্তানরাও বশির আহমদ ও তার পরিবারের সদস্যদের মারধর ও লাঞ্চিত করে।

আগেরদিন ৯ জুন মঙ্গলবার সকাল ৯ টায় এভাবে বশির আহমদ ও তার পরিবারের সদস্যদের মারধর ও নাজেহাল করেন মাদকাসক্ত আবদুল মালেক। ওই সময় আবদুল মালেক বশির আহমদের বাড়িতে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন এবং তাকে নিবৃত্ত করতে আসা স্থানীয় সর্দার ও গন্যমান্য ব্যক্তিদেরও লাঞ্চিত করেন। যার ভিডিওচিত্র ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।

বশির আহমদ জানান, আবদুল মালেক তাকে মারধর করার পর তার নাতি (আবদুল মালেকের ছেলে) আবদুল মজিদ, আবদুর রহমান ও আবদুল কাদের এবং স্ত্রী রাশেদা বেগমও তাকে লাঞ্চিত করে। এসময় বৃদ্ধ বশির আহমদকে বাঁচাতে গিয়ে হামলার শিকার হন স্থানীয় যুবক জাহাঙ্গীর আলম বাদশা, ছালাম মিয়া ও মো. কামাল।

হামলার শিকার বৃদ্ধ বশির আহমদ আরো জানান, ছেলে আবদুল মালেক অনেক আগে থেকেই স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে আলাদাভাবে বসবাস করে আসছেন। সম্প্রতি আবদুল মালেক মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে এবং নিজের বাড়িতেও প্রতিনিয়ত মাদকের আসর বসায়। আবদুল মালেকের ছেলে আবদুর রহমানও এলাকার চিহ্নিত ইয়াবা ব্যবসায়ি। ইয়াবা ব্যবসায় ব্যবহারের জন্য নিজেদের নিজস্ব নোহা গাড়িও আছে তাদের। আবদুল মালেকের ভাই আবদুল মান্নানও দীর্ঘদিন ইয়াবা ব্যবসায়ি জড়িতে ছিলেন এবং চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় ইয়াবাসহ আইনশঙ্খলা বাহনীর হাতে ধরা পড়ে ১ বছর জেলে ছিলেন। সম্প্রতি কারাগার থেকে জামিনে এসে কৌশলে বিদেশে চলে যান।

মাদকাসক্ত ছেলের অত্যাচার থেকে রক্ষা, মাদক ব্যবসা ও মাদকের আড্ডা বন্ধে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন মারধরের শিকার হাজ¦ী বশির আহমদ। এ ব্যাপারে তিনি আইনী ব্যবস্থা নিবেন বলেও জানান।