মোঃ.ফারুক, পেকুয়া:

বিশ্ব মহামারী করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের হার উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় কক্সবাজারের পেকুয়ায় তার প্রাদুর্ভাব রোধে বাজার মনিটরিং কমিটি গঠনপূর্বক করণীয় নির্ধারণে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ন সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

রবিবার (৭ জুন) দুপুর ২টার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাঈকা সাহাদাত এর সভাপতিত্বে উপজেলা চেয়ারম্যান, পেকুয়া থানা প্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তাবৃন্দ, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, পেকুয়া বাজার দোকান মালিক সমিতির সভাপতি-সেক্রেটারি, পেকুয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দ এবং সুশীল সমাজের ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে কমিটি গঠন ও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

কমিটি—–

১.আহ্বায়ক-এডভোকেট কামাল হোসেন, সভাপতি কমিউনিটি পুলিশ, পেকুয়া।

২.সমন্বয়ক – এম বাহাদুর শাহ, চেয়ারম্যান পেকুয়া সদর ইউপি, পেকুয়া।

৩.সদস্য সচিব-আবুল কাশেম, সদস্য সচিব সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি উপজেলা আ’লীগ।

৪.সদস্য-ওসি কামরুল আজম অথবা ওনার পক্ষে মনোনীত থানার কর্মকর্তা, পেকুয়া থানা।

৫.সদস্য-এম আজম খান, সভাপতি কমিউনিটি পুলিশ, পেকুয়া সদর।

৬.সদস্য- এম ইসমাঈল সিকদার, সভাপতি দোকান মালিক সমিতি, পেকুয়া বাজার।

৭.সদস্য শাখাওয়াত হোসেন সুজন, সাঃ সম্পাদক দোকান মালিক সমিতি, পেকুয়া বাজার।

৮.সদস্য-নাসির উদ্দিন বাদশা, সদস্য সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি, উপজেলা আ’লীগ।

৯.সদস্য-মোহাম্মদ ফারুক, সভাপতি রিপোটার্স ইউনিটি পেকুয়া।

১০.সদস্য-মিনহাজ উদ্দিন, সভাপতি পেকুয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতি।

সিদ্ধান্ত সমূহঃ

১. গঠিত কমিটি গৃহীত সিদ্ধান্ত বিষয়ে নিয়মিত তদরাকিসহ আইন অমান্যকারীদের বিষয়ে রেজিষ্টারে লিপিবদ্ধপূর্বক উপজেলা নির্বাহী অফিসার অথবা অফিসার ইনচার্জ পেকুয়াকে অবহিত করতে হবে।

২. কোন অবস্থাতেই ঔষুধ ফার্মেসীতে মূল্য তালিকার চাইতে অধিক এবং ক্যাশ মেমো ব্যতীত কোন প্রকার ঔষুধ বিক্রয় যাবে না। আদেশ অমান্যকারীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

৩. টমটম ৪জন, রিক্সা ২জন, সিএনজি ৩জন করে এবং বাসে সরকারী বিধি অনুযায়ী যাত্রী পরিবহন করতে হবে।

৪. রেষ্টুরেন্ট সমূহে পার্সেল এর মাধ্যমে খাদ্যদ্রব্য বিক্রয় করা যাবে। রেষ্টুরেন্টে বসে খাওয়ার জন্য খাদ্যদ্রব্য বিক্রয় করা যাবে না।

৫.কুলিং কর্ণার, চায়ের দোকান সম্পূর্ণরূপে বন্ধ রাখতে হবে। অন্যতায় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

৬. সচেতনতা এবং করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাব রোধে স্ব স্ব ইউনিয়ন হতে প্রতিদিন বাজার ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় মাইকিংসহ বহুল প্রচারের জন্য স্ব স্ব ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও বাজার পরিচালনা কমিটি যৌথভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

৭. করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাব রোধে পেকুয়া উপজেলার সকল বাজার এবং দোকানপাঠ সমূহ নিম্নবর্ণিত মতে আগামী ২০/০৬/২০ ইং পর্যন্ত বিধি নিষেধ মেনে চলতে হবে। আইন অমান্যকারীর বিরুদ্ধে বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

৮. পেকুয়া থানা এবং ইউনিয়ন ভিত্তিক বাজার কমিটির সাথে গ্রাম পুলিশ সমন্বয় করে গৃহীত সিদ্ধান্ত সমূহের বিষয়ে সহযোগিতা করবে।

কিভাবে চলবে বাজার—–

১. কাচা বাজার, মাংসের বাজার, কাপড় কসমেটিকস, রড় সিমেন্ট, হার্ড ওয়ারসহ অন্যান্য সকল দোকানপাঠ সপ্তাহে প্রতি শুক্রবার আর সোমবার খোলা রাখা যাবে।
সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত।

২. ঔষুধ। ২৪ ঘন্টা খোলা রাখা যাবে। তবে নির্ধারিত মূল্যের অধিক এবং ক্যাশ মেমো ছাড়া ঔষুধ বিক্রয় করা যাবে না।

৩. চাল, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রীর দোকান(মুদির দোকান) প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে।

৪. মাছের বাজার, প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে।

৫. সেলুন, প্রতি শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরিচালনা করতে হবে।

৬. বিকাশ, নগদ, রকেট, আর্থিক লেনদেনকারী প্রতিষ্ঠান-প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে।

সভায় দেশে এবং নিজ উপজেলায় করোনা ভাইরাস সংক্রমণ বিস্তার ঠেকানোর স্বার্থে যেখোন ধরণের সামাজিক সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক, অনুষ্টানসমূহ, খেলাধুলা এবং ধর্মীয় জনসমাগম এড়িয়ে চলার উপর সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হয়। যেখোন ব্যক্তির করোনা উপসর্গ দেখা দিলে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অথবা সদস্যগণের মাধ্যমে তাদের নিজ বাসগৃহে কোয়ারাইনন্টাইনের এর জন্য ব্যবস্থা নেয়ার উপরও গুরুত্বারোপ করা হয়।

এবিষয়ে ইউএনও সাঈকা সাহাদাত বলেন, গত ৭ জুন সভা আহ্বান করে সিদ্ধান্ত সমূহ নেয়া হয়। একই সাথে এ সিদ্ধান্ত অমান্য করলে কঠোর প্রদক্ষেপ নেয়া হবে। উপজেলা প্রশাসন সার্বক্ষিনক বিষয়টি তদারকি করবে।

কমিটির সদস্য সচিব আবুল কাশেম বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ম্যাডাম যে কমিটি গঠন করে দিয়েছে তাদের নিয়ে পেকুয়ার মানুষকে মহামারী করোনা ভাইরাস থেকে রক্ষা করতে কাজ করে যাব। পেকুয়ার সকল মানুষ ও ব্যবসায়ী ভাইদের তা মারার জন্য বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।