আমি খোরশেদ আলম, ঠিকানা : মসজিদ রোড, মধ্য টেকপাড়া, ০৪ নম্বর ওয়ার্ড, কক্সবাজার পৌরসভা – ৪৭০০. আদি ও স্হায়ী বাসিন্দা। পেশায় ব্যাংকার। বর্তমান কর্মস্থল চট্টগ্রামে। তবে জীবনের দীর্ঘদিন কক্সবাজার শহরের ব্যাংকে চাকুরী করার কারনে, সাংস্কৃতিক এবং সামাজিক কর্মকাণ্ডের সাথে সম্পৃক্ত থাকার সুবাদে কক্সবাজার পৌরসভার ৮০% মানুষ ইনশাআল্লাহ নামেই চিনে এটাই আমার সর্বোত্তম  প্রাপ্তি।

শিরোনামের সাথে প্রাসংগিক বিষয়ে আলোকপাত করতে হবে বিধায় আমাকে এভাবে ঠিকানা লিখতে হলো। রমজান মাসের আগে থেকে শুরু হওয়া লকডাউনে বিভিন্নভাবে সরকার ও জনসাধারণ গরীব ও হঠাৎ করে কাজ হারিয়ে বিপাকে পড়া মধ্যবিও মানুষের পাশে বিশেষ করে
খাদ্য সহযোগিতা নিয়ে এগিয়ে আসে। ফলে কক্সবাজার পৌরসভার ১২ টি ওয়ার্ডের মধ্যে আমাদের ৪ নম্বর ওয়ার্ডেও কিছু লোকজন ও
তরুণ জনগোষ্ঠী এগিয়ে আসে সহযোগিতার উদ্যোগ নিয়ে। আমার ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার কারণে পরিবার যেহেতু ঢাকায় আমাকে তথায়
দুই মাসের কাছাকাছি সময় ঢাকায় ঘরে বসে কাটাতে হয়। কিন্তু আমি বসে থাকিনি ফোনে নিজের এলাকার লোকজনের সাথে যোগাযোগ
করি। সেই সময়গুলোতে তারা উল্লেখ করার মত ব্যবস্থাপনা দিয়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় এবং যতদূর জানি তারা সফল হয়। পশ্চিম টেকপাড়া সমাজ কমিটি আছে, সেখানকার সামাজিক নেতৃবৃন্দ ইত্যবসরে কাদের খাদ্য সহযোগিতা দিতে হবে এবং কারা অর্থ সহযোগিতা দিয়ে অংশগ্রহণ করবে মোটামুটি তার একটি তালিকা তৈরি করে।

এবার আসি মসজিদ রোড ও দো-সারি পাড়া এলাকায় সেখানেও অনুরূপভাবে কাজ আরম্ভ হয় এবং সর্বশেষ কালুর দোকান সড়ক থেকে টেকপাড়া স্কুল পর্যন্ত সীমানায় সেখানেও যুবকদের নিয়ে একটা কমিটি আছে তারাও সফলভাবে কাজ সম্পন্ন করে। তারা সর্বমোট দেড়মাসের মধ্যে দুইবার লিস্ট অনুযায়ী খাদ্য সহযোগিতা দিয়ে যায়। ফোনে ও ভিডিও’র মাধ্যমে সবার সাথে আমি যোগাযোগ রাখি এবং সহযোগিতায় ও দিকনির্দেশনা দিয়ে যায়। তাই এই ওয়ার্ডের খাদ্য ব্যবস্থাপনায় অনেকটা উদাহরণ হতে পারে অন্য এগারো ওয়ার্ডের জন্য। খাদ্য না থাকলে এবং বাজার ব্যবস্থাপনার দিক নির্দেশনা না থাকলে লকডাউনে আবারও বিশৃংখলা দেখা দিবে । তাই নিন্মে আমার চিন্তা অনুযায়ী একটি নির্দেশনা উপস্থাপন করেছি ।

করোনা আক্রান্ত হওয়া থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার বর্তমান ব্যবস্থা হিসাবে সাবান দিয়ে বার বার হাত ধোয়া, যতদূর সম্ভব ঘরে থাকা, হোম কোয়ারেন্টাইন, আইসোলেশন, লকডাউন ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। আর্মি ,পুলিশ ,রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ , সামাজিক সংগঠন কেউ শত চেষ্টা করেও মানুষকে ঘরে আটকে রাখতে পারছে না। ফলে এখন করোনা শনাক্ত লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। করোনার কারণে বর্তমানে মানুষের উপার্জন ও খাদ্য নিরাপত্তায় প্রভাব ফেলেছে সর্বাধিক। নিজেরা নিজ উদ্যোগে নিজের জন্যই লকডাউন করবে। এ বোধ যতক্ষণ সবার মাঝে আসবে না ততক্ষণ এই লকডাউন কার্যকর হবে না। অথবা অন্যভাবে বলতে গেলে সরকারকে কঠোর হতে হবে। মানুষের সহযোগিতা একান্ত কাম্য ।
উপায় নেই।
স্বাস্থ্য বিভাগ অসহায়। তাহলে উপায় ?
উপায় প্রতিদিন  প্রতিমূহুর্ত যে আলোচিত হচ্ছে সামাজিক দূরত্ব, ব্যক্তি থেকে ব্যক্তির দূরত্ব, সবাইকে সরকারি ছুটি অব্দি ঘরে থাকা কঠোরভাবে মানতে হবে। কিন্তু তাও মানা হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত খাদ্যের ব্যবস্থাপণা সঠিকভাবে নির্ধারণ করা না হবে? তাহলে উপায়?
একমাত্র সঠিক খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থাপণা সবাইকে ঘরে রাখা নিশ্চত করবে এবং লকডাউন কার্যক্রম সফল হবে। কারণ দেখা যাচ্ছে অনেক সাধারণ লোক তাদের দেওয়া বক্তব্য মতে খাদ্যের জন্য বেরিয়ে আসতে হচ্ছে, খাদ্য সাহায্যের জন্য বেরিয়ে আসতে হচ্ছে কিংবা খাদ্য ভিক্ষার জন্য বেরুতে হচ্ছে। এজন্য যথাযতভাবে করণীয় নির্ধারণ করতে হবে । আরও অনেক৷ বিদগ্ধজন এব্যাপারে তাদের মতামত ব্যক্ত করতে পারে এবং সঠিক মতামত নিয়ে সমস্যা সমাধানে দ্রুত এগিয়ে যেতে হবে। আমার মতামত নিন্মরুপ :

১। নিজের টাকায় অর্থাৎ যাদের ক্রয় ক্ষমতা আছে তারা বাজার করবে কিভাবে ?
২। যারা মধ্যবিত্ত মোটামুটি চলার সক্ষমতা আছে তারা কিভাবে খাদ্য সামগ্রী কেনাকাটা করবে ?
৩। গরীব নিন্মবিত্ত কেউ হাত পাততে পারে, কেউ পারে না কিভাবে খাদ্য দ্রব্যাদি তারা পাবে ?
প্রশ্নগুলোর Solution ক্রমানূসারে নিম্নে দেওয়া হল যা আমার মত অন্যরাও তাদের কাছে সঠিক সমাধান থাকলে সংযুক্ত করতে পারবেন।

১। অধিকাংশ বিওশালী মানুষ ফ্লাট বাড়িতে, সরকারি কোয়ার্টারে কিংবা নিজস্ব বিল্ডিংয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে তাদের করণীয় হল, সবাই সপ্তাহের বাজারের লিস্ট করে এবং ফ্লাট নম্বর, বিল্ডিংয়ের নাম, নিজের নাম এবং মোবাইল নম্বর লিস্টে লিখে টাকা সমেত নিজ নিজ ফ্ল্যাটের দরজার বাহিরে রাখবে এবং ফ্ল্যাটের ম্যানেজার/দারোয়ান কিংবা মনোনীত লোক সব একসাথে করে রাখবে। আর্মি , পুলিশ এগুলো নিয়ে যাবে বাজারে এবং সেখানে দোকানদারদের ভাগ করে দিবে। তারপর দোকানদার প্রয়োজনে মোবাইলে কথা বলে যার যার বাজার সঠিকভাবে পেকেট করে ভেনগাড়ী ,ট্রাকে তোলে দিবে। এজন্য কয়েকজন লোক নিয়োগ দিবে যারা গাড়িতে তুলবে আর বিল্ডিংয়ে পৌঁছে দিবে নিরাপত্তা বাহিনী/ পুলিশ বাহিনীর ব্যবস্থাপনায়। ২। এক্ষেত্রেও উল্লেখিত ব্যবস্থাপনার মত হবে। সকল বাসা বাড়ি থেকে তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধি বাজারের লিস্ট ও টাকা নিয়ে নিরাপত্তা বাহিনী/পুলিচ বাহিনীর দায়িত্বে পৌছে দিবে এবং বাজার চলে আসবে ও যার যার ঘরে পৌঁছে দেওয়া হবে। ৩। এক্ষেত্রে সরকার/দানশীল প্রতিস্টান/ ব্যক্তি থেকে প্রাপ্ত খাদ্য সামগ্রী ওয়ার্ড কমিশনারের দায়িত্বে লিস্ট হিসেবে পেকেট হবে, নিরাপত্তা বাহিনীর দায়িত্বে বাসায় পৌঁছে দেওয়া হবে। ফলে স্বচ্ছতা থাকবে । নিরাপত্তা বাহিনী ওয়ার্ড কমিশনারের সাথে প্রাপ্ত হিসাব মিলিয়ে নিবে। এক্ষেত্রে আরও বলা যায়, ঢাকার দক্ষিণ সিটি করপোরেশন যে Hotline এর মাধ্যমে বাজার ব্যবস্থাপণা করছে তাও অনুকরণীয়।
৪। এবং কক্সবাজার পৌরসভার ০৪ নম্বর ওয়ার্ডের বিগত দিনের অভিজ্ঞতা কাজে লাগানো যাবে আরও মোডিফাই করে। তাই আমি মনে করি সঠিক বাজার ব্যবস্থাপনা একমাত্র অধিকাংশ মানুষকে ঘরে আটকে রাখা যাবে। ত্রানের ধারণা থেকে অবশ্যই বেরিয়ে আসতে হবে, কারণ এাণ শুনামাএ কিছু মানুষ হুমড়ি খেয়ে বেরিয়ে পড়বে ফলে নিজেরা নিজেদের মধ্যে করোনা ছড়াবে এবং এাণ বিতরণকারীদরও আক্রান্ত করবে যা ঈদের আগের প্রতিচ্ছবি যার খারাপ রেজাল্ট প্রতিদিন পাচ্ছি। এরিয়া অনুযায়ী যে সকল প্রয়োজনীয় যথা মাছ,চাল,ডাল,তেল,তরকারি ইত্যাদির বাজার আছে তা সার্বিক নিরাপত্তাসহ আংশিক দোকান ভাগাভাগি করে ক্রমান্নয়ে খোলা রাখতে হবে। যাতে প্রয়োজনীয় জিনিস / খাদ্য সামগ্রী প্রাপ্তিতে ব্যাঘাত না ঘটে ।
জাতির বৃহত্তর স্বার্থে বলতে হচ্ছে, যে কোন মূল্যে সবাইকে ঘরে থাকতে হবে। কারণ করোনা শনাক্ত বেশি বেড়ে গেলে সবাইকে বুঝতে হবে চিকিৎসা ব্যবস্থা তুলনায় অপ্রতুল যা হয়ত আপনারা প্রতিনিয়ত অনুভব করছেন।

খোরশেদ আলম

মধ্য টেকপাড়া, কক্সবাজার।

০১৭১১৪২৩৬৯৩, ০১৮১৩১৪৩২৩৩.