মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :

আগামী শনিবার ৬জুন থেকে পুরো কক্সবাজার পৌরসভায় কঠোরভাবে লকডাউন (Lockdown) কার্যকর করা হবে। বৃহস্পতিবার ৪ জুন সকালে অনুষ্ঠিত কক্সবাজার পৌরসভার ১ নম্বর ও ১২ নম্বর ওয়ার্ড ব্যতীত বাকী ২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ১১ নম্বর ওয়ার্ড পর্যন্ত মোট ১০টি ওয়ার্ডকে ‘রেড জোন’ হিসাবে ঘোষনা করা হলেও এ সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে লকডাউন এর সুবিধার্থে একইদিন রাত্রের সভায় পুরো কক্সবাজার পৌরসভাকে ‘রেড জোন’ ঘোষনা করা হয়েছে।

কক্সবাজার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন এ বিষয়ে শুক্রবার ৫জুন গণ বিজ্ঞপ্তি জারী করবেন।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব -উপসচিব) এবং করোনা সংক্রান্ত ওয়ার্কিং কমিটির আহবায়ক মোঃ আশরাফুল আফসার এর নেতৃত্বে বৃহস্পতিবার ৪জুন রাত্রে অনুষ্ঠিত এক zoom ভিডিও কনফারেন্সে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাঃ শাজাহান আলি, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইন, কক্সবাজার সদর উপজেলার ইউএনও মাহমুদ উল্লাহ মারুফ, সেনাবাহিনীর প্রতিনিধি মেজর আরীফ, কক্সবাজার পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি নজিবুল ইসলাম , কক্সবাজার পৌরসভার প্রতিনিধি ও প্যানেল মেয়র হেলাল উদ্দিন কবির প্রমুখ এই zoom ভিডিও কনফারেন্স উপস্থিত ছিলেন।

সভায় সিদ্ধান্ত হয়, কক্সবাজার পৌরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডে ৩০জন করে স্বেচ্ছাসেবক থাকবেন। তাদেরকে কক্সবাজার সদর উপজেলার ইউএনও মাহমুদ উল্লাহ মারুফ পরিচয় পত্র ইস্যু করবেন। লকডাউন Lockdown চলাকালে শুধু স্বেচ্ছাসেবক ও ইমার্জেন্সী কাজের লোকজন ছাড়া অন্য কেউ বাড়ি ঘর থেকে কোন অবস্থাতেই বের হতে পারবেন না। কক্সবাজার পৌর এলাকায় যাদেরকে বাড়ির বাইরে পাওয়া যাবে, তাদেরকে কঠোর আইনের আওতায় আনা হবে।

এই লকডাউন শনিবার ৬জুন থেকে ১৯জুন শুক্রবার পর্যন্ত প্রাথমিকভাবে বলবৎ থাকবে। প্রয়োজন হলে পরে সিদ্ধান্ত নিয়ে সময় আরো বাড়ানো হবে।

প্রতি সাপ্তাহ রোববার ও বৃহস্পতিবার সীমিত সময়ের জন্য কাঁচাবাজার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রীর দোকান খুলতে পারবে। সেসময় স্বাস্থ্য বিধি মানাতে, সামাজিক ও শারীরিক দুরত্ব বজায় রাখতে প্রশাসনের সেখানেও কঠোর মনিটরিং থাকবে। সাপ্তাহের অন্যান্য সময় সকল মার্কেট, শপিং মল, দোকান, কাঁচা বাজার সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে।

একইভাবে কক্সবাজার পৌর এলাকায় অবস্থিত বাণিজ্যিক ব্যাংক গুলোও প্রতি সপ্তাহ রোববার ও বৃহস্পতিবার সীমিত সময়ের জন্য খেলা থাকবে। কোন প্রকার গাড়ি লিংক রোড থেকে পশ্চিম দিকে শহরে আসতে পারবে না। শহরের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালেও প্রবেশ করতে পারবেনা। লিংক রোড থেকেই সকল গাড়ি ছেড়ে যাবে এবং সেখানে এসে থামবে।

কক্সবাজারে কর্মরত আইএনজিও এবং এনজিও গুলোর কোন গাড়ি লিংক রোড থেকে পশ্চিমে শহরে আসতে পারবে না। শনিবার ৬ জুন থেকে ১৯জুন পর্যন্ত আইএনজিও এবং এনজিও গুলোকে লিংক রোডে তাদের গাড়ি রেখে ও সেখান থেকে গাড়ি ছেড়ে তাদের অফিস করতে হবে।

কক্সবাজার জেলার বাইরের কোন লোককে এই ২ সপ্তাহ কক্সবাজার শহরে প্রবেশ করতে দেওয়া হবেনা।

গণমাধ্যম কর্মী, সংবাদ সংগ্রহকারী, ক্যামেরাম্যান ও সংশ্লিষ্টদের কক্সবাজার প্রেসক্লাব কর্তৃপক্ষ থেকে ইস্যু করা পরিচয় পত্র নিয়ে চলাচল করতে হবে। কক্সবাজার প্রেসক্লাব কর্তৃপক্ষের ইস্যুকৃত পরিচয়পত্র নিয়ে গণমাধ্যমের লোকজন ও সংশ্লিষ্টরা সংবাদ সংগ্রহ ও ভিজিলেন্স টিমের সাথে থাকতে পারবেন।

শহরের মসজিদ গুলোতে কর্তৃপক্ষের নির্দেশিত সংখ্যার বেশী মুসল্লী জামাতে অংশ নিতে ও মসজিদে যেতে পারবেন না। কর্তৃপক্ষের এসব নির্দেশনার বিষয়ে কক্সবাজার জেলা তথ্য অফিস, কক্সবাজার পৌরসভা, কক্সবাজার সদর উপজেলার ইউএনও এবং কক্সবাজার পৌর আওয়ামীলীগ শুক্রবার পুরো কক্সবাজার শহরে মাইকিং করবেন।

ভিডিও কনফারেন্স জানানো হয়, শুধুমাত্র কক্সবাজার পৌরসভায় ২৭৬ জন করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হয়েছে। তন্মধ্যে সর্বনিম্ম হলো- ১ নম্বর ওয়ার্ডে ৫জন এবং ১২নম্বর ওয়ার্ডে ৩ জন। এরমধ্যে কক্সবাজার পৌরসভায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ১০জন।