মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :

কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে আইডিডিসিআর এর ফিল্ড ল্যাবে করোনা ভাইরাস জীবাণু সনাক্ত করার জন্য আজ রোববার ২৪মে থেকে
আরো একটি পিসিআর (পলিমারি চেইন রি-এ্যাকশন) মেশিন চালু করা হয়েছে। জাতিসংঘের অংগ প্রতিষ্ঠান বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এর সহায়তায় কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে দ্বিতীয় পিসিআর মেশিনটি স্থাপন করা হয়েছে।

কক্সবাজারে করোনা ভাইরাসের স্যাম্পল টেস্টের সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত নির্ভরযোগ্য একটি সুত্র সিবিএন-কে এ তথ্য জানিয়েছেন। সুত্র আরো জানায়, আজ ২৪মে রোববার পিসিআর মেশিনটি কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে ফিল্ড ল্যাবরটরীতে চালু করা হয়েছে। তবে দ্বিতীয় মেশিনটিতে আপতত এক শিফটে কাজ করা হবে। আগের পিসিআর মেশিনটিতে যথারীতি ২ শিফটে টেস্ট কার্যক্রম চলবে।

নতুন দ্বিতীয় পিসিআর মেশিনটি চালানোর জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) চিকিৎসক, টেকনিশিয়ান, ল্যাব কর্মী সহ প্রয়োজনীয় জনবলও সংস্থানের ব্যবস্থা করেছে।

কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের ল্যাবে আরো একটি পিসিআর মেশিনের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) কে আরো একটি পিসিআর মেশিনের সরবরাহ দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানালে, WHO এতে সম্মত হয়ে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে দ্বিতীয় পিসিআর মেশিনটি প্রদান করেছে।

কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে দ্বিতীয় পিসিআর মেশিনটি চালু হওয়ায় ২টি মেশিনে একদিনে শুধু এক শিফটে একত্রে ১৯২ টি করোনা ভাইরাসের স্যাম্পল টেস্ট করা যাবে। আর ২শিফটে, ২টি মেশিনে প্রতিদিন ৩৮৪ জনের করোনা ভাইরাসের স্যাম্পল টেস্ট করা যাবে বলে পিসিআর ল্যাব পরিচালনায় অভিজ্ঞ একজন চিকিৎসক জানিয়েছেন।

কক্সবাজার জেলার প্রায় ২৪ লক্ষ নাগরিক, প্রায় ১২ লক্ষ রোহিঙ্গা শরনার্থী রয়েছে। বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি, লামা, আলীকদম উপজেলার ৩ লক্ষাধিক নাগরিক, লোহাগাড়া ও সাতকানিয়া উপজেলার প্রায় ৭লক্ষ নাগরিক সহ মোট প্রায় সাড়ে ৪৬ লক্ষ নাগরিকের জন্য কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের ল্যাবটিতে স্যাম্পল টেস্টের কাজ চলছে। এই ফিল্ড ল্যাবটি ঢাকার আইইডিসিআর এর তত্বাবধানে পরিচালিত হচ্ছে।

কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে আগে থেকেই চালু থাকা প্রথম পিসিআর ল্যাবটি রোহিঙ্গা শরনার্থীদের ডিপথেরিয়া রোগ নির্ণয়ের জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এর অর্থ সহয়াতায় ২০১৮ সালে স্থাপন করা হয়েছিলো। এই ল্যাবটিতে গত ২এপ্রিল থেকে কক্সবাজার জেলা সহ পাশ্ববর্তী এলাকার করোনা ভাইরাসের স্যাম্পল টেস্ট করা শুরু হয়। প্রথম দিকে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের এই ল্যাবে স্যাম্পল জট না থাকলেও এখন প্রতিদিন ‘পজেটিভ’ রোগী বেশি সনাক্ত হচ্ছে। আবার এসব পজেটিভ রোগীদের সাথে সম্পৃক্ত থাকা সকলের শরীরের কন্ট্রাক স্যাম্পল টেস্ট করতে গিয়ে ল্যাবের শুধু একটি পিসিআর মেশিনে তা আর সম্ভব হয়নি। ফলে গত ৭/৮ দিন ধরে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের ল্যাবে স্যাম্পল জট শুরু হয়েছে। দ্বিতীয় পিসিআর মেশিনটি চালু হওয়ায় এ স্যাম্পল জট আর খুব একটা থাকবে না বলে জানান উক্ত সুত্র। তবে প্রতিদিন করোনা পজেটিভ রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকায় তাদের সাথে সম্পৃক্তদের কন্ট্রাক্ট স্যাম্পল টেস্টের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেওয়ায় প্রতিদিন মাঠ পর্যায় থেকে ৪শতাধিক স্যাম্পল টেস্টের জন্য কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের ল্যাবে জমা হয় বলে জানান সুত্রটি।