মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :

কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে করোনা ভাইরাস জীবাণু সনাক্ত করার জন্য আরো একটি পিসিআর (পলিমারি চেইন রি-এ্যাকশন) ল্যাব মেশিন স্থাপন করা হচ্ছে। আজ শনিবার ২৩মে অত্যাধুনিক পিসিআর মেশিনটি কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে পৌঁছাবে। জাতিসংঘের অংগ প্রতিষ্ঠান বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এর সহায়তায় কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে দ্বিতীয় পিসিআর মেশিনটি স্থাপন করা হচ্ছে।

কক্সবাজারে করোনা ভাইরাসের স্যাম্পল টেস্টের সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত নির্ভরযোগ্য একটি সুত্র সিবিএন-কে এ তথ্য জানিয়েছেন। সুত্র আরো জানায়, আজ ২৩মে পিসিআর মেশিনটি কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে চলে আসলে পরবর্তী ৫দিনের মধ্যে সেটি স্থাপন করা সম্ভব হবে। নতুন পিসিআর মেশিনটিতে ২৮ মে ও ২৯ মে ২দিন মান নির্নয়মূলক স্যাম্পল টেস্ট করে ৩০ মে থেকে পুরোদমে চুড়ান্ত করোনা ভাইরাসের স্যাম্পল টেস্টে যাওয়া যাবে। দ্বিতীয় পিসিআর মেশিনটি চালানোর জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) চিকিৎসক, টেকনিশিয়ান, ল্যাব কর্মী সহ প্রয়োজনীয় জনবলও সংস্থানের ব্যবস্থা করেছে।

কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের ল্যাবে আরো একটি পিসিআর মেশিনের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) কে আরো একটি পিসিআর মেশিনের সরবরাহ দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানালে, WHO এতে সম্মত হয়ে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে দ্বিতীয় পিসিআর মেশিনটি প্রদান করেছে।

কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে দ্বিতীয় পিসিআর মেশিনটি চালু হলে ২টি মেশিনে একদিনে শুধু এক শিফটে একত্রে ১৯২ টি করোনা ভাইরাসের স্যাম্পল টেস্ট করা যাবে। আর ২শিফটে, ২টি মেশিনে প্রতিদিন ৩৮৪ জনের করোনা ভাইরাসের স্যাম্পল টেস্ট করা যাবে বলে পিসিআর ল্যাব পরিচালনায় অভিজ্ঞ একজন চিকিৎসক জানিয়েছেন।

কক্সবাজার জেলার প্রায় ২৪ লক্ষ নাগরিক, প্রায় ১২ লক্ষ রোহিঙ্গা শরনার্থী। বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি, লামা, আলীকদম উপজেলার ৩ লক্ষাধিক নাগরিক, লোহাগাড়া ও সাতকানিয়া উপজেলার প্রায় ৭ লক্ষ নাগরিক সহ মোট প্রায় সাড়ে ৪৬ লক্ষ নাগরিকের জন্য কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের ল্যাবটিতে স্যাম্পল টেস্টের কাজ চলছে। এই ল্যাবটি ঢাকার আইইডিসিআর এর তত্বাবধানে পরিচালিত হয়।

কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের বর্তমানে চালু থাকা পিসিআর ল্যাবটি রোহিঙ্গা শরনার্থীদের ডিপথেরিয়া রোগ নির্ণয়ের জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এর অর্থ সহয়াতায় ২০১৮ সালে স্থাপন করা হয়েছিলো। এই ল্যাবটিতে গত ২এপ্রিল থেকে করোনা ভাইরাসের স্যাম্পল টেস্ট করা শুরু হয়। প্রথম দিকে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের এই ল্যাবে স্যাম্পল জট না থাকলেও এখন প্রতিদিন ‘পজেটিভ’ রোগী বেশি সনাক্ত হচ্ছে। আবার এসব পজেটিভ রোগীদের সাথে সম্পৃক্ত থাকা সকলের শরীরের স্যাম্পল টেস্ট করতে গিয়ে ল্যাবের শুধু একটি পিসিআর মেশিনে তা আর সম্ভব হচ্ছেনা। ফলে গত ১২/১৩ দিন ধরে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের ল্যাবে একটু স্যাম্পল জট শুরু হয়েছে। দ্বিতীয় পিসিআর মেশিনটি পুরোদমে চালু হলে এ স্যাম্পল জট আর থাকবে না বলে জানান উক্ত সুত্র।