আনোয়ার হোছাইন, ঈদগাঁও,কক্সবাজার :
করোনা ভাইরাসের মহামারি থেকে সারা দেশেরমত ঈদগাঁওবাসীকেও সুরক্ষার জন্য সরকার দীর্ঘ সময় ধরে নানা পদক্ষেপ নিলেও কোন ভাবেই ঈদগাঁও’র জনগণকে ঘরমুখো করতে পারেনি।শেষ পর্যন্ত সেই মরণঘাতী মহামারি হানা দিয়েছে এলাকাবাসীর উপর।এবার হয়ত ভয় তাড়া করবে জনগণকে।কিন্তু পরিস্থিতি তার উল্টো। যেদিন সবচেয়ে বেশি রোগীর করোনা পজিটিভ হয়েছে, এর পরদিন ভোররাত থেকে বাজারে জনসমাগম বিপুল পরিমাণে বেড়েছে। এ চিত্র দেখে সচেতন জনগণ রীতিমতো আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়,শুক্রবার সেহেরির পর থেকে বাজারের কিছু অসাধু দোকানদার আবারও দোকান খুলে বসে।অসচেতন এলাকাবাসীও ঈদ মার্কেটিংয়ের নামে ফজরের আযানের পর থেকে অটো রিকশা, টমটম,মাহিন্দ্র ও মোটর সাইকেল যোগে ঈদগাঁও বাজারমুখি হতে শুরু করে।ভোরের আলো প্রকাশ হয়ে যাওয়ার সাথে সাথে বিপুল জনসমাগম হয়ে যায় বাজারে।যার মধ্যে অধিকাংশ মহিলা ও শিশু। বাজারের মার্কেট গুলোতে নেই কোন শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার নিয়ম,নেই জীবাণুনাশক স্প্রে,সিংহভাগ মানুষের মুখে নাই অতি প্রয়োজনী মাস্ক।একদম গাদাগাদি করে চলছে কেনা বেচা।বিশেষ করে শিশু কিশোরদের চরম ঝুঁকিতে ফলে দিচ্ছে অভিভাবকরা। দিনের পর দিন ঈদগাঁও’র সাংবাদিক, সচেতন সমাজ ও প্রশাসন জনগণকে করোনা থেকে সুরক্ষা দিতে নানা ভাবে চেষ্টা অব্যাহত রাখে।কাজের কাজ কিছু হয়নি।শেষ পর্যন্ত করোনা ঝেঁকে বসে জনগণের উপর।তাতে একটু হলেও ভয় আতঙ্কে জনগণ ঘরমুখো হবে আশা ছিল সর্ব মহলের।ঘটে চলছে তার উল্টো। ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে বাজারের শফিং মল গুলোতে জন উপস্থিতিও উদ্বেগ জনক হারে বেড়ে চলছে।বিগত এক সপ্তাহে বৃহত্তর ঈদগাঁওতে পাঁচজন করোনা রোগি শনাক্ত হয়।এর পর থেকে প্রশাসন আরো কাঠোর হয়।জনসমাগম রোধে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে কয়েক দফায় বেশ ক’জন দোকানিকে আর্থিক দন্ড দেয়।তাতেও কাজ হয়নি।বরং উল্টো এ দোকানীরা ভোর রাত থেকে দোকান খুলা শুরু করে দেয়।এবং ক্রেতারাও হুমড়ি খেয়ে পড়ে। এ সংক্রান্ত সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে সদর সহকারী ভূমি কর্মকর্তা মোঃ শাহরিয়ার মুক্তারের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত বৃহস্পতিবার অভিযান চালিয়ে ঈদগাঁও বাজারের চার দোকানি ও চৌফলদন্ডী বাজারের আরো দুই দোকানিকে আটক করে এক সপ্তাহের বিনাশ্রম জেল দেন।এতে সচেতন জনগণ মনে করছিল প্রশাসনের কঠোর অবস্থানের কারণে এবং ঐ দিন ঈদগাঁও বাজারের এক ডাক্তার, দোকানিসহ ছয় জন্য একদিনে করোনা রোগি হিসেবে শনাক্ত হওয়ায় ভয়ে আতঙ্কে পরদিন থেকে দোকানি ও ক্রেতারা বাজারমুখিত হবেনা।কিন্তু আজ ভোর রাত থেকে দেখা যায়,প্রশাসনের কঠোর নীতি ও করোনার আক্রমণ তাদের কাবু করতে পারেনি।যথারীতি ভোর রাত থেকে জনসমাগম আগের চেয়ে আরো বেশি দেখা যাচ্ছে।এদিকে বাজারের প্রধান কেন্দ্রস্থল নিউ মার্কেটে থাকা হাসপাতালের এক ডাক্তার এবং ফরাজি ফার্মেসীর পরিচালক ও বাজার সংলগ্ন এলাকার আরো তিনজন করোনা রোগি হিসেবে শনাক্ত হওয়ার পরও এ বিপুল জনসমাগম অব্যাহত থাকায় বৃহত্তর ঈদগাঁওতে করোনা মহামারি আকার ধারণ করতে বেশি সময় লাগবেনা বলে মনে করেন সচেতন লোকজন।এদিকে জনগণকে এ ভয়াবহ মহামারী থেকে সুরক্ষা দিতে বাজারের সব প্রবেশ ও বহির মুখ বন্ধ করে দিয়ে প্রতি মার্কেটে এক যোগে কয়েকটি টিম বাজার অভ্যন্তরে অভিযান চালিয়ে অসাধু দোকানদারের পাশাপাশি ক্রেতা ও মার্কেট মালিকদেরও আইনের আওতায় আনার দাবি জানান ঈদগাঁও’র শিক্ষক, সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ ও জনপ্রতিনিধিরা। তবেই জনসমাগম কোন রকম ঠেকানো যেতে পারে বলে তারা আশা প্রকাশ করেছেন। তারা আরো জানান ঈদগাঁও’র মতো এত আইন অমান্যকারী জনগণ ও দোকানদার জেলার অন্য স্থানে নেই।