সিবিএনঃ
কক্সবাজারে যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সাথে পালিত হলো পবিত্র লাইলাতুল ক্বদর বা শবে ক্বদর।

মহিমান্বিত এই রজনিতে বিশ্বমহামারী করোনা ভাইরাস ও প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ সব ধরণের আজাব-গজব থেকে রক্ষায় মহান আল্লাহর কাছে বিশেষ মোনাজাত করা হয়েছে।

পবিত্র কোরআন অবতীর্ণের এই রাত্রে মহান আল্লাহর দরবারে ধরনা দিতে সন্ধ্যা থেকে মসজিদে ছুটে যায় আল্লাহর প্রিয় বান্দারা। গভীর রাত অবধি চলে ইবাদত-বন্দেগী।

কক্সবাজার বদর মোকাম জামে মসজিদে ক্বদরের রাতে খতমে তারাবিহ অনুষ্ঠিত হয়।

ফরজ নামাজ ও তারাবিহ শেষে ঘন্টাখানেক বয়ান করেন খতিব মাওলানা আব্দুল খালেক নিজামী।

শবে কদরের গুরুত্ব ও ফজিলত, পবিত্র কুরআনের মর্যাদা, মুসলমানদের ইহকালীন-পরকালীন জীবন ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করেন।

সবশেষে বিশ্ব মহামারী করোনা ভাইরাস ও মহাদুর্যোগ ‘অাম্পান’ থেকে রক্ষায় মহান আল্লাহর দরবারে বিশেষ মোনাজাত করেন মাওলানা আব্দুল খালেক নিজামী। দোয়া করেন দেশের জন্য।

সমবেত মুসল্লীরা বিশেষ রজনিতে আবেগ অনুভূতিসহ অশ্রু বিসর্জন দিয়ে মহান আল্লাহর কাছে ফানাহ্ চান।

একইভাবে শহরের ফায়ার সার্ভিস জামে মসজিদ, কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, বাইতুর রহমান জামে মসজিদ, লালদিঘী জামে মসজিদ, ঝাউতলা জামে মসজিদ, উমিদিয়া জামে মসজিদ, বাজারঘাটা জামে মসজিদে খতমে তারাবিহ ও বিশেষ মোনাজাত করা হয়েছে।

শবে ক্বদর পালিত হয়েছে কক্সবাজার জেলার সব মসজিদে।

এদিকে, করোনা ভাইরাসের কারণে এবার শবে ক্বদরের আমেজে অনেকটা ভাটা পড়েছে।

মসজিদগুলোতে উপস্থিতি তুলনামূলক কম ছিল। যারা গিয়েছে তারাও সামাজিক দূরত্ব ঠিক রেখে এবাদত-বন্দেগি করেছে।

মুসলমানদের বিশেষ দিনগুলোতে নামাজের প্রায় এক ঘন্টা আগে ভর্তি হয়ে যেত কক্সবাজার বদর মোকাম জামে মসজিদ।

মসজিদের ভেতর, বাইর, বারান্দা ছাড়িয়ে পথেও জায়নামাজ বিছিয়ে ইবাদত করতেন মুসল্লীরা।

এ বছর সেই দৃশ্য চোখে পড়েনি।

তবে, সরকারি আইন মেনে উপস্থিতি কম হলেও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যতা ঠিকই ছিল।

নামাজ শেষে মুসল্লিদের খেজুর-শরবতের মাধ্যমে আতিথিয়তার ব্যবস্থা করেন মসজিদ কমিটি।

প্রসঙ্গত,২৬ রমজান দিনগত রাতটি বাংলাদেশসহ উপমহাদেশে মহিমান্বিত একটি রাত হিসেবে পরিচিত। এ রাতে ইবাদত-বন্দেগি করে আল্লাহর কাছে গোনাহ মাফের জন্য প্রার্থনা করছেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা।

বুধবার (২০ মে) রাতে নিজেদের গুনাহ মাফ, বরকত কামনাসহ দেশ ও মুসলিম উম্মাহর ঐক্য, শান্তি ও সমৃদ্ধ লাভে মহান আল্লাহ তাআলার কাছে প্রার্থনায় চোখের পানি ফেলছেন মোমিন বান্দারা।

হাদিসের ভাষ্য অনুযায়ী, ২০ রমজানের পর যেকোনো বিজোড় রাতে ক্বদর হতে পারে। তবে ২৬ রমজানের দিনগত রাতেই লাইলাতুল কদর আসে বলে বেশির ভাগ আলেমের অভিমত।

পবিত্র কোরআনে ‘ক্বদর’ নামে একটি সূরা রয়েছে। সেখানে এ রাতকে হাজার মাসের চেয়েও উত্তম বলা হয়েছে।

এছাড়া বিভিন্ন সহিহ হাদিসে এ রাতের ফজিলতের কথা উল্লেখ আছে।

মুসলমানরা নফল নামাজ, পবিত্র কোরআন তেলওয়াত, জিকির-আজকারের মাধ্যমে রাতটি অতিবাহিত করেন।